আফজল গুরুর মৃত্যুদণ্ড অন্যায্য বলে দাবি করে সরব হয়েছিল জেএনইউয়ের ছাত্রসমাজের একাংশ। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়েও সেই বিতর্ক ঝড় তুলেছিল। প্রতিবাদী ছাত্রদের দেশদ্রোহী বলে দাগিয়ে দেওয়া নিয়ে হইচই হয়েছিল বিস্তর।
আজ দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির মানের তালিকা প্রকাশ করতে গিয়ে এক বছর আগের সেই বিতর্ককে ফের খুঁচিয়ে তুললেন খোদ মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলি মান-তালিকায় জেএনইউ এবং যাদবপুরের ভাল ফল দেখে প্রকাশ আজ বলেন, ‘‘এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলি যাদের জন্য সাফল্য পেয়েছে তাদের আমরা চিনি না। তারা অন্তরালেই থাকে। যারা আফজল গুরুর সমর্থনে সরব হয়েছিল, তাদের জন্য কিন্তু এই সাফল্য আসেনি।’’
কোনও রকম উপলক্ষ ছাড়াই প্রকাশের এই স্বতঃপ্রণোদিত মন্তব্যে নতুন করে তোলপাড় রাজধানীর রাজনৈতিক শিবিরে। বিশ্ব হিন্দু পরিষদের নেতারাও প্রকাশের সুরে সুর মিলিয়েছেন। রামনবমী সংক্রান্ত একটি অনুষ্ঠানে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের নেতা সুরেন্দ্র জৈন প্রশ্ন তোলেন, ‘‘রামের বিরোধী কারা? জেএনইউ বা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা আফজল গুরুর সমর্থনে সরব হয় তারা। (কাশ্মীরে) যারা পাথর ছোড়ে, এরা তাদের সমর্থনে পাশে দাঁড়ায়।’’
ফলে ভাল ফল করা সত্ত্বেও বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না জেএনইউ বা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের। কংগ্রেস, সিপিএম-সহ অবিজেপি দলের মুখপাত্ররা প্রকাশের মন্তব্যের সমালোচনা করে বলেছেন, মন্ত্রীমশাই সঙ্ঘ পরিবারের অঙ্গুলিহেলনে ছাত্রদের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করতে চাইছেন।
বিভাজনের রাজনীতির বিরুদ্ধে সরব শিক্ষাবিদেরাও। শিক্ষাবিদ পবিত্র সরকারের মতে, ‘‘কারা পড়াশুনো করছে আর কারা রাজনীতি করছে সেই তথ্য শিক্ষামন্ত্রীকে কে দিলেন? তিনি জেএনইউ সম্বন্ধে কতটা জানেন তা আমার ধারণা নেই, কিন্তু যাদবপুরে ভাল ছেলেরা রাজনীতিও করে আবার ভাল রেজাল্টও করে।’’ জেএনইউয়ের আর এক অধ্যাপকের মতে, ‘‘এটা তো শুধু ছাত্রদের বিভাজন করা নয়। এটা হল চূড়ান্ত অসহিষ্ণুতার পরিচায়ক। জাতীয়তাবাদ নিয়ে কোনও বিতর্ক শুনতে সরকার রাজি নয়। সরকারই যদি এত অসহিষ্ণুতার পরিচয় দেয় তা হলে ছাত্ররা সহিষ্ণুতার শিক্ষা নেবে কোথা থেকে?’’