কপিল সিব্বল এবং হেমন্ত সোরেন। —ফাইল চিত্র ।
কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা তাঁর বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ করল, তাতে তিনি ভয় পান না। গ্রেফতারির আগে আইনজীবী তথা রাজ্যসভার সাংসদ কপিল সিব্বলকে তেমনটাই জানিয়েছিলেন হেমন্ত সোরেন। পাশাপাশি, ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্য চরিতার্থ’ করার জন্য কেন্দ্রের বিজেপি সরকার তাঁকে ‘টার্গেট’ করছে বলেও মন্তব্য করেন ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। হেমন্তের দাবি, ঝাড়খণ্ডে জেএমএম সরকার গঠনের পর থেকেই সেই সরকার ফেলে দেওয়ার চেষ্টা চলছে।
বুধবার জমি-জালিয়াতির মামলায় সাত ঘণ্টার বেশি সময় জিজ্ঞাসাবাদের পর হেমন্তকে গ্রেফতার করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি। আর তার এক দিন আগেই সিব্বলের ইউটিউব চ্যানেলের এক অনুষ্ঠানের জন্য তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন হেমন্ত। সাক্ষাৎকারও দেন। সেখানেই ইডি এবং কেন্দ্র নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। মঙ্গলবার নয়াদিল্লিতে সিব্বলের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন হেমন্ত। সেই সাক্ষাৎকারের ভিডিয়ো মুক্তি পেয়েছে বৃহস্পতিবার অর্থাৎ, তাঁর গ্রেফতারির এক দিন পর।
উল্লেখযোগ্য যে, ইডির হাতে গ্রেফতারির বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন। শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টে সেই মামলার শুনানি। শীর্ষ আদালতে হেমন্তের হয়ে সেই মামলা লড়বেন সিব্বল-ই।
মঙ্গলবার সিব্বলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে হেমন্ত বলেন, ‘‘সরকার গঠন করার পর থেকেই আমার দল প্রচুর বাধার মুখোমুখি হয়েছে। সরকার ফেলে দেওয়ার চেষ্টাও হয়েছে। আমাদের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি সেই সব বাধার সৃষ্টি করেছিল। কিন্তু আমরা তা মোকাবিলা করেছি।’’
ইডি-কে কটাক্ষ করে হেমন্ত আরও বলেন, ‘‘ইডি আমাকে খুব পছন্দ করে। তাই ২০২২ সাল থেকে আমাকে সমন পাঠাচ্ছে। কোনও এফআইআর নেই, নাম নেই। তবুও ইডি প্রমাণ করার চেষ্টা করছে যে আমি আইন ভেঙেছি।’’
ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, বিজেপির বিরোধিতা করা দলগুলির নেতা এবং পরিবারের সদস্যদের মানসিক ভাবে হয়রান করাই ইডির উদ্দেশ্য। তাঁর কথায়, ‘‘বিজেপি জানে যে, আমি রাজনীতির ময়দানে থাকলে তাদের সমস্যা হবে। প্রথমে হুমকি, পরে প্রলোভন, এবং আরও পরে তারা ঘরে ইডি পাঠানোর মতো কৌশল অবলম্বন করে। ঝাড়খণ্ডে রাজনৈতিক ভাবে জিততে পারেনি। তাই অন্য উপায় অবলম্বন করছে।’’
বিজেপি তাঁকে ‘টার্গেট’ করলেও তিনি তা পাত্তা দেন না বলেই সিব্বলকে জানিয়েছিলেন হেমন্ত। তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘‘আমি ভয় পাই না। মানুষের উন্নতির কারণেই আমরা রাজনীতিতে প্রবেশ করেছি। জেএমএম দল নিজেদের জোরে রাজনীতি করে। আমরা শক্তি হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছি। আমরা নিজেরাই যা গড়েছি, তা রক্ষা করব।’’
বিজেপি বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র ভবিষ্যৎ নিয়ে হেমন্তকে জিজ্ঞাসা করা হলে তাঁর মন্তব্য, ‘‘রাজনীতির ক্ষেত্রে অসম্ভব বলে কিছু নেই।’’
সিব্বলকে দেওয়া সেই সাক্ষাৎকারের এক দিন পরেই জমি-জালিয়াতির অভিযোগে ইডির হাতে গ্রেফতার হয়েছেন হেমন্ত। হেমন্তের আইনজীবী সিব্বল জানিয়েছেন, শীর্ষ আদালত আবেদন গ্রহণ করেছে। শুক্রবার প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের পর্যবেক্ষণে তিন বিচারপতির বেঞ্চে আবেদনের শুনানি হবে।