রাতুল পুরী
রাজনৈতিক প্রতিশোধ নিতে কমল নাথের ভাইপো রাতুল পুরীকে ফাঁসানোর অভিযোগ আজ আদালতে খারিজ করল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। সেইসঙ্গে আশঙ্কা জানাল, গ্রেফতার না করা হলে, তিনি বিদেশে পালিয়ে যেতে পারেন। এ দিনই শিল্পপতি রাতুলের ২৫৪ কোটি টাকার বেনামি শেয়ার বাজেয়াপ্ত করেছে আয়কর দফতর। আয়কর সূত্রে জানানো হচ্ছে, অগুস্তাওয়েস্টল্যান্ড ভিভিআইপি চপার দুর্নীতির সূত্রে রাতুল ওই শেয়ার পেয়েছেন বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।
অভিযোগ উঠেছে, মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী কমল নাথের ভাইপো হওয়াতেই ফাঁসানো হচ্ছে রাতুলকে। দিল্লির আদালতে আজ এই অভিযোগ উড়িয়ে ইডি দাবি করে, অগুস্তাওয়েস্টল্যান্ড ভিভিআইপি চপার কাণ্ডে ও কালো টাকার লেনদেন নিয়ে তদন্ত চলছে। তার সূত্রেই পদক্ষেপ করা হচ্ছে রাতুলের বিরুদ্ধে। ইডির আইনজীবী ডি পি সিংহ এ দিন বিশেষ বিচারক অরবিন্দ কুমারের এজলাসে বলেন, ‘‘মামলাটি ২০১৪ সালের। এর মধ্যে রাজনৈতিক প্রতিশোধের কোনও বিষয় নেই। রাতুল এক জন শিল্পপতি। এবং কালো টাকার লেনদেনে অভিযুক্ত। কারও সঙ্গে আত্মীয়তা আছে বলেই বিষয়টি রাজনৈতিক প্রতিশোধ হয়ে যায় না।’’
এই বিচারকের নির্দেশেই আগামিকাল পর্যন্ত রাতুলকে গ্রেফতার করা যাবে না। গ্রেফতারির আশঙ্কায় হিন্দুস্থান পাওয়ারপ্রোজেক্টস-এর চেয়ারম্যান রাতুল গত ২৭ জুলাই আদালতে আগাম জামিনের আবেদন করেছিলেন। ৩১ জুলাই পর্যন্ত তাঁকে গ্রেফতার করা যাবে না বলে নির্দেশ দেয় আদালত। আজকের শুনানিতে ইডির আইনজীবী বলেন, ‘‘রাতুল খুবই প্রভাবশালী ব্যক্তি। তিনি গোটা তদন্তকেই প্রভাবিত করার চেষ্টা করে আসছেন।’’ এমনকি তাঁকে ‘ফ্লাইট রিস্ক’ বলেও উল্লেখ করে ইডি। অর্থাৎ বিমানে বিদেশে পালিয়ে যেতে পারেন বলেও আশঙ্কা করছে ইডি।
রাতুলের আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি ইডির দাবির বিরোধিতা করে যুক্তি দেন, যাঁর সংস্থায় ৬০০০ কর্মী কাজ করেন, তিনি বিমানে বিদেশে পালিয়ে যাবেন বলে মনে করার কোনও কারণ নেই। তা ছাড়া, এই মামলার প্রধান অভিযুক্ত সুষেণমোহন গুপ্ত জামিনে মুক্ত রয়েছেন। আর রাতুল গোড়া থেকেই তদন্তে সহযোগিতা এসেছেন। প্রায় ২০০ ঘণ্টা ধরে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এমন ব্যক্তিকে হেফাজতে নেওয়ার কোনও যুক্তি নেই।
অভিষেকের যুক্তি খণ্ডনে ইডির আইনজীবী ডি পি সিংহ জানান, প্রায় প্রতি দিনই কোনও না কোনও বড় ব্যক্তির সঙ্গে দেখা করার নামে বা অন্য কোনও কারণ দেখিয়ে রাতুল জিজ্ঞাসাবাদের মাঝপথে চলে গিয়েছেন। কিংবা যাওয়ার চেষ্টা করেছেন। ১১০ পাতা লিখেছেন। কিন্তু তাঁকে যত প্রশ্ন করা হয়েছে, সে সবের কোনও জবাব দেননি। শুধু লিখেছেন, ‘‘জবাব দেব।’’ তিনি যে তদন্তে সহযোগিতা করছেন না, এই সবই তার প্রমাণ।’’ কমল নাথের ভাইপোকে গ্রেফতার করা যাবে কি না, সেই সিদ্ধান্ত হবে আগামিকাল।