গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আবদুল্লাকে আটক বা গ্রেফতার কোনওটাই করা হয়নি। মঙ্গলবার লোকসভায় বিরোধীদের প্রশ্নের উত্তরে এমনটাই জানালেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
আবদুল্লাকে আটক বা গ্রেফতার করা হয়েছে কি না, এই প্রশ্নে সংসদ যখন তোলপাড় হচ্ছে, তার কিছু সময় পরই প্রকাশ্যে আসতে দেখা যায় ফারুককে। তাঁকে গৃহবন্দি করে রাখার অভিযোগ তোলেন সরকারের বিরুদ্ধে। তিনি বলেন, “আমাকে বাড়ির বাইরে বেরোতে দেওয়া হয়নি। হাসপাতালেও যেতে দেওয়া হয়নি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বয়ান শুনে জানতে পারলাম আমাকে হেফাজতে নেওয়া হয়নি। তখনই বাইরে এলাম।” এর পরই হুঁশিয়ারি দেন, যখন আমার রাজ্যকে জ্বালিয়ে দেওয়া হচ্ছে, আমার লোকেদের জেলে পোরা হচ্ছে, কেন আমি ঘরে বসে থাকব?”
এ দিন ৩৭০ অনুচ্ছেদ নিয়ে যখন তর্ক-বিতর্ক চলাকালীন এনসিপি সাংসদ সুপ্রিয়া সুলে এবং ডিএমকে-র সাংসদ দয়ানিধি মারন এ প্রসঙ্গে অমিত শাহকে চেপে ধরেন। সুপ্রিয়া বলেন, “আমি ৪৬২ নম্বর সিটে বসি। ফারুক আবদুল্লা বসেন ৪৬১-তে। তিনি জম্মু-কাশ্মীরের এক জন নির্বাচিত প্রতিনিধি। আজ তিনিই নেই এখানে। তাঁকে ছাড়া এই তর্ক-বিতর্কের কোনও মানেই হয় না!” এর পরই প্রশ্ন ছুড়ে দেন, এই হাউস জানতে চায় ফারুক আবদুল্লা কোথায়?
অন্য দিকে, একই প্রশ্ন তুলে অমিতকে আক্রমণ করতে দেখা গিয়েছে দায়ানিধি মারনকে। এর পরই স্পিকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, “এই হাউসে ফারুক আবদুল্লা নেই। তাঁকে গ্রেফতার করা হয়ছে। স্পিকার হিসাবে হাউসের সদস্যদের রক্ষা করা উচিত আপনার। নিরপেক্ষ থাকা উচিত।” তিনি আরও বলেন, “কোনও সদস্যকে গ্রেফতার করা হলে স্পিকারকে এ বিষয়ে জানাতে হবে। সংসদীয় রীতিনীতি একথাই বলে। কিন্তু ফারুক আবদুল্লাকে গ্রেফতার করা হল অথচ সে সম্পর্কে কোনও তথ্যই জানানো হল না!”
আরও পড়ুন: ৩৭০ রদ নিয়ে মুখ খুললেন মমতা, ওমর-মেহবুবারা জঙ্গি নন, মুক্তির দাবি তৃণমূল নেত্রীর
আরও পড়ুন: ৩৭০-এর পক্ষে না বিপক্ষে? চ্যালেঞ্জ শাহের, ভুল ব্যাখ্যা হচ্ছে, পাল্টা তোপ কংগ্রেসের
ফারুক প্রসঙ্গে বিরোধীদের একের পর এক প্রশ্নবাণ যখন ধেয়ে আসছিল অমিতের দিকে, তখন তিনি এর উত্তরে বলেন, “ফারুক আবদুল্লাকে আটক বা গ্রেফতার কোনওটাই করা হয়নি। তিনি বাড়িতেই আছেন। এবং স্ব-ইচ্ছাতেই সেখানে রয়েছেন।” অমিতের এই উত্তরে আশ্বস্ত হননি বিরোধী সাংসদরা। উল্টে এ প্রসঙ্গে অমিতকে আরও কোণঠাসা করার চেষ্টা করতে দেখা যায় তাঁদের। তখন অমিতকে বলতে শোনা যায়, “চতুর্থ বারের জন্য একই কথা বলছি। দশ বার পর্যন্ত বলার ধৈর্য আছে আমার। আবার বলছি, ফারুক আবদুল্লাকে গ্রেফতার বা আটক করা হয়নি। তিনি যদি অসুস্থ হন, চিকিত্সকরা তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাবেন। হাউসের এ বিষয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনও প্রয়োজন নেই।”
ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ওমর আবদুল্লা, পিডিপি নেত্রী মেহবুববা মুফতিকে রবিবার রাতেই গৃহবন্দি করা হয়। শনিবার তাঁদের গ্রেফতার করা হয়। বিভিন্ন সূত্র মারফত্ খবর আসে, মুফতিকে তাঁর বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে কাছাকাছি একটি সরকারি গেস্ট হাউসে রাখা হয়েছে। জম্মু-কাশ্মীরের একের পর এক নেতাকে গৃহবন্দির ঘটনায় উত্তেজনা ছড়ায়।