কলকাতা হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি সিএস কারনান।
সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্টের বর্তমান এবং অবসরপ্রাপ্ত অনেক বিচারপতি, তাঁদের স্ত্রী ও মহিলা বিচারপতিদের সম্পর্কে অশ্লীল, অবমাননাকর মন্তব্য করার অভিযোগে গ্রেফতার হলেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি সিএস কারনান। নিজের বক্তব্য তিনি ইউটিউবে পোস্ট করেছিলেন। চেন্নাই পুলিশের সাইবার ক্রাইম বিভাগের একটি দল আজ শহরের উপকন্ঠে কারনানের বাসভবনে পৌঁছয়। সেখান থেকেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।
তিন বছর আগে, কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি থাকাকালীনই আদালত অবমাননার অভিযোগে ছয় মাসের জন্য কারনানের জেল হয়েছিল। দেশের বিচারব্যবস্থার ইতিহাসে সেটা ছিল এই ধরনের প্রথম ঘটনা। তৎকালীন প্রধান বিচারপতি জেএস কেহরের নেতৃত্বাধীন সাত সদস্যের বেঞ্চ কারনানকে গ্রেফতার করার জন্য পশ্চিমবঙ্গের পুলিশ কমিশনারকে নির্দেশ দিয়েছিল। আর কারনানই ছিলেন দেশের প্রথম বিচারপতি, যাঁকে সুপ্রিম কোর্টের বিচারের মুখে পড়তে হয়েছিল। শীর্ষ আদালতের নির্দেশের পর গ্রেফতারি এড়াতে সে বার কয়েক সপ্তাহ গা ঢাকা দিয়েছিলেন কারনান। অবশেষে মোবাইল ফোন ট্র্যাক করে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছিল।
এ বার কারনানের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্টের বর্তমান ও প্রাক্তন অনেক বিচারপতি, তাঁদের স্ত্রী ও মহিলা বিচারপতিদের সম্পর্কে অবমাননাকর মন্তব্য করে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছেন। মাদ্রাজ হাইকোর্টের এক আইনজীবী এ নিয়ে প্রধান বিচারপতি শরদ অরবিন্দ বোবডের কাছে অভিযোগ জানান। অক্টোবর মাসে এই বিষয় নিয়ে মামলাও হয়। বলা হয়, কারনান কয়েকজন বিচারপতির বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থা করার অভিযোগ এনেছেন। এই প্রসঙ্গে তিনি কয়েকজন মহিলা বিচারপতির কথাও টেনে এনেছেন। কারনানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলেছিল মাদ্রাজ হাইকোর্ট। চেন্নাই পুলিশ এই মামলায় পদক্ষেপ করছে না কেন, তা নিয়ে কিছু দিন আগেই ক্ষোভ জানিয়েছিল হাইকোর্ট।
২০০৯ সালে মাদ্রাজ হাইকোর্টেরই বিচারপতি ছিলেন কারনান। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি হন ২০১৬ সালে। তার পরে, বিচারব্যবস্থায় দুর্নীতির অভিযোগ এনে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখেছিলেন তিনি। জেল থেকে বেরিয়ে গড়ে তুলেছিলেন ‘অ্যান্টি করাপশন ডায়নামিক পার্টি’। গত লোকসভা ভোটে সেই দলের প্রার্থীও হয়েছিলেন।