উত্তপ্ত জেএনইউ, ছাত্র-বিক্ষোভে চলল জলকামান

পড়ুয়াদের দাবিগুলি বিবেচনা করবেন বলে জেএনইউ-র ছাত্র সংসদের প্রতিনিধিদের আশ্বাস দিয়েছেন কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী রমেশ পোখরিয়াল ‘নিশঙ্ক’।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০১৯ ০৩:০১
Share:

পড়ুয়াদের বিক্ষোভে জলকামান পুলিশের। সোমবার দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে। ছবি: পিটিআই

অগ্নিগর্ভ জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় (জেএনইউ)। কর্তৃপক্ষের নয়া হস্টেল নীতির প্রতিবাদে কয়েক দিন ধরে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন পড়ুয়ারা। আজ সমাবর্তনের দিন তা চরমে পৌঁছল। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ালেন পড়ুয়ারা। তাঁদের ছত্রভঙ্গ করতে জলকামানও ব্যবহার করে পুলিশ। আহত হয়েছেন বেশ কয়েক জন পড়ুয়া। পুলিশ কয়েক জন ছাত্রকে আটকও করেছে।

Advertisement

পড়ুয়াদের দাবিগুলি বিবেচনা করবেন বলে জেএনইউ-র ছাত্র সংসদের প্রতিনিধিদের আশ্বাস দিয়েছেন কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী রমেশ পোখরিয়াল ‘নিশঙ্ক’। আজ তিনি সমাবর্তনে যোগ দেন। ছাত্র বিক্ষোভের জেরে তাঁকে ছ’ঘণ্টা আটতে থাকতে হয়েছে। যদিও জেএনইউয়ের উপাচার্য এম জগদেশ কুমার বিক্ষোভরত পড়ুয়াদের সঙ্গে দেখাও করেননি।

হস্টেলের ফি তিন গুণ বাড়ানো, লাইব্রেরি ব্যবহারের সময়ে পরিবর্তন, পড়ুয়াদের পোশাক বিধিতে বদল-সহ বেশ কিছু নীতি পাল্টানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন জেনএনইউ কর্তৃপক্ষ। বাম ছাত্র সংগঠনগুলির জোট পরিচালিত ছাত্র সংসদের ডাকে সকাল থেকেই ক্যাম্পাসের বাইরে জড়ো হতে শুরু করেছিলেন পড়ুয়ারা। দুপুরে বসন্তকুঞ্জে অল ইন্ডিয়া কাউন্সিল ফর টেকনিক্যাল এডুকেশনের (এআইসিটিই) প্রেক্ষাগৃহে সমাবর্তনে প্রধান অতিথি ছিলেন উপরাষ্ট্রপতি এম বেঙ্কাইয়া নায়ডু। বিশ্ববিদ্যালয়ের উত্তর ও পশ্চিম গেটে ব্যারিকেড করা হয়েছিল মিছিল আটকাতে। বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ কয়েক হাজার পড়ুয়ার মিছিল ব্যারিকেড ভেঙে এআইসিটিই-র দিকে এগোতে থাকে। স্লোগান ওঠে, ‘‘দিল্লি পুলিশ গো ব্যাক’’। উপাচার্যকে ‘চোর’ বলেও স্লোগান দেন পড়ুয়ারা।

Advertisement

আরও পড়ুন: আমিও রামভক্ত, সে দিন দাম দিয়েছিলাম: কল্যাণ

পড়ুয়াদের অভিযোগ, ব্যারিকেড ভাঙার পর লাঠি চালাতে শুরু করে পুলিশ। পড়ুয়া-পুলিশ সংঘর্ষ শুরু হলে ব্যবহার করা হয় জলকামানও। যদিও পুলিশের তরফে এক বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে, আজ জেএনইউয়ের নিরাপত্তায় ৬০০ জন পুলিশকর্মী মোতায়েন করা হয়েছিল। ব্যারিকেড ভাঙার পর পড়ুয়াদের রুখতে ধস্তাধস্তি হলেও লাঠি চালানো হয়নি।

কীর্তি ভগৎ নামে এক পড়ুয়া বলেন, ‘‘জল ও বিদ্যুৎ-সহ যাবতীয় ফি বৃদ্ধির বিরুদ্ধেই প্রতিবাদ। আমার বাবা এক জন ঠিকা শ্রমিক, তিনি কী ভাবে এই খরচ চালাবেন?’’ ক্যাম্পাসে কার্ফু জারি নিয়ে রুসানা নামে এক পড়ুয়া বলেন, ‘‘এখানে বিতর্ক সভা এবং অনুষ্ঠানগুলি রাত পর্যন্ত চলে। কার্ফু জারির সিদ্ধান্ত বৌদ্ধিক বিকাশকে ব্যাহত করবে।’’

আরও পড়ুন: যুক্তির চেয়ে আস্থা বেশি বলপ্রয়োগে

কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন জেএনইউ ছাত্র সংসদের সভাপতি ঐশী ঘোষ এবং সহ-সভাপতি সাকেত মুন। তাঁরা জানান, মন্ত্রী তাঁদের দাবিগুলি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন। মন্ত্রকে ডেকে পড়ুয়াদের সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন। কিন্তু পড়ুয়ারা বার বার দাবি করলেও উপাচার্য এক বারের জন্যও সেই আর্জিতে সাড়া দেননি। ঐশী পরে বলেন, ‘‘ব্যারিকেড ভেঙে সমাবর্তন স্থলে গিয়ে মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছি। আবেদন জানিয়েছি, তিনি যেন উপাচার্যকে বলেন, ছাত্র সংসদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement