Jyotiraditya Scindia

কমল নাথের সমালোচনার মধ্যেই মন্দসৌর প্রসঙ্গ, বিজেপিতে যোগ দিয়েও ধন্দে সিন্ধিয়া?

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১২ মার্চ ২০২০ ০৪:২০
Share:

বিজেপি সদর দফতরে জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া। বুধবার নয়াদিল্লিতে। ছবি: প্রেম সিংহ

হোলির দিন সকালেই দেখা করে কথা হয়ে গিয়েছে নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহের সঙ্গে। বিজেপি কিন্তু ছবি প্রকাশ করেনি। প্রথমে ইঙ্গিত ছিল, গত কালই বিজেপিতে যোগ দেবেন জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া। হয়নি সেটাও। পরে বলা হল, কাল, বৃহস্পতিবার ভোপালে বড় শোভাযাত্রা করে দলে যোগ দেবেন মহারাজ। তার আগেই আজ বিজেপি দফতরে সাড়ে ১২টায় সময় স্থির হল। কিন্তু এক ঘণ্টা, দু’ঘণ্টা, তিন ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও ‘মহারাজ’-এর দেখা নেই। জল্পনা, সাড়ে ১২টা থেকে বেলা ২টো পর্যন্ত ‘রাহুকাল’ কাটিয়েই অবশেষে বিজেপি দফতরে এসে দলে যোগ দিলেন সিন্ধিয়া।

Advertisement

বিজেপি সভাপতি জগৎপ্রকাশ নড্ডা বললেন, ‘‘এ দল অনেক গণতান্ত্রিক। সকলে নিজের কথা রাখতে পারেন, প্রত্যেকের অবদান আছে। আপনিও মূল স্রোতে কাজ করার সুযোগ পাবেন। এ বার খোলামেলা পরিবেশে খোলা মনে কথা বলুন।’’ বিজেপি নেতৃত্ব হয়তো ভেবেছিলেন, রাহুল গাঁধীর বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেবেন সিন্ধিয়া। ‘আজকের কংগ্রেস আগের মতো নেই’ বললেন বটে, কিন্তু নিশানা করলেন মূলত কমল নাথকেই। মধ্যপ্রদেশের কমল নাথ সরকার কৃষকদের ঋণ মাফ করেনি, ক্ষতিপূরণ দেয়নি, রোজগার দেয়নি, দুর্নীতি বেড়েছে— এ-সব বলতে বলতে হঠাৎ শিবরাজ সিংহ চৌহানের আমলে মধ্যপ্রদেশের মন্দসৌরে কৃষকদের উপরে গুলি চালনার ঘটনাও টেনে আনলেন। বললেন, ‘‘এখনও কৃষকদের বিরুদ্ধে মামলা চলছে।’’

আজ অবশ্য নরেন্দ্র মোদীর ভূয়সী প্রশংসা করেছেন সিন্ধিয়া। কিন্তু এই সিন্ধিয়াই ঠিক দু’সপ্তাহ আগে দিল্লির হিংসা নিয়ে বিজেপির ‘ঘৃণার রাজনীতি’ আর কেন্দ্রীয় সরকারের ‘ব্যর্থতা’ নিয়ে সরব হয়েছিলেন। যদিও অতীতে ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদ ও অযোধ্যা রায়কে স্বাগত জানিয়েছিলেন। প্রশ্ন উঠছে এখানেই। আজ যোগ দিলেন সিন্ধিয়া, কয়েক ঘণ্টার মধ্যে প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বিজেপি তাঁকে মধ্যপ্রদেশ থেকে রাজ্যসভার প্রার্থী ঘোষণাও করে দিল, তবু কোথাও কি দোলাচল এখনও রয়েছে সিন্ধিয়ার মনে? যে পরিবারতন্ত্রের বিরুদ্ধে কথা বলে আসেন মোদী ও তাঁর অনুগামীরা, সিন্ধিয়ার প্রবেশে সে অস্ত্র কি এ বারে ছাড়তে হবে বিজেপিকে?

Advertisement

বিজেপি অবশ্য বলছে, রাজমাতা থেকে বসুন্ধরা রাজে সকলেই তো একই সিন্ধিয়া পরিবারের। পরিবারতন্ত্র বলতে বিজেপি বোঝায়, একই পরিবারের হাতে ক্ষমতা কব্জা করে রাখা। যেটি কংগ্রেসে গাঁধী পরিবারের বেলায় হয়। তবে সিন্ধিয়ার আসাটা আর পাঁচ জনের মতো ‘সহজ’ নয়। কেন? বিজেপির এক নেতার কথায়, ‘‘আজ প্রথম দিনেই দেখুন তিন ঘণ্টা দেরি। এসেই মন্দসৌরের কথা তোলা। সিন্ধিয়া চলেন রাজার চালে। আগামী দিনে এটা নিয়েই সংঘাত বাধবে।’’ সিন্ধিয়ার রাজ ঘরানার আবেগে সুড়সুড়ি দিয়ে শিবরাজ সিংহ চৌহানও আজ টুইট করলেন, ‘‘স্বাগত মহারাজ, সঙ্গে আছে শিবরাজ।’’ আর এক নেতা থাওরচন্দ্র গহলৌতের টুইট, ‘‘স্বাগত মহারাজ, আবার হবে রামরাজ।’’

প্রশ্ন হল, বিজেপিতে সিন্ধিয়ার আসার পর কমল নাথ সরকারের ভবিষ্যৎ কী? কংগ্রেস বলছে, যে বিধায়ক-মন্ত্রীরা বেঙ্গালুরুতে আছেন, তাঁদেরই জনা দশেক বিজেপিতে যেতে রাজি নন। যদিও সিন্ধিয়া বলছেন, ‘‘সব স্পষ্ট হয়ে যাবে।’’ কিন্তু কমল নাথ আশাবাদী, সামনের সপ্তাহে বিধানসভায় আস্থা ভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করবেন। কারণ, ধোঁকা দিয়ে বিধায়কদের নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কংগ্রেসের দাবি, শুধু তাদের নয়, বিজেপির অনেক বিধায়কও তাদের সঙ্গে আছেন। দিগ্বিজয় সিংহ বলেন, ‘‘বিজেপি নেতারা কংগ্রেস বিধায়কের ইস্তফার চিঠি নিয়ে আসছেন। এর পরেও বলবেন, এটা কংগ্রেসের অন্তর্দ্বন্দ্ব? বিজেপির ষড়যন্ত্র নিয়ে আর কোনও সন্দেহ আছে?’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement