‘ইন্ডিয়া’র বৈঠকে নীতীশ-সহ বিরোধী নেতারা। — ফাইল চিত্র।
আবার প্রকাশ্যে এল বিজেপি বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র ঘরোয়া বিবাদ। বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের ঘনিষ্ঠ নেতা তথা জেডিইউর সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সঞ্জয় কুমার ঝা অভিযোগ করেছেন, আগামী লোকসভা ভোটে আসন রফার বিষয়টি ক্রমাগত ঝুলিয়ে রাখা হচ্ছে। বিহারের মন্ত্রী সঞ্জয় বলেন, ‘‘আসন রফা চূড়ান্ত করে আমরা গান্ধীজয়ন্তী (২ অক্টোবর) থেকেই প্রচারে নেমে পড়তে পারতাম। ইতিমধ্যেই তিন মাস দেরি হয়ে গিয়েছে।’’ সেই ‘দেরির’ জন্য কংগ্রেসকে দায়ী করেছেন তিনি।
বিরোধী জোট ছেড়ে নীতীশ আবার বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ-তে ফিরতে পারেন বলে জল্পনা তৈরি হয়েছে জাতীয় রাজনীতিতে। এই আবহে তাঁর ঘনিষ্ঠ সঞ্জয়ের এই মন্তব্য ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলে মনে করা হচ্ছে। ডিসেম্বরের শেষ পর্বে লালন সিংহকে সরিয়ে জেডিইউ-এর সভাপতি পদে পুনর্নির্বাচিত হয়েছেন নীতীশ। চলতি সপ্তাহে বিজেপি বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র আহ্বায়ক পদে তাঁকে মনোনীত করা হতে পারে বলে বিরোধী জোট সূত্রে জানা গিয়েছিল। কিন্তু কয়েকটি সহযোগী দলের আপত্তিতে সেই প্রক্রিয়া থমকে গিয়েছে বলে ‘খবর’।
প্রসঙ্গত, নরেন্দ্র মোদী তথা বিজেপির বিরুদ্ধে বিরোধী জোট তৈরি করতে নীতীশই গত বছরের গোড়ায় প্রথমে দিল্লিতে গিয়ে কংগ্রেস, আম আদমি পার্টি, বাম-সহ বিভিন্ন দলের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। কলকাতায় এসে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও কথা বলেছিলেন। গত ২৩ জুন নীতীশের আয়োজনেই পটনায় ১৫টি বিজেপি-বিরোধী দলের শীর্ষ নেতা-নেত্রীরা ২০২৪-এর লোকসভা ভোটে বিজেপির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের দিকনির্দেশ খুঁজতে প্রথম বৈঠক করেছিলেন।
তখন থেকেই জল্পনা চলছিল, নীতীশকে বিরোধী মঞ্চের আহ্বায়কের ভূমিকায় দেখা যেতে পারে। কিন্তু পটনার পরে বেঙ্গালুরু, মুম্বই এবং দিল্লিতে ‘ইন্ডিয়া’র বৈঠক হলেও এমন কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। বরং প্রতিটি বৈঠকের পরেই নীতীশ ‘ক্ষুব্ধ’ কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এই পরিস্থিতিতে সঞ্জয়ের দাবি, ‘ইন্ডিয়া’ গঠনের পরেই নীতীশ প্রস্তাব দিয়েছিলেন, দ্রুত আসন ভাগাভাগির প্রক্রিয়া শেষ করে ২০২৩ সালের গান্ধীজয়ন্তী থেকে লোকসভা ভোটের প্রচার শুরু করার। কিন্তু তা না হওয়ার জন্য কংগ্রেসকে দুষে তিনি বলেন, ‘‘নীতীশের আসন রফার সূত্র বাস্তবায়িত না হওয়ার একমাত্র কারণ হল, কংগ্রেস নেতৃত্ব পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা ভোটে ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন।’’