নৌকাবিহারে হেমন্ত সোরেন। সঙ্গে তাঁর দলের বিধায়করা।
শিয়রে সমন! যে কোনও মুহূর্তে তাঁর বিধায়ক পদ খারিজ করতে পারেন রাজ্যপাল। তবু বাসযাত্রা থেকে জলবিহার, ঝাড়খণ্ডে নিজের সরকার বাঁচাতে চেষ্টার কোনও ত্রুটি রাখছেন না মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন। শনিবার সকালে বাতানুকূল বাসে সওয়ার হওয়ার হওয়ার সময় ঝাড়খণ্ডের শাসক জোটের বিধায়কেরা জানতেনই না, তাঁদের কোথায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। কংগ্রেসের এক বিধায়ক অবশ্য জানিয়েছিলেন তাঁরা ওই রাজ্যেরই খুঁটী জেলার লতরাতুতে যেতে চলেছেন তাঁরা।
এরই মধ্য জল্পনা ছড়িয়ে পড়ে যে, বিধায়কদের নিয়ে হেমন্ত ছত্তীসগঢ় কিংবা তেলঙ্গানার উদ্দেশে যেতে চলেছেন। কিছু পরেই অবশ্য দেখা যায়, লাইফ জ্যাকেট পরে দলীয় বিধায়কদের নিয়ে লতরাতু বাঁধে নৌকা বিহারে বেরিয়েছেন হেমন্ত। দৃশ্যতই সেখানে হেমন্ত-সহ বাকিদের বেশ হাসিখুশি দেখাচ্ছে। রাঁচীর গুরুগম্ভীর রাজনৈতিক পরিস্থিতি থেকে মানসিক ভাবে তো বটেই, এবং ভৌগোলিক ভাবেও প্রায় ৬০ কিলোমিটার দূরত্বে রয়েছেন শাসক-জোটের বিধায়করা।
প্রসঙ্গত, নিজের নামে একটি খনির ইজারা নেওয়ার অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে জনপ্রতিনিধিত্ব আইনে ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানিয়েছিল রাজ্যের বিরোধী দল বিজেপি। ১৯৫১ সালের জনপ্রতিনিধিত্ব আইন অনুযায়ী, কোনও জনপ্রতিনিধি লাভজনক কোনও কাজে যুক্ত থাকতে পারেন না। বিজেপি এই বিষয়ে ফেব্রুয়ারি মাসেই রাজ্যপালের কাছে অভিযোগ জানিয়েছিল। রাজ্যপাল এই বিষয়ে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের মতামত জানতে চাইলে তাদের তরফে হেমন্তের বিধায়ক পদ খারিজের প্রস্তাব করা হয়। তবে এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার রাজ্যপালের হাতেই ন্যস্ত করে নির্বাচন কমিশন।
রাজ্যপাল অল্প কয়েক দিনের মধ্যেই এই বিষয়ে তাঁর সিদ্ধান্ত জানাতে পারেন বলে জানা গিয়েছে। বিজেপি অবশ্য দাবি করেছে, নৈতিকতার খাতিরেই হেমন্তের মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেওয়া উচিত। ঝাড়খণ্ডের বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে বলেন, “বিধানসভা ভেঙে দিয়ে দ্রুত নির্বাচনে যাওয়া উচিত এই সরকারের।” ৮১ আসনবিশিষ্ট ঝাড়খণ্ড বিধানসভায় শাসক জোটের প্রধান শরিক জেএমএমের বিধায়ক সংখ্যা ৩০, কংগ্রেসের ১৮, আরজেডির ১। অন্য দিকে বিরোধী দল বিজেপির আসনসংখ্যা ২৬।