Karnataka Assembly Election 2023

সিদ্দা-শিবকুমার টানাপড়েনই বড় চিন্তা কংগ্রেসের

অগত্যা সিদ্দারামাইয়া চারটি ঝটিকা সফর করেছেন বরুণায়। আবার শেষ দফায় আসবেন। চিন্তা আরও বাড়িয়েছেন জেডিএস এবং বিএসপি-র ওবিসি ও তফসিলি প্রার্থীরা।

Advertisement

অনমিত্র সেনগুপ্ত

বরুণা (মাইসুরু) শেষ আপডেট: ০৫ মে ২০২৩ ০৮:০৮
Share:

সিদ্দারামাইয়া। ছবি: পিটিআই

তিনি জননেতা। কর্মী-সমর্থকেরা পাশে থাকলেও ক্ষমতার অলিন্দে নিঃসঙ্গ। দ্বিতীয় জন ‘চাণক্য’। দলে তেমন জনপ্রিয় না হলেও, গান্ধী পরিবারের ঘনিষ্ঠ।

Advertisement

এই লড়াইয়ে ক্রমশ যেন পিছিয়ে পড়ছেন সিদ্দারামাইয়া। পাল্লা ভারী হচ্ছে দশ জনপথের ‘কাছের লোক’ ডি কে শিবকুমারের। কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের মত, সিদ্দারামাইয়া এক বার কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন। তাই এ বার দল জিতলে যেন শিবকুমারকে সুযোগ দেওয়া হয়। প্রশ্ন উঠেছে, এই টানাপড়েনে কংগ্রেসের জয়ের সম্ভাবনাই নষ্ট হবে না তো?

মাইসুরু থেকে এক ঘণ্টার দূরত্বে সিদ্দারামাইয়ার পৈতৃক ঠিকানা বরুণা। ছোট্ট জনপদ। বাসিন্দারা অধিকাংশই কৃষিজীবী। দুপুরে প্রচারের ফাঁকে বরুণার পঞ্চায়েতের পাশে চায়ের দোকানে দাঁড়িয়েছিলেন কংগ্রেসের কর্মী-সমর্থকেরা। বললেন, ‘‘কংগ্রেসই জিতছে। বরুণায় সিদ্দারামাইয়ার কুরুবা সম্প্রদায়ের লোক বেশি। তাই আমরা ঘরের ছেলে সিদ্দারামাইয়াকেই ভোট দেব।’’ কিন্তু শিবকুমার? জবাব এল, ‘‘ওঁর টাকা আছে। জনভিত্তি কোথায়!’’ ঘনিষ্ঠেরা বলছেন, শিবকুমারের মতো সিদ্দারামাইয়ার বিরুদ্ধে দুর্নীতির কোনও অভিযোগ নেই। মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে এই স্বচ্ছ ভাবমূর্তিই তাঁর তুরুপের তাস। সিদ্দারামাইয়ার প্রচারের দায়িত্বে থাকা মঞ্জুনাথ বললেন, ‘‘আজও কর্নাটকে কংগ্রেসের লোক টানার মতো কেউ থাকলে তিনি সিদ্দারামাইয়া।’’ কিন্তু হাইকম্যান্ডের বিরূপ মনোভাবের কথাও মঞ্জুনাথ মেনে নিলেন।

Advertisement

গত ভোটে সিদ্দারামাইয়ার ছেলে অতীন্দ্র জিতেছিলেন বরুণায়। সিদ্দারামাইয়া ভোক্কালিগাদের গড় চামুণ্ডেশ্বরীতে হেরে কোনও রকমে বাদামি কেন্দ্রে জিতে মুখরক্ষা করেছিলেন। এ বার চেয়েছিলেন ছেলেকে বরুণা ছেড়ে দিয়ে নিজে কোলারে লড়বেন। কিন্তু নির্দেশ আসে, তাঁকেই লড়তে হবে বরুণাতে। সূত্রের দাবি, এর নেপথ্যেও শিবকুমারের হাত। ছেলের কেন্দ্রে জয় নিশ্চিত ভেবে ভোটের দু’দিন আগে বরুণায় আসবেন ভেবেছিলেন সিদ্দারামাইয়া। কিন্তু বিজেপি আবাসনমন্ত্রী তথা লিঙ্গায়েত নেতা ভি সোমান্নাকে সেখানে প্রার্থী করে দেয়। এখানে লিঙ্গায়েতদের প্রায় পঞ্চাশ হাজার ভোট। কাছেই সুট্টুরের মহাসংস্থান লিঙ্গায়েত মঠ। সেখানকার অন্যতম শীর্ষ কর্তা বরদারাজন বললেন, ‘‘শব্দই ব্রহ্ম। সিদ্দারামাইয়ার কথা বলার ধরন ভাল নয়।’’ বার্তা স্পষ্ট।

অগত্যা সিদ্দারামাইয়া চারটি ঝটিকা সফর করেছেন বরুণায়। আবার শেষ দফায় আসবেন। চিন্তা আরও বাড়িয়েছেন জেডিএস এবং বিএসপি-র ওবিসি ও তফসিলি প্রার্থীরা। স্থানীয় দফতরে বিজেপি কর্মী যোগেশ বলছিলেন, ‘‘আমরাও জানি, সিদ্দারামাইয়া জনগণের নেতা। তাই তাঁকে ছোট্ট গণ্ডিতে আটকে রাখতে সোমান্নার মতো শক্ত প্রার্থী দেওয়া হয়েছে।’’ অন্য দিকে, নিজের কেন্দ্র কনকপুরায় জেতা নিয়ে নিশ্চিত শিবকুমার।

কংগ্রেসের এক নেতার কথায়, ‘‘শেষ পর্যন্ত কার পাশে কত বিধায়ক রয়েছেন, সেটাই মুখ্যমন্ত্রী বাছার সময়ে বিচার্য হবে। তাতেও সমাধান না হলে মল্লিকার্জুন খড়্গের নাম ভাবা হতে পারে।’’ খড়্গে গান্ধী পরিবারের আস্থাভাজন। তাঁর নামে সিদ্দারামাইয়া বা শিবকুমারেরও আপত্তি থাকার কথা নয়। বরং তাতে লোকসভার আগে ইতিবাচক বার্তা যাবে দলিত ও অনগ্রসরদের কাছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement