ছবি- পিটিআই।
কর্নাটকে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট সরকার বেশি দিন টিঁকবে না বলার কিছু ক্ষণের মধ্যেই সুর বদলে ফেললেন জেডিএস সুপ্রিমো প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এইচ ডি দেবেগৌড়া। বললেন, ‘‘কংগ্রেস যদি শক্ত থাকে, আমরাও শক্ত থাকব।’’
লোকসভা ভোটে কর্নাটকে কংগ্রেস এবং জেডিএস কারও পারফরম্যান্সই ভাল হয়নি। ২৮টি আসনের মধ্যে একা লড়ে বিজেপি জিতেছে ২৬টিতে। আর হাতে হাত মিলিয়ে লড়াই করে কংগ্রেস এবং জেডিএস পেয়েছে একটি করে আসন। পাঁচ বছর আগে কংগ্রেস জিতেছিল ৯টি আসনে। জেডিএস দু’টিতে। ফলে, ভোটের পর থেকেই কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গে জেডিএস নেতৃত্বের চাপানউতোর শুরু হয়ে গিয়েছে। লোকসভা ভোটে জোটের ফল ভাল না হওয়ার জন্য শুরু হয়ে গিয়েছে একে অন্যকে দোষারোপের পালা। সিদ্দারামাইয়ায় দেবেগৌড়া অভিযোগ করেন, ‘‘কংগ্রেসের জনাকয়েক প্রবীণ নেতারা অনুগামীরা তাঁর থেকে দূরে সরে গিয়েছেন।’’
শুক্রবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে হতাশা আর ঢাকা-চাপা দিতে পারেননি প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘‘এই জোট সরকার (মুখ্যমন্ত্রী কুমারস্বামীর নেতৃত্বে কংগ্রেস-জেডিএস জোট সরকার) কত দিন টিঁকবে, তা নিয়ে আমার যথেষ্ট সংশয় রয়েছে। গত দু’মাস ধরে যা সব ঘটছে, তাতে রাজ্যে অন্তর্বর্তী নির্বাচন অবশ্যম্ভাবী বলেই মনে হচ্ছে। আর ক’দিনের মধ্যে মানুষ সব কিছুই জানতে পারবেন।’’
দেবেগৌড়ার মুখ থেকে কর্নাটকে জোট সরকারের ‘সংসারে অশান্তির আগুনে’র ইঙ্গিত পেয়েই সাংবাদিকরা ছুটে যান প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বের কাছে। জোট সরকারের ভবিষ্যৎ কী, এই প্রশ্নে কর্নাটক প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি দীনেশ গুন্ডু রাও বলেন, ‘‘অন্তর্বর্তী নির্বাচনের কোনও প্রশ্নই নেই। বিজেপি যতই চেষ্টা সরকার ভাঙার চেষ্টা করুক, এই জোট সরকার টিঁকে যাবে। আমরা এই সরকারকে নিঃশর্তে সমর্থ করেছি। আমি নিশ্চিত, দেবেগৌড়া কী বলতে চেয়েছেন, সেটা তিনিই স্পষ্ট করে দেবেন।’’
আরও পড়ুন- রাহুলের ইশারায় ভাঙল কর্নাটক কমিটি
আরও পড়ুন- ইরানে হামলা চালানোর নির্দেশ দিয়েও পরে ফের পিছিয়ে গেলেন ট্রাম্প
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির ওই মন্তব্যের পরেই সুর বদলে যায় জেডিএস সুপ্রিমোর। দেবেগৌড়া বলেন, ‘‘কংগ্রেস যদি শক্ত থাকে, আমরাও শক্ত থাকব।’’
তবে লোকসভা ভোটের পরেই যে কংগ্রেসের সঙ্গে বিরোধ শুরু হয়েছে জেডিএসের, দিনদু’য়েক আগেই তার ইঙ্গিত মিলেছিল কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী এইচ ডি কুমারস্বামীর মন্তব্যে। কুমারস্বামী জানিয়েছিলেন, ‘অনেক যন্ত্রণা সহ্য করে’ তিনি সরকারের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
অভিযোগ, ঘোড়া কেনাবেচার মাধ্যমে বিজেপি কর্নাটকে জোট সরকারকে ফেলে দিতে চাইছে। তার জন্য তারা টোপ দিয়েছে জনাকয়েক নির্দল বিধায়ককে। কিছু কংগ্রেস বিধায়ককেও, যাঁরা কুমারস্বামী মন্ত্রিসভায় গুরুত্বপূর্ণ দফতর না পেয়ে দৃশ্যতই অসন্তুষ্ট। লোকসভা ভোটের পর তাঁদের ক্ষোভ আরও বেশি করে প্রকাশ্যে চলে আসতে শুরু করেছে।
সেই ক্ষোভ প্রশমনের চেষ্টাও শুরু করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী কুমারস্বামী। তিনি তাঁর মন্ত্রিসভার সম্প্রসারণ ঘটিয়েছেন। দুই নির্দল বিধায়ককে নিয়েছেন মন্ত্রিসভায়। তাতে কংগ্রেস নেতৃত্বের অসন্তোষ আরও বেড়েছে বলেই রাজনৈতিক মহলের খবর।