ছবি: পিটিআই।
একাধিক দুর্নীতির মামলায় অভিযুক্ত তিনি। দীর্ঘদিন ধরে তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। আইনি মারপ্যাঁচে বিলম্বিত হলেও শেষ পর্যন্ত গ্রেফতারি এড়াতে পারলেন না মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী তথা কংগ্রেস নেতা কমল নাথের ভাগ্নে রাতুল পুরী। সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার ঋণ দুর্নীতি মামলায় গত কাল মধ্য রাতে তাঁকে গ্রেফতার করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। কমল নাথ অবশ্য জানিয়েছেন, রাতুলের ব্যবসার সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক নেই। আজ দিল্লির এক বিশেষ আদালত রাতুলকে ছ’দিনের ইডি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে।
ভাগ্নেকে গ্রেফতার করায় স্বভাবতই অস্বস্তিতে কমল নাথ। তিনি বলেন, ‘‘ওদের ব্যবসার সঙ্গে আমার কোনও যোগাযোগ নেই। বিষয়টির সঙ্গে আমার সম্পর্ক রয়েছে বলে যে ভাবে দেখানো হচ্ছে, তা ঠিক নয়। আমি শেয়ার হোল্ডার নই, ওই সংস্থার ডিরেক্টরও নই।’’ তবে একই সঙ্গে তাঁর মন্তব্য, ‘‘আমার মতে, এই গ্রেফতারির পিছনে অসৎ উদ্দেশ্য রয়েছে। আমার বিশ্বাস এবং আস্থা রয়েছে যে আদালত সঠিক সিদ্ধান্ত নেবে।’’
কপ্টার দুর্নীতি, আয়কর ফাঁকি, ব্যাঙ্কের ঋণের টাকা তছরুপের মতো অভিযোগের তদন্ত চলছিল রাতুলের বিরুদ্ধে। কপ্টার দুর্নীতি মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গত কাল রাতে তাঁকে নয়াদিল্লিতে ডেকে পাঠানো হয়। তার পর সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার ঋণ দুর্নীতি মামলায় কালো টাকা লেনদেন প্রতিরোধ আইনে রাতুলকে গ্রেফতার করে ইডি। তাঁর পারিবারিক সংস্থা ‘মোসার বিয়ার’ সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক থেকে ৩৫৪.৫১ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছিল ২০১৪ সালে। কিন্তু নির্দিষ্ট সময় অতিক্রান্ত হওয়ার পরেও টাকা ফেরত না দেওয়ায় তদন্ত শুরু করেন ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। তদন্তে উঠে আসে সংশ্লিষ্ট নথিপত্রে গোলমাল রয়েছে এবং ঋণের টাকা সংস্থার কাজে না লাগিয়ে নয়ছয় করা হয়েছে। এর পরই সিবিআইকে তদন্তের ভার দেওয়া হয়।
কম্পিউটারের বিভিন্ন সরঞ্জাম নির্মাণকারী সংস্থা ‘মোসার বিয়ার’ ঋণের ভারে জর্জরিত হয়ে গত বছর বন্ধ হয়ে যায়। রাতুল ওই সংস্থার এগজিকিউটিভ ডিরেক্টর ছিলেন। ২০১২ সালে তিনি ওই পদ থেকে ইস্তফা দেন। তাঁর বাবা দীপক পুরী এবং মা নীতা (কমল নাথের বোন) সংস্থার এগজিকিউটিভ ডিরেক্টর। রাতুলের গ্রেফতারির পর ‘মোসার বিয়ার’ এক বিবৃতিতে বলেছে, তারা যা করেছে তা আইন মেনেই। বিষয়টি যখন ন্যাশনাল ল ট্রাইবুনালের বিচারাধীন, তখন এই গ্রেফতারি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।