বাগান শ্রমিকদের মজুরি দেওয়ার দাবিতে অনশনে কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থ। শুক্রবার। ছবি: উত্তম মুহরী।
নোট-সঙ্কটের জেরে বাগান শ্রমিকদের মজুরি দিতে সমস্যা হচ্ছে অসমজুড়ে। তার প্রতিবাদে অনশনে বসলেন উত্তর করিমগঞ্জের বিধায়ক কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থ। বিধায়কের সমর্থনে উত্তর করিমগঞ্জের ৪টি বাগানের শ্রমিকরা বসলেন ধর্নায়। এই পরিস্থিতিতে বিধায়কের অনশন শুরুর আগেই মিজোরামে গেলেন করিমগঞ্জের জেলাশাসক প্রশান্ত কুমার মহন্ত। শারিরীক পরিস্থিতি খারাপ হওয়ায় রাতেই কমলাক্ষবাবুকে হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।
মোবাইল পরিষেবা দূর, বিদ্যুৎ নেই প্রমোদনগর চা বাগানে। ‘ডিজিট্যাল’ পদ্ধতিতে মজুরির টাকা বিতরণে সেখানে হাজার সমস্যা। রামপুর, মদনপুর, জালালপুর বাগানের অবস্থা একই। সব জায়গাতেই টাকার হাহাকার। সাপ্তাহিক তলবের দিন ব্যাঙ্কের সহায়করা বাগানে যাচ্ছেন ঠিকই, কিন্তু মোবাইল পরিষেবার সঙ্কটে শ্রমিকদের টাকা দিতে পারছেন না। কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশের জেরে অসমে বাগান শ্রমিকদের তলবও ‘ক্যাশলেস’ করার নির্দেশ দেওয়া হয়। জেলাশাসক বাগান কর্তৃপক্ষগুলিকে শ্রমিকদের মজুরির টাকা সরাসরি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। প্রান্তিক শহর করিমগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় ইন্টারনেট সংযোগ পাওয়া স্বপ্নের সামিল। এ সবের মধ্যে পড়ে বাগান শ্রমিকরা প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে মজুরির টাকা পাচ্ছেন না।
মদনপুর বাগানের শ্রমিকরা জানান, কয়েক দিন বাগানের একটি দোকান থেকে জিনিসপত্র ধারে কিনেছিলেন। কিন্তু টাকা মিটিয়ে দিতে না পারায় দোকান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। টাকার অভাবে বাগান শ্রমিকরা আন্দোলন করছেন। বিধায়ক বসেছেন অনশনে। ঠিক সেই সময় করিমগঞ্জের জেলাশাসক প্রশান্ত কুমার মহন্ত ক্রিসমাসের ছুটিতে মিজোরামে গিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। কংগ্রেসের বক্তব্য, এই পরিস্থিতিতে জেলা ছেড়ে যাওয়া তাঁর উচিত হয়নি। জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক সুব্রত দেবের বক্তব্য, করিমগঞ্জে থেকেই জেলাশাসক ক্রিসমাস পালন করতে পারতেন। মোবাইল সংযোগ না পাওয়ায় এ বিষয়ে জেলাশাসকের প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি। আজ সকাল ১১টা থেকে বিধায়ক কমলাক্ষবাবু করিমগঞ্জে অনশনে বসেন। বিধায়কের বক্তব্য, সরকারের ভুল নীতির জন্য শ্রমিকরা মজুরি পাচ্ছেন না। শ্রমিকরা টাকা না পাওয়া পর্যন্ত তিনি অনশন চালিয়ে যাবেন। অতিরিক্ত জেলাশাসক নবারূণ ভট্টাচার্য বিধায়কের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি জানান, পাথারকান্দির তিনটি বাগানে চেকে তলব দেওয়ার ব্যবস্থা করছে প্রশাসন। উত্তর করিমগঞ্জের ক্ষেত্রেও একই ব্যবস্থা করা যেতে পারে। বিধায়ক জানান, শ্রমিকরা টাকা না পেলে অনশন প্রত্যাহার করবেন না।