কার্গিলের পাহাড়ে পাকিস্তানের সঙ্গে হাত মিলিয়ে অনুপ্রবেশ করেছিল চিনও? বরখাস্ত হওয়া ব্রিগেডিয়ারের দাবি অন্তত তেমনই। —প্রতীকী ছবি।
শুধু পাকিস্তানের বিরুদ্ধে নয়, কার্গিলে চিনের বিরুদ্ধেও লড়তে হয়েছিল ভারতকে। কার্গিলে ঢুকেছিল চিনা বাহিনীও। সে সময় ভারতীয় সেনার ১২১ ইনফ্যান্ট্রি ব্রিগেডের কম্যান্ডার ছিলেন যিনি, সেই ব্রিগেডিয়ার সুরেন্দ্র সিংহ এই চাঞ্চল্যকর দাবি করলেন। সেনার গোপন নথি বাইরে প্রকাশ করার দায়ে কার্গিল যুদ্ধের পরে বরখাস্ত করা হয়েছিল ব্রিগেডিয়ার সিংহকে। সেনা কর্তৃপক্ষের সেই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আর্মড ফোর্সেস ট্রাইব্যুনালে মামলা করেছেন সুরেন্দ্র সিংহ। মামলা এখনও চলছে। তার মধ্যেই সংবাদ মাধ্যম টিওআই-কে সুরেন্দ্র সিংহ জানিয়েছেন, নিয়ন্ত্রণরেখার ও পারে পরিস্থিতি যে ‘অস্বাভাবিক’ সে কথা তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অনেক আগেই জানিয়েছিলেন।
আজ অর্থাৎ ২৬ জুলাই হল ‘কার্গিল বিজয় দিবস’। ১৯৯৯ সালের এই তারিখেই কার্গিলের যুদ্ধক্ষেত্রে পাক বাহিনীর বিরুদ্ধে ভারতের জয় ঘোষিত হয়েছিল। ঠিক সেই দিনেই সামনে এসেছে যুদ্ধের পর বাহিনী থেকে বরখাস্ত হওয়া সেনাকর্তার চাঞ্চল্যকর দাবি।
১৯৯৮ সালের অগাস্টে বাহিনীর তৎকালীন জেনারেল অফিসার কম্যান্ডিং-কে (জিওসি) রিপোর্ট পাঠিয়েছিলেন ব্রিগেডিয়ার সুরেন্দ্র সিংহ। গোটা কার্গিল এলাকার পরিস্থিতির বিশদ খোঁজখবর (রিকনেসাঁ) নিয়েই রিপোর্টটি তৈরি করা হয়েছিল বলে সুরেন্দ্র সিংহের দাবি। নিয়ন্ত্রণরেখার কাছে অনেক হাউইৎজার কামান নিয়ে আসা হয়েছিল এবং চিনা বাহিনীই সে সব নিয়ে এসেছিল বলে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছিল। সে রিপোর্টকে সেনার সর্বোচ্চ মহল যথেষ্ট গুরুত্ব দেয়নি বলে সুরেন্দ্র সিংহর অভিযোগ।
১৯৯৯ সালের মে মাস থেকে শুরু হয়েছিল কার্গিলের যুদ্ধ। চলেছিল ১৯৯৯-এর ২৬ জুলাই পর্যন্ত। প্রায় আড়াই মাসের যুদ্ধে কার্গিল পুনরুদ্ধার করে ভারতীয় সেনা। কিন্তু ভারত যাতে তা না পারে, তা নিশ্চিত করতে পাক বাহিনীর পাশে দাঁড়িয়ে লড়াই করেছিল চিনা সেনার আর্টিলারি বাহিনীও। দাবি সুরেন্দ্র সিংহের। টিওআই-কে তিনি জানিয়েছেন, কার্গিল পুনরুদ্ধারের পর সেই এলাকা থেকে চিনা কামানে ব্যবহৃত ফিউজ উদ্ধার করেছিলেন তিনি।
ভারতীয় সেনার তরফে অবশ্য কখনও কার্গিলে চিনা সেনার উপস্থিতির কথা বলা হয়নি। সুরেন্দ্র সিংহের চাঞ্চল্যকর দাবির পরেও ভারতীয় সেনার বেশ কয়েক জন অবসরপ্রাপ্ত কর্তা জানিয়েছেন, এমন তথ্য তাঁরা কেউ কখনও পাননি। কিন্তু চিনের সঙ্গে ডোকলামে টানাপড়েন চলাকালীন গোটা দেশে যখন কার্গিল বিজয় দিবস পালিত হচ্ছে, তখনই কার্গিলের ষড়যন্ত্রে চিনা যোগসাজসের অভিযোগ ওঠায় নানা রকমের জল্পনা শুরু হয়েছে।