নিজের হাতে আঁকা জওয়ানের ছবি নিয়ে চন্দ্রপ্রকাশ গুপ্ত। ছবি সৌজন্য টুইটার।
জঙ্গিদের সঙ্গে লড়াইয়ে বা যুদ্ধে নিহত জওয়ানদের ছবি এঁকে তাঁদের পরিবারের হাতে তুলে দেওয়াই তাঁর নেশা। এ ভাবে গত ২২ বছর ধরে জওয়ানদের পরিবারের মুখে হাসি ফোটানোর চেষ্টা করে চলেছেন রাজস্থানের জয়পুরের চিত্রশিল্পী চন্দ্রপ্রকাশ গুপ্ত।
নিহত জওয়ানদের পরিবারগুলির মুখ তাঁকে খুব মর্মাহত করে। আর সেই ব্যথাই যেন ছবির মধ্যে দিয়ে প্রকাশ করার চেষ্টা করেন চন্দ্রপ্রকাশ। অর্থ দিয়ে নয়, একটু অন্য ভাবে তাই ওই পরিবারগুলির পাশে দাঁড়ানোর চিন্তাভাবনা শুরু করেন তিনি। ঠিক করেন, রং-তুলিকেই সেই পরিবারগুলির মুখের হাসি, মনের যন্ত্রণা দূর করার উপায় করে তুলবেন।
যেমন ভাবা তেমনই কাজ। নিজের শিল্পীসত্তাকে নিহত জওয়ানদের পরিবাগুলির সঙ্গে ভাগ করে নেওয়ার সফর শুরু করেন ২২ বছর আগে। একের পর এক ছবি এঁকে গিয়েছেন। আর সেই সব ছবি তুলে দিয়েছেন নিহত জওয়ানদের পরিবারগুলির হাতে।
চন্দ্রপ্রকাশের কথায়, “ওই পরিবারগুলির মনের যন্ত্রণা দূর করতেই আমার এই প্রচেষ্টা। এটাই আমার প্রেরণা। আমি এই ছবি ওই পরিবারগুলির হাতে তুলে দিয়ে তাঁদের সেই যন্ত্রণা ভাগ করে নিতে চাই।” চন্দ্রপ্রকাশ জানিয়েছেন, ২২ বছর ধরে তিনি এ কাজ করে আসছেন। এখনও পর্যন্ত ২৭৫ পরিবারের হাতে ছবি তুলে দিয়েছেন। কার্গিল যুদ্ধের সময় থেকেই তাঁর এই প্রচেষ্টা শুরু বলে জানিয়েছেন জয়পুরের এই চিত্রশিল্পী।
তাঁর কথায়, “১৯৯৯-এ যখন কার্গিল যুদ্ধ শুরু হয়, তখন সংবাদপত্রে যুদ্ধে নিহত জওয়ানদের ছবি দেখে মন ভারাক্রান্ত হয়ে যেত। যাঁরা আমাদের রক্ষার জন্য, দেশকে রক্ষার জন্য এ ভাবে নিজেদের প্রাণ দিচ্ছেন, সেই সব জওয়ান এবং তাঁদের পরিবারের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে হাতে রং-তুলি তুলে নিই।” সেই থেকে এখনও এঁকে চলেছেন এবং জওয়ানদের পরিবারের হাতে ছবি তুলে দিচ্ছেন চন্দ্রপ্রকাশ। তাঁর কথায়, “কার্গিল যুদ্ধে নিহত প্রথম সেনা অজয় আহুজার ছবি এঁকেছিলাম। কোটায় তাঁর বাড়িতে গিয়ে সেই ছবি পরিবারের হাতে তুলে দিয়েছিলাম।”