কাশ্মীরে মৃত তিন পুলিশ

তিন ঘণ্টায় তিনটি জঙ্গি হামলা

শ্রীনগরে টিউলিপ বাগানের উদ্বোধন করে সারা বিশ্বের পর্যটককে আজ কাশ্মীর আসার আহ্বান জানালেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মুফতি মহম্মদ সইদ। একই দিনে মাত্র তিন ঘণ্টার ব্যবধানে তাঁর রাজ্যে তিন তিনটে জঙ্গি হানায় মৃত্যু হল তিন পুলিশকর্মীর। গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি দু’জন। এই ঘটনার পরে বিরোধীরা প্রশ্ন তুলছেন, যতই ঘটা করে টিউলিপ বাগানের উদ্বোধন করা হোক না কেন, সন্ত্রাস-বিধ্বস্ত এই রাজ্যে পর্যটকরা বেড়াতে আসবেন কোন ভরসায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শ্রীনগর শেষ আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০১৫ ০৩:২৭
Share:

নিহত পুলিশের দেহের সামনে নিরাপত্তারক্ষীরা। ছবি: এএফপি।

শ্রীনগরে টিউলিপ বাগানের উদ্বোধন করে সারা বিশ্বের পর্যটককে আজ কাশ্মীর আসার আহ্বান জানালেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মুফতি মহম্মদ সইদ। একই দিনে মাত্র তিন ঘণ্টার ব্যবধানে তাঁর রাজ্যে তিন তিনটে জঙ্গি হানায় মৃত্যু হল তিন পুলিশকর্মীর। গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি দু’জন। এই ঘটনার পরে বিরোধীরা প্রশ্ন তুলছেন, যতই ঘটা করে টিউলিপ বাগানের উদ্বোধন করা হোক না কেন, সন্ত্রাস-বিধ্বস্ত এই রাজ্যে পর্যটকরা বেড়াতে আসবেন কোন ভরসায়।

Advertisement

পুলিশ জানাচ্ছে, আজ প্রথম হামলাটি হয় উত্তর কাশ্মীরের বারামুলা জেলার পাট্টানে। দুপুর পৌনে বারোটায় সাব ইনস্পেক্টকে একটি যাত্রিবাহী বাসের মধ্যে গুলি করে জঙ্গিরা। চালক একটি পুলিশ চৌকির কাছে বাসটিকে নিয়ে গেলে পুলিশকর্মীরা আহত ওই এসআইকে হাসপাতালে ভর্তি করেন। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, আহত পুলিশের অবস্থা আশঙ্কাজনক। দ্বিতীয় ঘটনা দক্ষিণ কাশ্মীরের সোপিয়ানের আমশিপোরা গ্রামের। দুপুর দেড়টা নাগাদ একটি ঘটনার তদন্তে ওই গ্রামে এসেছিলেন হেড কনস্টেবল মুস্তাক আহমেদ, এবং কনস্টেবল শাবির হুসেন ও নাসির আহমেদ ওয়ানি। মাঝ রাস্তায় তাঁদের গাড়ি থেকে নামায় জঙ্গিরা। নিরস্ত্র ওই তিন পুলিশের উপর গুলি চালিয়ে পালিয়ে যায় তারা। ঘটনাস্থলে মৃত্যু হয় তিন পুলিশকর্মীর।

তৃতীয় হামলাটি দক্ষিণ কাশ্মীরেরই পুলওয়ামা জেলার ত্রালে। সেখানে জঙ্গিরা যাঁকে গুলি করেছে, তিনি প্রাক্তন জঙ্গি বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। নাম, রফিক আহমেদ বাট। পুলিশের চর সন্দেহে তাঁকে জঙ্গিরা গুলি করেছে বলে পুলিশের অনুমান। হাসপাতালে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ভর্তি রয়েছেন রফিক। এক দিনে কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে এতগুলি হামলার ঘটনায় সমালোচনার মুখে পড়েছে মুফতি সরকার। হামলাগুলির পরে রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। সোশ্যাল মিডিয়ায় বিষয়টি নিয়ে সরব হন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা। টুইটারে তিনি লিখেছেন, ‘‘কাশ্মীরের চ্যালেঞ্জকে মনে করিয়ে দিল এই হামলাগুলি। এক দিকে আমরা যখন বসন্তের রঙের উৎসব পালন করে পর্যটক টানার চেষ্টা করছি, ঠিক সেই সময়ই তিন সাহসী পুলিশ খুন হয়ে গেলেন।’’

Advertisement

তবে আজকের ঘটনাই প্রথম নয়। ২০ মার্চ জম্মুর কাঠুয়া জেলার একটি থানায় হামলা চালায় দুই ফিদায়েঁ জঙ্গি। তাতে মৃত্যু হয় তিন পুলিশকর্মী-সহ পাঁচ জনের। আহত ১১ জন। গুলির লড়াইয়ে দুই জঙ্গিও নিহত হয়েছে। ২১ তারিখ সাম্বায় জম্মু-পাঠানকোট জাতীয় সড়কের উপর একটি সেনা ছাউনিতে ফের হামলা চালায় দুই ফিদায়েঁ জঙ্গি। সে দিন হামলা বানচাল করে ওই দুই জঙ্গিকে মেরেছিল সেনা।

এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের একটি সূত্র জানাচ্ছে, সীমান্তের ও-পারে জঙ্গিদের এখন সাধারণ মানুষকে ছেড়ে নিরাপত্তারক্ষীদের উপর হামলা চালানোর নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। অতি সম্প্রতি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে গোয়েন্দা সূত্রে এমন খবরই পৌঁছেছে। মন্ত্রকের ওই সূত্র জানিয়েছে, পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই এবং পাক সেনা নাকি জঙ্গিদের এমন তালিমই দিচ্ছে, যাতে বেছে বেছে উপত্যকার সেনা আর পুলিশের উপর হামলা চালানো যায়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement