WAQF Bill report tabled

ওয়াকফ বিলের জেপিসি রিপোর্ট থেকে বিরোধীদের ‘ভিন্ন মত’ গায়েব! প্রতিবাদে বিক্ষোভ রাজ্যসভায়

জেপিসির বিরোধী সদস্যেরা ওয়াকফ (সংশোধনী) বিলের বিভিন্ন ধারা নিয়ে আপত্তি জানিয়ে ‘নোট অফ ডিসেন্ট’ জমা দিয়েছিলেন। কিন্তু রিপোর্ট থেকে সেগুলি মুছে ফেলা হয়েছে বলে অভিযোগ।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৫:০০
Share:
রাজ্যসভার অধিবেশন।

রাজ্যসভার অধিবেশন। ছবি: পিটিআই।

বিরোধী সাংসদদের প্রতিবাদের মধ্যেই বৃহস্পতিবার রাজ্যসভায় যৌথ সংসদীয় কমিটি (জেপিসি)-র রিপোর্ট-সহ ওয়াকফ বিলের সংশোধিত খসড়া পেশ করা হল। আর সেই সঙ্গেই আবার অভিযোগ উঠল বিরোধী শিবিরের কণ্ঠরোধের।

Advertisement

ওয়াকফ বিল সংক্রান্ত জেপিসির সদস্য তথা বিজেপি সাংসদ মেধা বিশরাম কুলকার্নি বৃহস্পতিবার রিপোর্টটি পেশ করেন। রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খড়্গে অভিযোগ করেন, জেপিসির বিরোধী সদস্যরা ওয়াকফ (সংশোধনী) বিলের বিভিন্ন ধারা নিয়ে আপত্তি জানিয়ে ‘নোট অফ ডিসেন্ট’ জমা দিয়েছিলেন। কিন্তু রিপোর্ট থেকে সেগুলি মুছে ফেলা হয়েছে। যদিও সংসদীয় ও সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রী কিরেন রিজিজু সেই অভিযোগ উড়িয়ে বলেন, ‘‘এমন কিছুই হয়নি।’’

গত ৩০ ডিসেম্বর জেপিসির বৈঠকে ভোটাভুটির মাধ্যমে চূড়ান্ত ওয়াকফ বিল সংশোধনী সংক্রান্ত রিপোর্ট পাশ হয়। তার পরে ৩১ ডিসেম্বর ওই রিপোর্ট স্পিকারের হাতে তুলে দিয়েছিলেন জেপিসি চেয়ারম্যান তথা বিজেপি সাংসদ জগদম্বিকা পাল। পরে তিনি জানান, ওয়াকফ বিল নিয়ে জেপিসির মোট ৩৮টি বৈঠক হয়েছে। বিষয়টির সঙ্গে জড়িত প্রায় ২৫০টি পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে চূড়ান্ত রিপোর্ট তৈরি হয়েছে।

Advertisement

যদিও সংখ্যাধিক্যের জোরে জেপিসিতে ওয়াকফ বিল পাশ করা হয়েছে অভিযোগ তুলে তার তীব্র সমালোচনা করেন প্রায় সব বিরোধী দলের নেতারা। তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ওই বিলে বিরোধীদের একটি সংশোধনী গৃহীত হওয়া তো দূর, আলোচনা পর্যন্ত হয়নি। এটা কি সংসদীয় গণতন্ত্রের নমুনা!’’ ডিএমকে নেতা টিআর বালু বলেন, ‘‘সংসদের মতো সংসদীয় কমিটিও প্রহসনে পরিণত হয়েছে।’’

সংঘাতের এই আবহে বৃহস্পতিবার রিপোর্ট পেশের পরেই শুরু হয় হট্টগোল। রাজ্যসভার চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখড় বার বার বিরোধীদের নিরস্ত হওয়ার আবেদন জানালেও তাতে কাজ হয়নি। প্রাথমিক ভাবে সভা মুলতুবি করে দেন তিনি। এর পর আবার অধিবেশন শুরু হলেও গন্ডগোল চলতে থাকে। রাষ্ট্রপতির ধন্যবাদজ্ঞাপক বিবৃতি পড়ার সময়ও সভায় স্লোগান ওঠায় বিরক্ত ধনখড় বলেন, ‘‘আপনারা রাষ্ট্রপতির অবমাননা করছেন।’’ রাজ্যসভার জিরো আওয়ারে অশান্তি সৃষ্টির জন্য নির্দিষ্ট ভাবে দুই তৃণমূল সাংসদ, সামিরুল ইসলাম ও নাদিমুল হক এবং ডিএমকের এম মহম্মদ আবদুল্লার দিকে অভিযোগের আঙুল তোলেন চেয়ারম্যান ধনখড়।

প্রসঙ্গত, বিরোধীদের প্রবল আপত্তি ও হট্টগোলের মধ্যে গত বছরের ৮ অগস্ট লোকসভায় ওয়াকফ সংশোধনী বিল পেশ করেছিলেন কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘুমন্ত্রী রিজিজু। বিলটি ‘অসাংবিধানিক এবং মুসলিমদের ধর্মীয় স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপকারী’ বলে অভিযোগ তুলে বিরোধীরা একযোগে তা নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিলেন। কংগ্রেস, তৃণমূল-সহ বিরোধীদের অভিযোগ, ৪৪টি সংশোধনী এনে ওয়াকফ বোর্ডের উপর সরকারি কর্তৃত্ব নিরঙ্কুশ করতে চাইছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। দীর্ঘ বিতর্কের শেষে ঐকমত্যের লক্ষ্যে বিলটি ৩১ সদস্যের জেপিসির কাছে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কেন্দ্র। জেপিসি রিপোর্টে বিজেপি এবং তার সহযোগী দলগুলির সাংসদেরা যে সংশোধনী প্রস্তাবগুলি জমা দিয়েছিলেন, তার ১৪টি গৃহীত হলেও বিরোধীদের আনা ৪৪টি সংশোধনীর একটিও গৃহীত হয়নি বলে অভিযোগ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement