ছবি: পিটিআই।
অর্থনীতির ঝিমুনি, রুটিরুজির সঙ্কট থেকে নজর ঘুরিয়ে দিতে হরিয়ানা ও মহারাষ্ট্রের ভোটে নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহ কাশ্মীর ও পাকিস্তান বিরোধিতার প্রসঙ্গ তুলে আনছেন বলে কংগ্রেসই এত দিন অভিযোগ তুলছিল। দুই রাজ্যের বিধানসভা ভোটের প্রচারের শেষ দিনে আমজনতার সমস্যা নিয়ে বিজেপিকে তোপ দাগতে গিয়ে সেই ফাঁদেই পা দিল কংগ্রেস।
আজ দলের সদর দফতরে সাংবাদিক সম্মেলন করে কংগ্রেস নেতা কপিল সিব্বল আস্ফালন করে বলেন, ‘‘কংগ্রেসই পাকিস্তানকে ভেঙে দিয়েছিল।’’ ১৯৭১-এ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সমেয় ইন্দিরা গাঁধী সরকারের ভূমিকার কথা মনে করিয়ে দিয়ে সিব্বল বলেন, ‘‘মোদীজির শুধু ৩৭০ অনুচ্ছেদ মনে থাকে। কিন্তু উনি জানেন না কখন পাকিস্তান ভেঙে গিয়েছিল এবং কারা সে কাজ করেছিল। আমরা পাকিস্তানের একটি অখণ্ড অংশ ভেঙে দিয়েছিলাম। তখন আপনি কোথায় ছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী?’’
রাজনীতির বিশ্লেষকরা বলছেন, লোকসভা ভোটের আগে বিজেপির কট্টর হিন্দুত্বের মোকাবিলা করতে গিয়ে রাহুল গাঁধী মন্দিরে মন্দিরে গিয়ে নরম হিন্দুত্ব করেছিলেন। তাতে বিজেপির ফায়দাই হয়েছিল। এখন কংগ্রেস বিজেপির উগ্র জাতীয়তাবাদের মোকাবিলায় পাল্টা জাতীয়তাবাদের ধুয়ো তুলতে চাইলেও কোনও লাভ হবে না। বিজেপিই লাভের গুড় খেয়ে যাবে।
বস্তুত আজ হরিয়ানায় নরেন্দ্র মোদী, মহারাষ্ট্রে অমিত শাহ সেই ৩৭০ নিয়েই কংগ্রেসকে তোপ দেগেছেন। নাম না করে ভারতে মাদক পাচারের ষড়যন্ত্র করার জন্য পাকিস্তানকে নিশানা করেছেন। আজ হরিয়ানায় প্রচারে গিয়ে মোদী অভিযোগ করেন, কংগ্রেস ১৯৬৪-তে ৩৭০ রদের প্রতিশ্রুতি দিয়েও তা কার্যকর করতে ব্যর্থ হয়েছিল। তাঁর দাবি, এ জন্য বিধানসভা ভোটে কংগ্রেসকে যেন শাস্তি দেওয়া হয়। মোদীর প্রশ্ন, ‘‘কী বাধ্যবাধকতা ছিল? কী খেলা চলছিল?’’
মহারাষ্ট্রে প্রচারে গিয়ে রাহুল গাঁধী প্রশ্ন তুলেছিলেন, মহারাষ্ট্রের বিধানসভা ভোটের সঙ্গে ৩৭০-এর কী সম্পর্ক? আজ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ মহারাষ্ট্রে গিয়েই রাহুল গাঁধীকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে বলেছেন, রাহুল ঘোষণা করুন যে ক্ষমতায় এলে তাঁরা ৩৭০ ফিরিয়ে আনবেন। অমিত বলেন, ‘‘ভোটগ্রহণের আগে আরও এক দিন রয়েছে। দেখি মানুষ কী প্রতিক্রিয়া জানান।’’
জবাবে আজ কংগ্রেস নেতা কপিল সিব্বল আর্থিক বৃদ্ধির হার কমে যাওয়া থেকে ক্ষুধার সূচকে ভারতের পিছনের সারিতে থাকার প্রশ্ন তুলে মোদী সরকারকে নিশানা করেছেন। কিন্তু একইসঙ্গে বিজেপি নেতাদের বলেছেন, ‘‘হরিয়ানার মানুষকে গিয়ে বলুন যে কংগ্রেস পাকিস্তানকে টুকরো করেছিল। কংগ্রেসের শাসনে এই কাজ হয়েছিল।’’
হরিয়ানায় অনেক পরিবারের সদস্যই ফৌজি। তাই সেখানে সেনার আধুনিকীকরণের তাসও খেলেছেন মোদী। তিনি বলেন, ‘‘বিজেপি সরকার রাফাল যুদ্ধবিমান, আধুনিক অস্ত্র, বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট নিয়ে এসে সামরিক বাহিনীকে শক্তিশালী করে তুলছে। এক পদ, এক পেনশন চালু করেছে।’’