প্রতীকী ছবি।
পরোক্ষ স্বেচ্ছামৃত্যু (প্যাসিভ ইউথেনেশিয়া) অনুমোদনের জন্য প্রতিটি হাসপাতালে তৈরি করতে হবে নির্দিষ্ট কমিটি। এই সংক্রান্ত আবেদনে কোনও তথ্য-বিকৃতি ঘটানো হলে সর্বোচ্চ দশ বছরের জেল এবং ১ কোটি টাকা পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে। পরোক্ষ স্বেচ্ছামৃত্যু বা নিষ্কৃতি মৃত্যু নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে জমা দেওয়া কেন্দ্রের নতুন খসড়া বিলটিতে এ কথাই উল্লেখ করা হয়েছে।
ধরা যাক কোনও ব্যক্তি সজ্ঞানে লিখলেন যে, কোনও এমন রোগে যদি তিনি আক্রান্ত হন যেখানে জীবনদায়ী ব্যবস্থা ছাড়া বেঁচে থাকা অসম্ভব— তা হলে যেন সেই ব্যবস্থা বন্ধ করে নেওয়া হয়। আইনি ভাষায় একে ‘লিভিং উইল’ বলা হয়। বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, কোনও রোগী যদি এমন রোগে আক্রান্ত হন, তা হলে তাঁর পরিজনেরা হাসপাতালে ‘লিভিং উইল’ পেশ করতে পারবেন। ওই কমিটি উইল খুঁটিয়ে পর্যবেক্ষণ করবে। তার পরে সিদ্ধান্ত জানাবে। কিন্তু কমিটি যদি পর্যবেক্ষণ করে জানতে পারে ওই উইল নকল, তা হলে উইল পেশকারীর জেল এবং ২০ লক্ষ থেকে ১ কোটি টাকা পর্যন্ত জরিমানা হবে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রকের এক কর্তা জানান, এই বিল কোনও ভাবেই ‘অ্যাক্টিভ ইউথেনেশিয়া’কে উৎসাহ জোগাচ্ছে না। অর্থাৎ যে সব রোগী কখনওই সুস্থ হবেন না, ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে অতিরিক্ত ওষুধ দিয়ে তাঁদের মৃত্যু ঘটানোর কোনও সম্ভাবনা রাখা হচ্ছে না। এই নতুন খসড়া বিল শুধুমাত্র পরোক্ষ স্বেচ্ছামৃত্যুর নির্দিষ্ট নিয়ম তৈরি করছে। পরোক্ষ স্বেচ্ছামৃত্যুতে নির্দিষ্ট অনুমতির ভিত্তিতে জীবনদায়ী ব্যবস্থা প্রত্যাহারের অধিকার দেওয়া হচ্ছে। তবে সে ক্ষেত্রে রোগীকে যন্ত্রণা উপশমকারী ওষুধ দেওয়া হবে।
গত অক্টোবরে কেন্দ্রীয় সরকার সুপ্রিম কোর্টে পরোক্ষ স্বেচ্ছামৃত্যু নিয়ে খসড়া বিল জমা দেয়। সেখানে আদালত বলে, পরোক্ষ স্বেচ্ছামৃত্যুর অনুমোদন নিয়ে অনেক সময়েই বেআইনি কাজ হয়। অনেকে নকল ‘লিভিং উইল’ পেশ করতে পারেন। তাই কড়া শাস্তির ব্যবস্থা থাকা জরুরি বলে আদালতে কয়েকটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা আবেদন জানিয়েছিল। সেই আবেদনের ভিত্তিতেই বিল সংশোধনের কাজ শুরু হয়। এই বিল পাশ হলে গোটা দেশে পরোক্ষ স্বেচ্ছামৃত্যুর অনুমোদন নিয়ে স্পষ্ট নিয়ম পাওয়া যাবে। সে ক্ষেত্রে নিষ্কৃতি মৃত্যুও স্বাভাবিক মৃত্যুর গোত্রে পড়বে বলে সূত্রের খবর।