জেএনইউ-তে দীপিকা পাড়ুকোন। ফাইল চিত্র।
বচ্চন, খান, কপূর, কর্ণ জোহরেরা এখনও চুপ। এমনকি রণবীর সিংহও নীরব। রণবীরের স্ত্রী দীপিকা পাড়ুকোন গত কাল জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় (জেএনইউ)-তে গিয়ে প্রতিবাদী ছাত্রছাত্রীদের পাশে দাঁড়ানোর পর থেকে ‘ছপাক’-এর অভিনেত্রীর বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে চলেছে গেরুয়া শিবির। প্রচার চলেছে তাঁর ছবি বয়কটের। ফলে ঘরোয়া আলোচনায় উঠে আসছে প্রশ্ন— এক সময়ে নরেন্দ্র মোদীকে জড়িয়ে ধরে নিজস্বী-তোলা রণবীর কি অস্বস্তি এড়াতেই মুখে কুলুপ এঁটে রয়েছেন? নাকি নিজের ‘অরাজনৈতিক’ ভাবমূর্তি তুলে ধরতে চান তিনি?
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বলিউড তারকাদের বিখ্যাত গণ-নিজস্বীর ফ্রেমে-থাকা বরুণ ধবন অবশ্য সোশ্যাল মিডিয়ায় জেএনইউ প্রসঙ্গে লিখেছেন, ‘‘মুখ-ঢাকা লোকেদের শিক্ষাক্ষেত্রে ঢুকে হামলা চালানোর মতো ভয়ঙ্কর ঘটনা আর হতে পারে না। এই ধরনের পরিস্থিতিতে কখনওই নিরপেক্ষ এবং চুপ থাকা যায় না। আমি ঘটনার তীব্র নিন্দা করছি।’’ যদিও তিনি এবং আয়ুষ্মান খুরানা বাদে ওই নিজস্বী-দলের কার্যত আর কাউকেই জেএনইউ নিয়ে মুখ খুলতে দেখা যায়নি।
অনেকটা বরুণের সুরেই সোনাক্ষী সিন্হার টুইট, ‘‘আপনি কোন দলের সমর্থক, সেটা প্রশ্ন নয়। আপনি কি হিংসার সমর্থক? রক্তাক্ত ছাত্র-শিক্ষকদের ছবি আপনাকে নাড়া দিচ্ছে না? আমরা এই সময়ে বাইরে বসে থাকতে পারি না। দীপিকা এগিয়ে গিয়েছেন, তাঁকে কুর্নিশ।’’ সোনাক্ষীর বাবা তথা কংগ্রেস নেতা শত্রুঘ্ন সিন্হা বলেছেন, ‘‘ভাগ্য ভাল, গাঁধী এবং জয়প্রকাশ নায়ারণ আর আমাদের মধ্যে নেই। থাকলে বিজেপির ‘ট্রোল’ তাঁদের কী অবস্থা করত কে জানে!’’
দীপিকার ভূয়সী প্রশংসা করে শাবানা আজমির টুইট, ‘‘পদ্মাবতের সময়ে খুব কম লোকই সমর্থন করেছিল দীপিকাকে। যে আভিজাত্য নিয়ে জেএনইউয়ের পাশে ও দাঁড়িয়েছে, তা উদাহরণ হয়ে রইল।’’ তরুণ অভিনেতা কার্তিক আরিয়ান বলেছেন, দীপিকার প্রতি তিনি শ্রদ্ধাশীল। আশা রাখেন, বহু মানুষ তাঁর সমর্থনে এগিয়ে আসবেন। দেশের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে কার্তিক বলেছেন, ‘‘এ আমাদের দেশ নয়। কড়া ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।’’
জেএনইউয়ে দীপিকার গত সন্ধ্যার ভিডিয়ো-সহ অভিনেত্রী স্বরা ভাস্কর টুইট করেছেন, ‘‘বলিউডের এইমাত্র জেএনইউ-করণ হল।’’ পরিচালক অনুরাগ কাশ্যপ নিজের টুইটার প্রোফাইলের ছবি পাল্টে সেখানে দিয়েছেন দীপিকার গত কালের ছবি। অনুরাগের আহ্বান, সবাই যেন ছপাক-এর ‘ফার্স্ট ডে, ফার্স্ট শো’ দেখেন। প্রবীণ পরিচালক মহেশ ভট্ট বলেছেন, ‘‘নীরবতার রাজত্ব আর নয়।’’ বঙ্গতনয়া অভিনেত্রী সায়নী গুপ্ত ধন্যবাদ দিয়েছেন দীপিকাকে।
ইতিমধ্যে মুম্বইয়ের শিবাজী পার্কে, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের সমর্থনে বিজেপির এক অনুষ্ঠানে হাজির হন অভিনেত্রী জুহি চাওলা এবং অভিনেতা দিলীপ তাহিল। ‘টুকড়ে টুকড়ে গ্যাং’-এর বিরুদ্ধে স্লোগান ওঠে সেখানে। জেএনইউয়ের হামলা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে জুহি বলেন, তিনি বা আমজনতা, কেউই পরিস্থিতি পুরোপুরি বোঝেননি। তাই এ নিয়ে মন্তব্য করা ঠিক হবে না। তাহিল অবশ্য আলাদা সাক্ষাৎকারে দাবি করেন, জেএনইউয়ের ঘটনা চিত্রনাট্য অনুযায়ী ঘটেছে।