JNU

‘হিন্দুত্ববাদী গুন্ডাদের বিরুদ্ধে আমরা লড়াই চালিয়ে যাব’

এইমস থেকে ছাড়া পাওয়ার পর রবিবারের হাড় হিম করা সেই পরিস্থিতির বর্ণনা দিলেন জেএনইউ-র ছাত্র সংসদ সভানেত্রী ঐশী ঘোষ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০২০ ১৭:৫২
Share:

সাংবাদিকদের মুখোমুখি ঐশী ঘোষ। ছবি: পিটিআই

রবিবার জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় (জেএনইউ)-এর ক্যাম্পাস হয়ে উঠেছিল রণক্ষেত্র। সোমবার এইমস থেকে থেকে ছাড়া পাওয়ার পর সাংবাদিক বৈঠক করে হাড় হিম করা সেই পরিস্থিতি বর্ণনা করলেন জেএনইউ-র ছাত্র সংসদ সভানেত্রী ঐশী ঘোষ। অভিযোগ করলেন, ফি বৃদ্ধির প্রতিবাদে আন্দোলনকে ভাঙতেই এই হামলা চালানো হয়েছে। তবে হিন্দুত্ববাদী গুন্ডাদের বিরুদ্ধে তাঁদের লড়াই চলবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছেন তিনি।

Advertisement

রবিবার রাত থেকে টানাপড়েন শুরু। অবশেষে, সোমবার ঐশীকে ছাড়া হয় হাসপাতাল থেকে। মাথায় ১৬টি সেলাই পড়েছে তাঁর। তবু, সেই অবস্থাতেই এ দিন সাংবাদিক বৈঠক করেন তিনি। এ দিন তিনি অভিযোগ করেন, ‘‘রবিবার আরএসএস পরিকল্পনা করেই হামলা চালিয়েছে। এমনকি আন্দোলনকারীদের সবাইকে চিহ্নিত করে হামলা চালানো হয়েছে।’’ গত ৫০ বছরের ইতিহাসে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এমন নজির নেই বলেও দাবি করেছেন ওই এসএফআই নেত্রী। তিনি বলেন, ‘‘ক্যম্পাসে এবিভিপি সমর্থকরা ছাড়াও, বেশ কয়েকজন অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিও উপস্থিত ছিল। রবিবার দুপুর আড়াইটে নাগাদ আমরা পুলিশকে জানিয়েছিলাম যে, আমরা নিরাপদ বোধ করছি না।’’ ক্যাম্পাসে হামলা চালানোর জন্য অনেক আগে থেকেই প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছিল বলে আগেই বিবৃতি দিয়েছে জেএনইউ-র ছাত্র সংসদ। এ দিন সেই কথাই ফের তুলে ধরেছেন ঐশী। পুলিশকে জানানোর পরও ক্যাম্পাসে হিংসা এড়ানো গেল না কেন? ঐশী অভিযোগ করেছেন, ‘‘পুলিশ কোনও হস্তক্ষেপই করেনি।’’ একই সঙ্গে জেএনইউ-র উপাচার্য জগদেশ কুমারের বিরুদ্ধেও তোপ দেগেছেন ঐশী। তিনি বলেন, ‘‘পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছিল। ওঁরা বলেছিলেন, সব ঠিক আছে। আমরা ওদের সরিয়ে দিয়েছি। কিন্তু তার পরেই এই ঘটনা ঘটে।’’

কেন পড়ুয়াদের উপর হামলা চালানো হল? এর উত্তরে ঐশী বলেন, ‘‘ফি বৃদ্ধির প্রতিবাদে গড়ে ওঠা আন্দোলন বার বার ভাঙার চেষ্টা করা হয়েছিল আগেও। কিন্তু, তাতে ব্যর্থ হয়েই, শেষ পর্যন্ত গুন্ডাদের দিয়ে হামলা করানো হয়।’’ গতকালের হিংসা নিয়ে জেএনইউ-র সংসদের সভানেত্রী অভিযোগের আঙুল তুলেছেন জওহরলাল নেহরু ইউনিভার্সিটি টিচার্স ফেডারেশন (জেএনইউটিএফ)-এর দিকেও। তাঁর দাবি, ‘‘ফি বৃদ্ধির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ চলাকালীন জেএনইউটিএফ আমাদের হুমকি দিয়েছিল। আমরা শুধু মাত্র আপোসে মীমাংসা চেয়েছিলাম।’’ গত কালের ঘটনার জন্য পড়ুয়াদের ঘাড়েই দোষ চাপিয়ে দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য জগদেশ কুমার। এ দিন তার পাল্টা জবাব দিতে গিয়ে ঐশী বলেন, ‘‘ক্যাম্পাসে হিংসা ছড়িয়েছে উপাচার্যের জন্যই। ওঁর ইস্তফা দেওয়া উচিত। শিক্ষা মন্ত্রকের উচিত ওঁকে সরিয়ে দেওয়া।’’

Advertisement

রবিবারের পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করার পাশাপাশি, হুঁশিয়ারির সুরেই ঐশী বলেন, ‘‘জেএনইউ আমাদের ঘর ছিল, আছে, থাকবে। এবিভিপি তা ভাঙার চেষ্টা করলেও পারবে না। আমরা এমন হিংসা সহ্য করব না।’’ হিন্দুত্ববাদী গুন্ডাদের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাবেন বলেও এ দিন দাবি করেছেন ঐশী।

জেএনইউ-তে হামলা নিয়ে সরব সিপিএম। বিজেপি ও আরএসএস-কে নিশানা করে দলের সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি বলেন, ‘‘খোদ রাজধানীর বুকে দেশের এক নম্বর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভিতরে এই কাণ্ড, প্রশাসন এবং হামলাকারীদের মধ্যে যোগসাজশ ছাড়া হতেই পারে না। বিজেপি-আরএসেএসের যে হিন্দুত্বের কর্মসূচি, তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদে জেএনইউ প্রথম সারিতে। সেই কারণেই এমন হামলা। ক্যাম্পাসের ভিতরে পড়ুয়ারা যদি নিরাপদ না হয়, তা হলে আমরা কেউ কোথাও সুরক্ষিত নই।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement