কেন্দ্রীয় নেতাদের সবুজ সঙ্কেতের অপেক্ষায় ইয়েদুরাপ্পা। ছবি: পিটিআই
কর্নাটকে কংগ্রেস-জেডিএস জোট সরকারের পতন হলেও, এখনই সরকার গড়া সহজ হচ্ছে না বিজেপির পক্ষে। যে সংখ্যা-সঙ্কটে পড়ে আস্থাভোটের বাধা পেরোতে ব্যর্থ হয়েছেন কুমারস্বামী, সেই সংখ্যাই এখন ভাবাচ্ছে গেরুয়া শিবিরকে। তাই সব দিক খতিয়ে দেখেই পা ফেলতে চাইছেন ইয়েদুরাপ্পারা। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সবুজ সঙ্কেত মিললেই শুরু হবে সরকার গঠনের প্রক্রিয়া। এই পরিস্থিতিতে স্পিকার কেআর রমেশের ভূমিকা কী হয় তা ফের একবার গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে চলেছে।
কন্নড়ভূমে জোট সরকার সরলেও, বিজেপির সামনে এখন বেশ কয়েকটি চ্যালেঞ্জ রয়েছে। ১৫ জন ‘বিদ্রোহী’ বিধায়কের ভবিষ্যৎ কী হবে তাই এখন বিজেপির সামনে বড় পরীক্ষা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ, দলত্যাগ আইনে ‘বিদ্রোহী’দের বিধায়ক পদ খারিজ নিয়ে এখনও সিদ্ধান্ত জানাননি স্পিকার। সূত্রের খবর, যত ক্ষণ না পর্যন্ত ‘বিদ্রোহী’ বিধায়কদের ভবিষ্যৎ জানা যাচ্ছে, তত ক্ষণ পর্যন্ত ২২৫ আসনের কর্নাটক বিধানসভায় বিজেপি বড় দল হলেও সংখ্যাগরিষ্ঠ নয়।
এই মুহূর্তে, কর্নাটক বিধানসভায় দুই নির্দল বিধায়কের সমর্থন যোগ করে বিজেপির ঝুলিতে রয়েছে ১০৭টি আসন। আস্থাভোটে অংশগ্রহণ করেননি বহিষ্কৃত বিএসপি বিধায়ক এন মহেশ। আস্থাভোটে অনুপস্থিত থাকা কংগ্রেস বিধায়ক বি নগেন্দ্র ও শ্রীমন্ত পাটিলের ভাগ্য এখনও ঝুলে রয়েছে। এই অবস্থায়, কংগ্রেস ও বিএসপি-র এই তিন জন বিধায়ক জোটকে (কংগ্রেস ও জেডিএস) সমর্থন করলে তাদের হাতে ১০৩ জন বিধায়ক থাকবে। এ সব সমীকরণের কথা মাথায় রেখেই কিছুটা দোলাচলে কর্নাটকের বিজেপি শিবির।
আরও পড়ুন: সন্দেহ হলেই সন্ত্রাসবাদী তকমা দিয়ে গ্রেফতার, ইউএপিএ সংশোধনী বিল পাশ করিয়ে নিল মোদী সরকার
শঙ্কা বা়ড়িয়েছে স্পিকার কেআর রমেশের হাতে ঝুলে থাকা ‘বিদ্রোহী’ বিধায়কদের ভবিষ্যৎও। তাঁদের ইস্তফাপত্র গৃহীত হলে বা বিধায়ক পদ খারিজ হয়ে গেলে বিজেপির কাছে কর্নাটকের বিধান সৌধের ট্রেজারি বেঞ্চে বসার পথ ফুল বিছনো হবে না। ফলে, ওই ১৫ আসনে পুনর্নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত দুই নির্দল বিধায়কের সমর্থন থাকতেই হবে বিজেপির কাছে। স্পিকার কী সিদ্ধান্ত নেন তা ভেবে কিছুটা উৎকণ্ঠিত হয়ে পড়েছেন মুম্বইয়ের হোটেলে থাকা ওই ‘বিদ্রোহী’ বিধাকরাও। একইসঙ্গে ইস্তফাপত্র নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে দেরি হওয়ায় হতাশাও ছড়িয়েছে ‘বিদ্রোহী’ শিবিরে।
এ সব নিয়েই আজ দিল্লিতে অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করতে চলেছেন জগদীশ শেট্টর-সহ বিজেপির পাঁচ জনের একটি প্রতিনিধি দল। ওই রাজ্যে বিধানসভা ভোটে কিছুটা ব্যাকফুটেই ছিল বিজেপি। কিন্তু, দীর্ঘ টানাপড়েনের পর ১৪ মাসের জোট সরকারকে সরিয়ে এ বার ক্ষমতা দখলের পালা তাদের। তাই পরিষদীয় দলনেতা নির্বাচন থেকে সরকার গঠন পর্যন্ত গোটা বিষয়ের উপরেই কড়া নজর রাখছেন দিল্লির কেন্দ্রীয় নেতারা।
আরও পড়ুন: কাশ্মীর নিয়ে ট্রাম্পের বিতর্কিত মন্তব্যে মোদী নীরবই
দিল্লির ইশারার অপেক্ষায় রয়েছেন রাজ্যের নেতারাও। বিএস ইয়েদুরাপ্পা বলেছেন, “আমি যে কোনও সময়েই পরিষদীয় দলের বৈঠক করে রাজ্যপালের কাছে সরকার গড়ার দাবি জানাতে পারি। কিন্তু, আমি দিল্লির সবুজ সঙ্কেতের অপেক্ষায় রয়েছি।”
এক দিকে যখন সরকার গঠনের তোড়জোড়ের পালা, অন্য দিকে কিছুটা নিস্তেজ জোট শিবির। এর মধ্যেই কুমারস্বামীর বলেছেন, “আমি গর্বিত যে শেষ কাজ হিসেবে ভূমিহীন কৃষি শ্রমি ও কৃষকদের জন্য কৃষিঋণ মকুব করে যেতে পেরেছি।”