বহুতল থেকে ঝাঁপ দিয়ে মহিলার ঘাড়ে পড়েছে কিশোরী, মৃত্যু হয়েছে দু’জনেরই। —প্রতীকী চিত্র।
বহুতল থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছিল কিশোরী। কিন্তু সে একা মারা যায়নি। আরও এক মহিলার মৃত্যুর কারণ হয়েছে। বহুতল থেকে ঝাঁপ দিয়ে কিশোরী পড়েছে এক পথচারীর ঘাড়ে। দু’জনেরই মৃত্যু হয়েছে হাসপাতালে। এই পরিস্থিতিতে আত্মঘাতী কিশোরীকে অভিযুক্ত করে বিচারপ্রক্রিয়া শুরু করেছে জাপান। পথচারীর মৃত্যুর জন্য দায়ী করা হয়েছে তাকে।
জাপানের সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইয়োকোহোমা স্টেশনের কাছে একটি শপিং সেন্টারে গিয়েছিল ১৭ বছরের কিশোরী। গত ৩১ অগস্ট শপিং সেন্টারের মাথায় উঠে পড়েছিল সে। আড়াই মিটার দৈর্ঘ্যের কাচের ঘেরাটোপ বেয়ে উঠে সেখান থেকে নীচে ঝাঁপ দিয়েছিল কিশোরী। আত্মহত্যার উদ্দেশ্যেই সে ঝাঁপ দিয়েছিল ১২ তলা উঁচু শপিং সেন্টার থেকে, জানিয়েছেন তদন্তকারীরা। কিন্তু অভিযোগ, রাস্তার উপরে ওই ভাবে ঝাঁপ দিলে যে পথচারীদের বিপদ হতে পারে, তা-ও জানত কিশোরী। জেনেশুনেই এই কাজ সে করেছে।
১৭ বছরের কিশোরী ১২ তলা থেকে ঝাঁপ দিয়ে পড়েছিল ৩২ বছরের এক মহিলার ঘাড়ে। বন্ধুদের সঙ্গে তিনি ওই সময়ে ওই রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন। আচমকা আঘাতে গুরুতর চোট পান। দু’জনকেই উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। চিকিৎসা চলাকালীন প্রথমে কিশোরীর মৃত্যু হয়। কয়েক ঘণ্টা পরে মৃত্যু হয় ওই মহিলারও।
কিশোরী আত্মঘাতী হয়েছে, মেনে নিচ্ছেন তদন্তকারীরা। কিন্তু কী কারণে এই আত্মহত্যা, তা এখনও স্পষ্ট নয়। মৃত কিশোরীর বিরুদ্ধে ‘অবহেলাবশত কারও মৃত্যুর কারণ হওয়া’র অভিযোগ আনা হয়েছে।
কিন্তু মৃত কিশোরীকে অভিযুক্ত করে বিচারপ্রক্রিয়া শুরুর বিরুদ্ধে জাপানেই বিতর্ক তৈরি হয়েছে। অনেকের মতে, এতে দেশের বিচারব্যবস্থার বিরুদ্ধেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করবে। যার মৃত্যু হয়েছে, তার বিচারের কতটা গুরুত্ব রয়েছে, প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। জাপানের কয়েকটি সংবাদমাধ্যম একে ‘সরকারের অপদার্থতা’ বলে বর্ণনা করেছে।
জাপানে আত্মহত্যার হার বরাবরই বেশি। বিশেষ করে নাবালক এবং নাবালিকাদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা জাপান সরকারকে দীর্ঘ দিন ধরে ভাবাচ্ছে। ২০২৩ সালে ৫১৩ জন এবং ২০২২ সালে ৫১৪ জন অপ্রাপ্তবয়স্ক কিশোর-কিশোরী আত্মঘাতী হয়েছে জাপানে।