বিধানসভার জরুরি অধিবেশনে কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী এইচ ডি কুমারস্বামী।—ছবি পিটিআই
সরকার সংখ্যার সঙ্কটে। মামলা চলছে সুপ্রিম কোর্টে। কংগ্রেসের ১৩ এবং জেডিএসের ৩ বিধায়কের ইস্তফার ভবিষ্যৎ ঝুলে স্পিকারের হাতে। এর মধ্যে আজ কর্নাটকে শুরু হল বিধানসভার ১১ দিনের জরুরি অধিবেশন। আর তার শুরুতেই আস্থা ভোট চাইলেন এইচ ডি কুমারস্বামী। স্পিকারকে আস্থা ভোটের দিন স্থির করার অনুরোধ জানালেন। স্পিকারের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘‘স্যর, আমি চাই আস্থা ভোট নেওয়া হোক। তার সময় চূড়ান্ত করুন। ক্ষমতার অপব্যবহার করে পদে থাকতে চাই না বলে স্বেচ্ছায় এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’
স্পিকার কে আর রমেশ কুমার পরে সাংবাদিকদের বলেন, মুখ্যমন্ত্রী তাঁর মনের কথা জানিয়েছেন। বিভ্রান্তির মধ্যে ক্ষমতা আঁকড়ে থাকতে চান না। তিনি যত তারিখ আস্থা প্রস্তাব আনতে চান বলে জানাবেন, পর দিনই বিধানসভার কার্যসূচিতে তা তোলা হবে।’’ বিধায়কদের ইস্তফাপত্র খতিয়ে দেখে স্পিকার রমেশ কী সিদ্ধান্ত নেন, তার উপরে নির্ভর করবে পরিস্থিতি। সুপ্রিম কোর্ট আজ তাঁকে মঙ্গলবার পর্যন্ত এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত না-নিতে বলেছে। তত দিন রাজ্যে স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে বলেছে প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের বেঞ্চ। প্রশ্ন এখন, বিধায়কদের ইস্তফা নিয়ে সিদ্ধান্তের আগেই কি হবে আস্থা ভোট? নাকি পরে? সরকারের ভবিষ্যৎ কতটা নির্ভর করছে এর উপরে?
মুখ্যমন্ত্রীর আইনজীবী রাজীব কুমার জানাচ্ছেন, সুপ্রিম কোর্ট স্পিকারকে নোটিস না দিয়েই ‘একপাক্ষিক’ নির্দেশ জারি করেছে। বিদ্রোহী বিধায়কেরা সরকারের বিরুদ্ধে বেশ কিছু দুর্নীতির অভিযোগ এনেছেন। এঁদের এক জন বিধায়ক নিজে যে লগ্নি কেলেঙ্কারিতে জড়িত, তার দায় চাপিয়েছেন সরকারের উপরে। আইনজীবী রাজীবের কথায়, ‘‘ওই ১৬ জন স্বেচ্ছায় ইস্তফা দিয়েছেন কি না, সে ব্যাপারে পুরোপরি নিশ্চিত হয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়াটা স্পিকারের দায়িত্ব। শীর্ষ আদালত যদি তাঁর বক্তব্য না-শুনেই নির্দেশ দেয়, তবে স্পিকার কী করতে পারেন!’’ ইস্তফা খতিয়ে দেখার জন্য গত কাল মাঝরাত পর্যন্ত সময় দেওয়ায় স্পিকার বলেছিলেন, ‘‘আমি কি আলোর গতিতে কাজ করব!’’ এর পরেই আজকের শুনানিতে মঙ্গলবার পর্যন্ত পদত্যাগপত্র খতিয়ে দেখার সময় দেওয়া হলেও ওই দিন পর্যন্ত সিদ্ধান্তগ্রহণ স্থগিত রাখতে বলে শীর্ষ আদালত।
যাঁদের নিয়ে কর্নাটকে এত কাণ্ড, তাদের একটি অংশ এখনও মুম্বইয়ের শহরতলিতে। তাঁদের চার জনকে এ দিন রেনেসাঁ হোটেল থেকে বেরিয়ে সিদ্ধি বিনায়ক মন্দিরে গিয়ে পুজো দিতে দেখা গিয়েছে। আজও বিদ্রোহীদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়েছেন কংগ্রেস নেতা সিদ্দারামাইয়া। বিজেপি এ দিন রাতে তাদের বিধায়কদের বেঙ্গালুরুর রামদা হোটেলে নিয়ে গিয়েছে। জেডিএসের দাবি, বিধানসভায় শক্তি পরীক্ষা দিতে ভয় পাচ্ছে বিজেপি। কুমারস্বামী বিপুল ভোটে জিতবেন।