সৌরজগতের বাইরের গ্রহের আবহাওয়া সম্পর্কেও জানা যাবে ছবি থেকে। প্রতীকী ছবি।
সৌরজগতের বাইরে পৃথিবী থেকে ৩৫৫ আলোকবর্ষ দূরের একটি গ্রহের ঝকঝকে ছবি তুলল জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ। এই প্রথম এমন ছবি উঠল যেখানে শুধু গ্রহ নয়, তার আকাশে উড়ে বেড়ানো মেঘের ছবিও স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে।
যে গ্রহটির ছবি তোলা হয়েছে,তার নাম ‘এইচআইপি ৬৫৪২৬বি’। বয়সে পৃথিবীর কাছে নেহাৎই শিশু এই গ্রহ। পৃথিবীর বয়স যেখানে ৪৫০ কোটি বছর, সেখানে ‘এইচআইপি ৬৫৪২৬বি’ স্রেফ ২ কোটি বছর আগে জন্মেছে। তবে বয়সে কাঁচা হলেও বহরে সৌরজগতের সবচেয়ে বড় গ্রহ বৃহস্পতিকে টেক্কা দিতে পারে এই এক্সোপ্ল্যানেট বা সৌরজগতের বাইরের গ্রহ। আকারে বৃহস্পতির চেয়েও এটি প্রায় ১২ গুণ বড়। তবে এই অনুপাত নিয়ে পুরোপুরি নিশ্চিত নন জেমস টেলিস্কোপের পর্যবেক্ষকরা। তাঁরা জানাচ্ছেন, ‘এইচআইপি ৬৫৪২৬বি’ অনুপাতে বৃহস্পতিবার ছ’গুণও হতে পারে।
এর আগে ‘এক্সোপ্ল্যানেট’-এর ছবি তোলা যায়নি তা নয়। বলতে গেলে এই গ্রহটিরও ছবি আগে তোলা হয়েছিল। কিন্তু সেই ছবি এমন পরিচ্ছন্ন বা ঝকঝকে ছিল না। মাটিতে রাখা টেলিস্কোপের সীমিত ক্ষমতায় যে ক’টি সৌরজগতের বাইরের গ্রহ বা এক্সোপ্ল্যানেটের ছবি তোলা গিয়েছে, সেগুলি ঝাপসা। তাতে গ্রহের আকার আকৃতি বোঝা গেলেও তার বেশি কিছু বোঝা সম্ভব হত না। কিন্তু নাসার নতুন জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের শক্তিশালী লেন্সে সম্প্রতি বাইরের গ্রহের যে ছবি উঠেছে, তাতে ওই গ্রহের আবহাওয়া সম্পর্কেও সম্যক ধারণা পাওয়া যাবে। এমনকি গ্রহের আকাশে কী ধরনের মেঘ ঘোরাফেরা করছে, তার বায়ুস্তর কীরকম সবই বোঝা যাবে এই ছবি থেকে, জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
জেমস ওয়েব টেলিস্কোপের এই পর্যবেক্ষণে নজর রাখছিলেন যাঁরা তাঁদের অন্যতন অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর সাশা হিঙ্কলি জানিয়েছেন, নতুন এই ছবিটি এক্সোপ্ল্যানেট গবেষণার ক্ষেত্রে একটি নতুন দিক খুলে দিল। এক্সোপ্ল্যানেটের ছবিতে আমরা দেখতে পেয়েছি, ওই গ্রহের আকাশে লাল রঙের মেঘ ঘুরে বেড়াচ্ছে। কিন্তু এই গ্রহে কি মানুষ থাকতে পারবে? জবাবে জেমসের পর্যবেক্ষকরা জানিয়েছেন, ওর বায়ুস্তরের তাপমাত্রা ১৩০০ সেন্টিগ্রেড যার ছোঁয়া লাগলেও মানুষ ঝলসে রোস্ট হয়ে যাবে।