পারশনাথ পর্বতের এই মন্দির নিয়েই ঝাড়খণ্ড সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামে জৈন ধর্মাবলম্বীরা। ফাইল চিত্র।
তাঁদের মন্দির পর্যটকদের বেড়ানোর জায়গা নয়। পর্যটকেরা এলে মন্দিরের পবিত্রতা নষ্ট হবে। এমনই দাবিতে দেশ জুড়ে বিক্ষোভে নেমেছিলেন জৈন ধর্মাবলম্বীরা। তাঁদের শান্ত করতে শেষে হাল ধরল কেন্দ্র। ঝাড়খণ্ডের পারশনাথ পাহাড়ে জৈনদের মন্দির ঘিরে পর্যটন বাড়াতে উদ্যোগী হয়েছিল ঝাড়খণ্ড সরকার। কিন্তু ধর্মীয় ভাবাবেগের কথা মাথায় রেখে সেই সমস্ত উদ্যোগ বন্ধ করতে বললেন কেন্দ্রীয় বনমন্ত্রী ভুপেন্দ্র যাদব।
ঝাড়খণ্ডের পারশনাথ পাহাড়ে জৈনদের মন্দির শ্রী সাম্মেদ শিখরজিকে একটি পরিবেশ বান্ধব পর্যটন কেন্দ্র (ইকো ট্যুরিজম স্পট) হিসাবে গড়ে তুলতে উদ্যোগী হয়েছিল ঝাড়খণ্ড প্রশাসন। কিন্তু বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই দেশ জুড়ে প্রতিবাদে নামেন জৈনরা। ঝাড়খণ্ড সরকারের সিদ্ধান্ত তাঁদের মন্দিরের পবিত্রতা নষ্ট করবে বলে দাবি করে শুরু হয় আন্দোলন। যার প্রভাবে আক্রান্ত হয় গুজরাতের পালিটানা হিলের জৈন মন্দিরও। মুম্বই, আমদাবাদ, ভোপাল, নয়াদিল্লি এমনকি, সুরতের মতো শহরেও পথে নামেন বিক্ষোভরত জৈনদের মিছিল। কিন্তু তাতেও পিছু হাঁটেনি ঝাড়খণ্ড সরকার।
শেষে বৃহস্পতিবার জৈন সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে নিজেদের দাবি জানানোর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্রীয় সরকার। ঝাড়খণ্ড সরকারকে দেওয়া নির্দেশে কেন্দ্র বলে, মন্দির চত্বরে মদ্যপান বা মন্দিরের পবিত্রতা নষ্ট করার মতো কোনও কাজ যাতে ওই মন্দিরে না হয় সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে ঝাড়খণ্ড সরকারকে। পরে কেন্দ্রীয় পর্যটন মন্ত্রী জি কিষাণ রেড্ডিও একটি সাংবাদিক বৈঠক করে জানান, কোনও সম্প্রদায়ের ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত লাগতে পারে, এমন কোনও কাজ করবেন না তাঁরা।
প্রসঙ্গত, জৈনদের ওই মন্দিরটি ঝাড়খণ্ডের গিরিডি জেলায় পারশনাথ পাহাড়ের অভয়ারণ্য এবং তোপচাঁচি অভয়ারণ্যের পরিবেশ বান্ধব এলাকায় অবস্থিত। মন্দিরটি জৈনদের পবিত্রতম উপাসনাস্থলগুলির মধ্যে অন্যতম। শ্বেতাম্বর এবং দিগম্বর— উভয়ের কাছেই এই মন্দির বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। তাঁদের বিস্বাস অনুসারে, ২৪ জন তীর্থঙ্করের মধ্যে ২০ জনই মোক্ষলাভ করেছিলেন এখানে।