kashmir

Kashmir: ‘যোদ্ধা’ বাবাকে হাসিমুখেই বিদায় দিলেন মেয়ে

তিনি বাঁচতেন নির্ভয়ে। নব্বইয়ের দশকে সন্ত্রাসবাদ যখন চরমে, তখনও শ্রীনগর ছাড়তে চাননি তিনি।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শ্রীনগর শেষ আপডেট: ০৭ অক্টোবর ২০২১ ০৮:০৪
Share:

নিহত কাশ্মীরি পণ্ডিত মাখনলাল বিন্দ্রুর মেয়ে শ্রদ্ধা (বাঁ দিকে)। কাশ্মীরি পণ্ডিতদের মোমবাতি মিছিল (ডান দিকে)। বুধবার শ্রীনগরে। ফাইল ছবি ও পিটিআই।

তিনি বাঁচতেন নির্ভয়ে। নব্বইয়ের দশকে সন্ত্রাসবাদ যখন চরমে, তখনও শ্রীনগর ছাড়তে চাননি তিনি। সেই কাশ্মীরি পণ্ডিত মাখনলাল বিন্দ্রু জঙ্গিদের গুলিতে নিহত হওয়ার পরে চোখের জল ফেললেন না তাঁর মেয়ে শ্রদ্ধা বিন্দ্রু। উল্টে তাঁর মুখে লেগে রইল হাসি। শ্রদ্ধার মতে, বাবার মৃত্যুতে কাঁদলে জঙ্গিদেরই সম্মান জানানো হবে। এর পাশাপাশি সন্ত্রাসবাদীদের সমালোচনা করে তাদের মুখোমুখি বিতর্কে বসারও আহ্বান জানিয়েছেন পিতৃহারা কন্যা।

Advertisement

শ্রীনগরের ইকবাল পার্কে একটি ওষুধের দোকান চালাতেন মাখনলাল। মঙ্গলবার সেই দোকানে ঢুকে তাঁকে গুলি করে খুন করে জঙ্গিরা। বুধবার তাঁর মেয়ে শ্রদ্ধা জানান, হাসি মুখেই বাবাকে বিদায় জানাবেন তিনি। কারণ, তাঁর বাবা বীরের মতো বেঁচেছেন। মরেছেনও বীরের মতো। তিনি বলেন, ‘‘বাবা বলতেন বুট পরেই তিনি মৃত্যুকে বরণ করবেন। আমি গর্বিত যে, তিনি বুট পরেই মৃত্যুকে বরণ করেছেন। আজ আমার বাবা নেই। তবুও আমি হাসছি। কারণ আমি জানি, আমার বাবা এক জন যোদ্ধা ছিলেন। এক জন জয়ী যোদ্ধার মতোই তিনি জীবন কাটিয়েছেন। তাই আমি কাঁদব না। আমার চোখের জলে বন্দুকবাজদেরই শ্রদ্ধা জানানো হয়ে যাবে।’’ মাখনলালের পরিবারের অন্য সদস্য এবং পড়শিদের চোখ তখন ভিজে এসেছে কান্নায়। শ্রদ্ধা বলেন, ‘‘আসুন আমরা মাখনলাল বিন্দ্রুকে শ্রদ্ধা জানাই। তিনি ছিলেন এক জন ভাল মানুষ। পরিশ্রমী মানুষ। তাঁকে কুর্নিশ... সত্যিকারের কুর্নিশ।’’

Advertisement

নব্বইয়ের দশকে উপত্যকায় চরম সন্ত্রাসের সময়ে ওষুধের দোকান খোলা রাখতেন মাখনলাল। শ্রদ্ধা জানালেন, তাঁর বাবা ভয় কী জিনিস জানতেন না। তাঁকে ভয়হীন ভাবে বাঁচতে শিখিয়েছেন বাবা। তিনি বলেন, ‘‘কেন আমরা কোনও জিনিসকে ভয় পাব? আমি বাবাকে জিজ্ঞাসা করতাম, তুমি ভয় পাও না? বাবা বলতেন, ‘ভয়ে ভয়ে বাঁচলে প্রতিদিনই মরতে হবে। আমি এক বারই মরতে চাই।’’’

এ দিন শ্রদ্ধার একটি ভিডিয়োও ছড়িয়ে পড়েছে সমাজমাধ্যমে। সেখানে শ্রদ্ধা বলেন, ‘‘আমার বাবা এক জন কাশ্মীরি পণ্ডিত ছিলেন। তিনি কখনও মরতে পারেন না। জঙ্গিরা তাঁর শরীরকে মারতে পারে। কিন্তু আমার বাবা চেতনায় বেঁচে থাকবেন।’’

গত কাল শ্রীনগরের উপকণ্ঠে জঙ্গি হানায় প্রাণ হারিয়েছেন বীরেন্দ্র পাসোয়ান নামে এক হকারও।। বান্দিপোরায় জঙ্গিরা খুন করেছে মহম্মদ শফি লোন নামে এক ট্যাক্সিচালককেও। ভিডিয়োয় জঙ্গিদের তীব্র সমালোচনা করেন শ্রদ্ধা বলেন, ‘‘ওরা শুধু পাথর ছুড়তেই পারে আর পিছন থেকে গুলি করতে পারে।’’ চোয়াল শক্ত করে জঙ্গিদের প্রতি শ্রদ্ধার হুঙ্কার, ‘‘সাহস থাকলে সামনে এসে আমাদের সঙ্গে বিতর্কে বসুক। তখন বোঝা যাবে কার কত দম।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement