দেশের মোট মৃত্যু চার লক্ষ ছাড়িয়েছে। কেউ ভাইবোন হারিয়েছেন, কেউ মা-বাবাকে। কেউ আবার পরিবারের সবাইকে হারিয়ে দিশাহারা হয়ে পড়েছেন।
সবচেয়ে ভয়ানক পরিস্থিতি সেই সমস্ত শিশুর, যারা মা-বাবা দু’জনকেই হারিয়ে অনাথ হয়ে পড়েছে। দেশে এ রকম শিশুর সংখ্যা কম নয়।
তাদের কথা ভেবে এগিয়ে এলেন জয় শর্মা। এমন অন্তত ১০০ জনকে দত্তক নেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন তিনি।
২৬ বছরের জয়ের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা রয়েছে। দেহরাদূনের পাহাড়ি রাস্তায় বড় হয়েছেন তিনি।
ছোট থেকেই মানুষকে সাহায্য করতে এগিয়ে যাওয়ার অভ্যাস তৈরি হয়েছিল তাঁর মধ্যে। কেউ বিপদে পড়েছেন শুনলে জয় ঠিক সেখানে গিয়ে হাজির হতেন।
বড় হয়েও তার অন্যথা হয়নি। পড়াশোনা শেষ করে তাই একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা চালু করেন।
অতিমারি পরিস্থিতির শুরু থেকেই জয় দেহরাদূনের মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। যখনই প্রয়োজন পড়েছে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে অক্সিজেন পৌঁছে দিয়েছেন।
নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র, ওষুধ এ সবও বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দিয়েছেন সম্পূর্ণ নিখরচায়।
সম্প্রতি চোখের সামনে ঘটা কতগুলি ঘটনা ব্যথিত করে তুলেছিল তাঁর হৃদয়কে। দেহরাদূনেরই পর পর পাঁচ শিশুকে অনাথ হতে দেখেছেন জয়।
মা-বাবাকে হারিয়ে পথে বসার উপক্রম হয়েছিল সে সমস্ত পরিবারের সন্তানদের। আর নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখতে পারেননি তিনি। ঠিক করে ফেলেন তাঁদের ভরণপোষণের সম্পূর্ণ দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেওয়ার।
কিন্তু শুধু এই পাঁচ পরিবারই তো নয়, দেশে এমন আরও অনেক শিশুই মা-বাবাকে হারিয়ে অনাথ হয়েছে। তাদের কথাই বা না ভেবে থাকবেন কী ভাবে!
জয়ের সংস্থা তাই এমন অন্তত ১০০ শিশুকে দত্তক নেওয়ার মনস্থির করে ফেলেছে।
ইতিমধ্যে এমন ২০ জনকে দত্তক নিয়ে ফেলেছেন তাঁরা। তাঁদের খাওয়া, জামাকাপড়, পড়াশোনা, ওষুধ-সহ যাবতীয় ভার বহন করছে জয়।
জয় জানিয়েছেন, আগামী সপ্তাহের মধ্যে এই সংখ্যাটা ৫০-এ নিয়ে যাবেন তাঁরা। তার পর ধীরে ধীরে ১০০ জনকে দত্তক নেবেন।
এখনও পর্যন্ত যে ২০ জনকে দত্তক নিয়েছেন জয় তাদের বেশির ভাগেরই বয়স চার থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে। আবার ১২-১৩ বছরেরও বাচ্চাও রয়েছে।
যত দিন না তারা সাবালক হচ্ছে এ ভাবেই তাদের সমস্ত দায়িত্ব সামলাবেন জয়।