ছবি পিটিআই।
উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে জয়ী জগদীপ ধনখড় পদাধিকার বলে রাজ্যসভার চেয়ারম্যানও। আগামী দিনে সুষ্ঠু ভাবে সংসদের উচ্চকক্ষের কাজ পরিচালনা করাই তাঁর কাছে সব চেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে চলেছে বলে মনে করছে শাসক-বিরোধী উভয় শিবিরই।
উপরাষ্ট্রপতি হিসেবে বেঙ্কাইয়া নায়ড়ুর মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ১০ অগস্ট, বুধবার। পরের দিন অর্থাৎ, ১১ অগস্ট শপথ নেবেন ধনখড়। পদাধিকার বলে তিনি রাজ্যসভার চেয়ারম্যানের দায়িত্বও সামলাবেন। এ বারের সংসদের অধিবেশন ১২ অগস্ট পর্যন্ত চলার কথা। সে ক্ষেত্রে সংসদ যদি নির্দিষ্ট সময়ের আগে বন্ধ না হয়, তা হলে অন্তত দু’দিন রাজ্যসভার অধিবেশন চেয়ারম্যান হিসাবে চালাতে হবে ধনখড়কে। সমস্যা হল, মূল্যবৃদ্ধি, মূল্যস্ফীতি, ইডি তথা কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার পক্ষপাতমূলক আচরণকে কেন্দ্র করে বিরোধীদের প্রতিবাদে বাদল অধিবেশনের প্রায় গোটাটাই কার্যত ভেস্তে গিয়েছে। আগামী সপ্তাহে কংগ্রেস ফের শাসক শিবিরের বিরুদ্ধে আন্দোলনের পরিকল্পনা নিয়ে রাখায় শেষ দু’দিনেও সংসদের অধিবেশন স্বাভাবিক হওয়ার সম্ভাবনা কম।
বিজেপির এক নেতার কথায়, ‘‘কঠিন সময়ে রাজ্যসভার দায়িত্ব পাচ্ছেন ধনখড়। তিনি শপথ নেওয়ার পরে দু’দিন সংসদ চলার কথা। কিন্তু কতটা চলবে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।’’ তবে নতুন ইনিংস শুরুর আগে তাঁকে শুভেচ্ছা জানাতে ভোলেননি বিরোধীরা। কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ বলেন, ‘‘আশা করি, জগদীপ ধনখড় রাজ্যসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান ভৈরো সিংহ শেখাওয়াতের মতো বিচক্ষণতা ও নিরপেক্ষতা এবং বেঙ্কাইয়া নায়ডুর মতো বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দেবেন।’’ লোকসভায় কংগ্রেসের নেতা অধীর চৌধুরী ধনখড়কে নির্বাচন জেতার শুভেচ্ছা জানিয়ে টুইট করে লেখেন, ‘আশা করছি, ধনখড়ের মতো একজন প্রাজ্ঞ ব্যক্তির উপস্থিতিতে সংসদীয় ব্যবস্থা আরও সমৃদ্ধশালী হবে’।
আজ সকাল থেকেই ধনখড়ের বাড়িতে হরিয়ানা ও রাজস্থানের কৃষক সমাজের প্রতিনিধিরা ভিড় করেন। সূত্রের মতে, মূলত ভোটমুখী ওই দুই রাজ্যের কৃষক সমাজকে বার্তা দিতেই কৃষক পরিবারের সন্তান ধনখড়কে উপরাষ্ট্রপতি পদে বেছে নিয়েছেন বিজেপি নেতৃত্ব। কৃষক সংগঠনের প্রতিনিধিরা ছাড়াও পশ্চিমবঙ্গ, অসম, রাজস্থানের রাজ্যপালেরা ধনখড়কে অভিনন্দন জানাতে তাঁর বাসভবনে আসেন। পরে বিকালে সস্ত্রীক ধনখড় উপরাষ্ট্রপতি বেঙ্কাইয়া নায়ডুর সঙ্গে দেখা করতে উপরাষ্ট্রপতি ভবনে যান। সেখানে আধ ঘণ্টার বেশি সময়ছিলেন তিনি।
সূত্রের মতে, যে হেতু আর কয়েক দিন পরেই ধনখড় ওই বাড়ির বাসিন্দা হতে চলেছেন, তাই তাঁকে ও তাঁর স্ত্রীকে গোটা উপরাষ্ট্রপতি ভবন ও সচিবালয় ঘুরিয়ে দেখান বেঙ্কাইয়া। সচিবালয় কর্মীদের সঙ্গে ভাবী উপরাষ্ট্রপতির পরিচয় করিয়ে দেন তিনি। পরে রাতে ধনখড়ের সঙ্গে দেখা করতে আসেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা। ধনখড়ের সঙ্গে দেখা করেন বিজেপি নেতা সম্বিত পাত্র, সুনীল দেওধর।