ফাইল চিত্র।
হরিদ্বার এবং দিল্লির ঘৃণা-ভাষণ নিয়ে চাপ বাড়ছে।
সামাজিক মাধ্যম এবং নাগরিক সমাজের একাংশের প্রবল চাপের মুখে হরিদ্বারের ঘৃণা-ভাষণের অভিযুক্তদের তালিকায় ইসলাম ধর্ম ত্যাগ করে হিন্দু হওয়া ওয়াসিম রিজ়ভি ওরফে জিতেন্দ্র ত্যাগীর সঙ্গেই এ বার ধর্ম সংসদে বক্তৃতা দেওয়া ধর্মদাস মহারাজ নামে এক সাধু এবং উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠন হিন্দু মহাসভার সাধারণ সম্পাদক অন্নপূর্ণা মা-র নাম যোগ করল উত্তরাখণ্ড পুলিশ। তার মধ্যেই দেশের প্রধান বিচারপতি এন ভি রমণাকে চিঠি দিলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীদের একাংশ। তাঁদের আর্জি, দিল্লিতে ‘হিন্দু যুবা বাহিনী’র সভায় ঘৃণা ও উস্কানিমূলক বক্তব্য এবং হরিদ্বারে ধর্ম সংসদের নাম করে গণহত্যার ডাক ও ঘৃণা ছড়ানোর ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে মামলা করা হোক। তাঁদের বক্তব্য, দিল্লি এবং হরিদ্বারের সভায় নিছক ঘৃণা ছড়ানো হয়নি, প্রকাশ্যেই এ দেশের মুসলিমদের গণহত্যার ডাক দেওয়া হয়েছে। এই ধরনের ঘৃণা-ভাষণ শুধু ঐক্য ও সংহতির পক্ষে বিপজ্জনক নয়, তা এ দেশের লক্ষ মুসলমানের জীবনও বিপন্ন করে তোলে।
চিঠিতে আইনজীবীরা বলেছেন, অতীতেও এই ধরনের বক্তৃতা দেওয়া হয়েছে। এগুলি তারই ধারাবাহিক অঙ্গ। আগের ঘৃণা-ভাষণগুলির ক্ষেত্রেও ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৫৩, ১৫৩এ, ২৯৫এ, ৫০৪, ৫০৬, ১২০বি, ৩৪ ধারায় কোনও কার্যকরী ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। সংবিধানের ৩২ নম্বর ধারায় একাধিক আবেদন বিচারের জন্য সুপ্রিম কোর্টে পড়ে রয়েছে। ওই চিঠিতে দিল্লি ও হরিদ্বারের ঘৃণা-ভাষণে একাধিক অভিযুক্তের নামও যোগ করেছেন আইনজীবীরা। দ্রুত এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন তাঁরা।
উত্তরাখণ্ড পুলিশ আরও যে দু’জনের নাম এফআইআরে যোগ করেছে, তাঁরা দু’জনই হরিদ্বারের ধর্ম সংসদে গণহত্যা এবং খুনের উস্কানি দিয়ে বক্তৃতা করেছিলেন বলে অভিযোগ। সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, হিন্দু মহাসভার নেত্রী অন্নপূর্ণা হরিদ্বারের সভায় বলেছিলেন, ‘‘আমরা ১০০ সেনা চাই জেতার জন্য, যারা ওদের ২০ লক্ষ জনকে মারবে।’’ ভারতের সংবিধান ‘ভুল’ এবং নাথুরাম গডসেই আদর্শ বলেও মন্তব্য করেছিলেন তিনি। আর ধর্মদাস মহারাজ নাথুরাম গডসের কায়দায় প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহকে গুলি করে খুনের ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। তবে ওই অনুষ্ঠানের অন্য বক্তারা বা ধর্ম সংসদের মূল আয়োজক তথা উত্তরপ্রদেশের ডসনা দেবী মন্দিরের প্রধান পুরোহিত যতি নরসিংহানন্দের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ এখনও দায়ের করেনি বিজেপি-শাসিত উত্তরাখণ্ডের পুলিশ।