Coromandel Express accident

দলা পাকানো কামরায় রেলের সংসারের ছবি

ওড়িশার বাহানাগা বাজারের রেল দুর্ঘটনায় কেউ হারিয়েছেন প্রাণ। কেউ এখনও নিখোঁজ। তবে থেকে গিয়েছে তাঁদের ব্যবহৃত প্রসাধনী সামগ্রী থেকে রাতের খাবারের টিফিন ক্যারিয়ার!

Advertisement

দেবমাল্য বাগচী

বাহানাগা (ওড়িশা) শেষ আপডেট: ০৫ জুন ২০২৩ ০৯:৩৩
Share:

ওড়িশার বাহানাগা বাজারের রেল দুর্ঘটনা। —ফাইল চিত্র।

ধ্বংসস্তূপে এখনও টাটকা চলমান জীবনের চিহ্ন।

Advertisement

ওড়িশার বাহানাগা বাজারের রেল দুর্ঘটনায় কেউ হারিয়েছেন প্রাণ। কেউ এখনও নিখোঁজ। তবে থেকে গিয়েছে তাঁদের ব্যবহৃত প্রসাধনী সামগ্রী থেকে রাতের খাবারের টিফিন ক্যারিয়ার!

রবিবার বাহানাগা বাজারের দুর্ঘটনাস্থলে চলেছে রেল লাইন এবং ‘ওভারহেড ইক্যুইপমেন্ট’ মেরামতির কাজ। আর সেই রেল লাইনের ধারেই পড়ে থাকা দুর্ঘটনাগ্রস্ত দু'টি ট্রেনের ১৭টি কামরায় ভিতরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রেলযাত্রার টুকরো স্মৃতি। অবশ্য এখন কাউকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না দুর্ঘটনাস্থলে। ওড়িশা পুলিশ, রেল সুরক্ষা বাহিনী ও সেনাবাহিনী চালাচ্ছে জোর নজরদারি। নজর এড়িয়ে অবশ্য উৎসুক স্থানীয়দের অনেকেই পৌঁছচ্ছেন ক্ষতিগ্রস্ত দলা পাকানো করমণ্ডল এক্সপ্রেসের কামরার সামনে। শিউরে উঠছেন বাইরে কামরার জানালা থেকে বাইরে ঝুলতে থাকা কাপড়, লুঙ্গি, চটি, জুতো দেখে। কামরার বাইরে ছড়িয়ে রয়েছে আম, লিচু থেকে নানা খাদ্যসামগ্রী। কিন্তু কামরার ভিতরের কী অবস্থা? করমণ্ডলের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এস-২ কামরার ভিতরে এখনও জেগে রেল-সংসারের টুকরো ছবি। কামরাটি আসলে দুরন্ত এক্সপ্রেসের এলএইচবি কোচ। এই কামরাকেই জুড়ে দেওয়া হয়েছিল আপ করমণ্ডল এক্সপ্রেসের এস-১ কামরার পিছনে। আর সেই কামরাই দুর্ঘটনার জেরে উঠে পড়েছিল এস-১ কামরার উপরে। এখন ওই কামরার অধিকাংশ মৃত। খোঁজ মিলছে না বাকিদের।

Advertisement

দরজা নয়, কাপলিংয়ের ভাঙা অংশ দিয়ে কামরার ভিতরে ঘুরে দেখা গেল চারদিকে পড়ে রয়েছে নিখোঁজ ও মৃতদের সামগ্রী। ২৭ ও ৩০ নম্বর আপার বার্থে থাকা দু'টি একই ধরনের টিফিন ক্যারিয়ার। রেল সূত্রে খোঁজ করে জানা গেল ওই ৩০নম্বর বার্থে ছিলেন বছর ছাব্বিশের শ্যামাপদ নামে এক যুবক। আর ২৭ নম্বর বার্থটি সংরক্ষিত ছিল বছর বাইশের পায়েলের নামে। এই দু'জন স্বামী-স্ত্রী কি না জানা নেই। তবে একই পিএনআর নম্বরে খড়্গপুর থেকে চেন্নাইয়ের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেছিলেন তাঁরা। আপাতত তাঁরা নিখোঁজ।

আর ওই একই পিএনআর নম্বরে ওই কুপের ২৬ নম্বর বার্থে ছিলেন সৌরভ ও ২৯ নম্বর বার্থে ছিলেন গোবিন্দ। যদিও তাঁরা টিকিট সংরক্ষণের সময় জানাননি নিজেদের পদবি। একটু এগিয়েই ৫১ নম্বর বার্থে দেখা গেল ঝুলছে একটি কুর্তি। আর তার নীচে জানলার ধারে পড়েছিল একটি প্রসাধনী সামগ্রী। জানা গেল ওই বার্থে ছিলেন বছর বত্রিশের কুমারী সাবিত্রী। এ ছাড়াও কোথাও পড়ে সারের বস্তা তো কোথাও গুটকার প্যাকেট। তার উপরেই একটি বার্থ থেকে ঝুলছিল মোবাইলের হেড ফোন। হয়তো কেউ সেই হেডফোন কানে দিয়েই গান শুনছিলেন। তবে সুর কেটেছে ভয়াবহ দুর্ঘটনা!

খড়্গপুর রেলের সিনিয়র ডিভিশনার কর্মাশিয়াল ম্যানেজার রাজেশ কুমার বলছেন, "ওই সব জিনিসপত্র আমরা রেখে দেব। পরে দাবিদার কেউ এলে দেওয়া হবে।"

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement