নতুন করে প্রতিবেশী মহারাষ্ট্রের সঙ্গে কর্ণাটকের বিরোধ বাড়তে পারে বলেই আশঙ্কা। প্রতীকী ছবি।
মহারাষ্ট্রের সঙ্গে সীমানা বিবাদ মেটানোর পথে হাঁটার বদলে আসন্ন বিধানসভা ভোটের দিকে তাকিয়ে বিষয়টিকে নিয়ে বিতর্ক জিইয়ে রাখতে চাইছে কর্নাটকের বিজেপি সরকার। বিষয়টি নিয়ে রাজ্যবাসীর আবেগ উস্কে দিতে সোমবার মহারাষ্ট্র সীমানার বিতর্কিত বেলগাভিতে রাজ্যের দ্বিতীয় বিধানসভা ভবন ‘সুবর্ণ বিধান সৌধ’য় একটি বিশেষ অধিবেশনের আয়োজন করেছে রাজ্যের বিজেপি সরকার। এর ফলে ওই এলাকা ঘিরে নতুন করে প্রতিবেশী মহারাষ্ট্রের সঙ্গে তাদের বিরোধ বাড়তে পারে বলেই আশঙ্কা। আর এতেই সিঁদুরে মেঘ দেখতে শুরু করেছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। কারণ মহারাষ্ট্রের জোট সরকারের বড় শরিক বিজেপিই।
মহারাষ্ট্র-কর্নাটক সীমানার বেলগাভি নিয়ে বিবাদ নতুন নয়। ১৯৫৬ সালে ভাষার ভিত্তিতে রাজ্যভাগের সময়েই তৎকালীন বম্বে প্রেসিডেন্সির অন্তর্গত বেলগাভি কর্নাটকের সীমানায় চলে যায়। যদিও সেখানকার সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ভাষা মরাঠী। এ নিয়ে তখনই ক্ষোভ জানিয়েছিলেন মরাঠা নেতৃত্ব। তার পর থেকে বিষয়টি নিয়ে মাঝেমধ্যেই বিতর্ক মাথা চাড়া দিয়েছে। দু’রাজ্যের মধ্যেকার এই বিবাদ নিয়ে মামলা গড়িয়েছে সুপ্রিম কোর্টেও। বেলগাভিকে নিজেদের বলে দাবি করে কর্নাটক সেখানে রাজ্যের দ্বিতীয় বিধানসভা ভবন তৈরি করে বার্তা দিয়েছে মহারাষ্ট্রকে। পাল্টা হিসেবে মহারাষ্ট্রও একাধিক বার বেলগাভির উপরে তাদের দাবি নিয়ে সরব হয়েছে। এ বারে দু’তরফেরই সুর কিছুটা চড়া হওয়ায় চাপে পড়েছে কেন্দ্রের শাসক বিজেপি।
কর্নাটক সরকারের সিদ্ধান্ত, সোমবার বেলা ১১টায় ওই বিধান সৌধে বসবে অধিবেশন। এ জন্য সব বিধায়ককে সেখানে যোগ দিতে অনুরোধ করা হয়েছে। এই খবর প্রকাশিত হওয়ার পরেই ক্ষুব্ধ উদ্ধব ঠাকরের নেতৃত্বাধীন শিবসেনা নেতৃত্ব বিজেপিকে নিশানা করেছে। দলের বরিষ্ঠ নেতা সঞ্জয় রাউত সরাসরি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে কটাক্ষ করে বলেছেন, ‘‘এক দিকে উনি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে মধ্যস্থতার বার্তা দিচ্ছেন, অন্য দিকে কর্নাটকের সঙ্গে মহারাষ্ট্রের এই সীমানা বিবাদ নিয়ে চোখ বন্ধ করে আছেন। এটা মোটেই কোনও ভাল রাজনীতিকের লক্ষণ নয়।’’
চাপের মুখে শিন্ডে গোষ্ঠীর নেতারা মানছেন, এর ফলে মহারাষ্ট্রের রাজনীতিতে ধাক্কা খেতে পারে তাঁদের জনপ্রিয়তা। কারণ এখন বিষয়টির সঙ্গে মরাঠা আবেগ জড়িয়ে গিয়েছে। সেটাকে কাজে লাগিয়েই সঞ্জয় রাউত খোঁচা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডেকে। একনাথকে দুর্বল বলে কটাক্ষ করে সঞ্জয় বলেছেন, ‘‘কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী যখন মহারাষ্ট্রের অংশ ছিনিয়ে নিতে আগ্রাসী মনোভাব দেখাচ্ছেন, তখন দুর্বল একনাথ শিন্ডে চুপ করে বসে আছেন।’’