এই সেই পোস্টার। ছবি: টুইটার থেকে সংগৃহীত।
অনেক দিন ধরেই বেসুরো বাজছেন। হাইকমান্ডকে নিজের ক্ষোভও জানিয়ে দিয়েছিলেন। এ বারে মধ্যপ্রদেশের রাস্তায় নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহের সঙ্গে পোস্টার পড়ল কংগ্রেসের নেতা জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার। জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বিলোপের সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেছিলেন সিন্ধিয়া। বিজেপিরই এক ছোটোখাটো নেতা মোদী-শাহের সঙ্গে সিন্ধিয়ার ছবি দিয়ে পোস্টার ছাপিয়েছেন। বিজেপি যেমন সিন্ধিয়ার প্রতি সদয়, কংগ্রেসের এই নবীন নেতাও নিজের দলের নেতৃত্বের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে ক্ষোভ দেখাচ্ছেন নিয়মিত। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী কমল নাথের বিরুদ্ধে মুখর হয়েছেন ফের। বলেছেন, ‘‘কথা ছিল কৃষকদের ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ মাফ হবে। অথচ হচ্ছে মাত্র ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত। ঠিকমতো রূপায়ণই হচ্ছে না ঋণ মাফ প্রকল্প।’’
বিজেপি নেতারা তো ঠিক এই কথাটিই গোড়া থেকে বলে আসছেন। এ বারে সিন্ধিয়া বলার পর কমল নাথকে আক্রমণের সুযোগ ছাড়বে কেন বিজেপি? ফলে আসরে নেমে পড়েছেন শিবরাজ সিংহ চৌহান। আজ বলেন, ‘‘এত দিন এটিই তো আমরা বলে আসছি। এ বারে কংগ্রেসের ভিতর থেকেও একই আওয়াজ উঠছে। কমল নাথের সরকারের কি ঘুম ভাঙবে? কৃষকেরা কি সুরাহা পাবেন?’’
রাজ্যে ক্ষমতায় এলে কৃষকদের ঋণ মাফের ভাবনা ছিল রাহুল গাঁধীর। ভোটের আগে দেওয়া প্রতিশ্রুতি পালনে মধ্যপ্রদেশ, ছত্তীসগড়, রাজস্থানে ক্ষমতায় আসার দশ দিনের মধ্যেই ঋণ মাফ সুনিশ্চিত করেছিলেন তিনি। ফলে এই প্রকল্প নিয়ে সিন্ধিয়ার তোপকে শুধু কমল নাথ নয়, সরাসরি রাহুল গাঁধীর প্রতি বার্তা হিসেবেও দেখছেন কংগ্রেসের অনেকে।
কিন্তু কেন এমন বেসুরো বাজছেন জ্যোতিরাদিত্য? সিন্ধিয়া-ঘনিষ্ঠরা বলছেন, রাহুল সভাপতি থাকার সময়ই মধ্যপ্রদেশের এই নেতাকে সাধারণ সম্পাদক করে পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের দায়িত্ব দেওয়া হয়। প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরাকে দেওয়া হয় পূর্ব উত্তরপ্রদেশের ভার। কিন্তু ভোটের পর ধীরে ধীরে সিন্ধিয়াকে কোণঠাসা করে প্রিয়ঙ্কাই গোটা উত্তরপ্রদেশের সিদ্ধান্ত নেওয়া শুরু করেন। অন্তর্বর্তী সভাপতি হয়ে সনিয়া গাঁধী এ বারে মহারাষ্ট্রের দায়িত্ব দিয়েছেন সিন্ধিয়াকে। আর এ সবই হচ্ছে তাঁকে মধ্যপ্রদেশের রাজনীতি থেকে বাইরে রাখার কল। এবং এর পিছনে কলকাঠি নাড়ছেন কমল নাথ ও দিগ্বিজয় সিংহ। সিন্ধিয়া রাজ্যে দলের সভাপতি হতে চান, কিন্তু কমল-দিগ্বিজয় বাদ সাধছেন। সিন্ধিয়াও তলে তলে বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। তাঁর ঘনিষ্ঠ এক নেতার মতে, ‘‘কংগ্রেসে জুতসই দায়িত্ব না-পেলে বিজেপিমুখো হতেও দ্বিধা করবেন না সিন্ধিয়া।’’