তৃণমূলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন। ফাইল চিত্র।
গত বছরের শেষ দিনে সাংবাদিক সম্মেলনে বিরোধী দলগুলিকে রাহুল গান্ধীর বার্তা ছিল, বিভিন্ন রাজ্যে সেখানকার শক্তিশালী আঞ্চলিক দল বিজেপিকে বিধানসভা ভোটে হারাতেই পারে। কিন্তু জাতীয় স্তরে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নীতিগত রূপরেখা দিতে পারে একমাত্র কংগ্রেস।
কিন্তু বছরের শুরুতে ভিন্ন তত্ত্ব তুলে তৃণমূল বুঝিয়ে দিল, কংগ্রেসের হাতে বিরোধিতার রাশ তুল দেওয়ার পক্ষপাতী নয় তারা। দলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন মনে করেন, ২০২৪ সালে লোকসভা ভোটে বিজেপিকে হারানো সম্ভব। কিন্তু তা সম্ভব, যে সব রাজ্যে বিধানসভা ভোটে বিজেপিকে বিরোধী শক্তি হারিয়েছে, তাদের সম্মিলিত যোগফলে।
ডেরেকের কথায়, “যখন যেখানে বিজেপি শক্তিশালী প্রতিপক্ষের মুখে পড়েছে (বিধানসভায়), তারা গুটিয়ে গিয়েছে। হিমাচল প্রদেশ, পঞ্জাব, পশ্চিমবঙ্গ, তামিলনাড়ু, কেরল, অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলঙ্গনার বিধানসভার ফলকে জাতীয় স্তরে প্রতিস্থাপিত করলে দেখা যাবে বিজেপি ২৪০টি আসন ছুঁতে হিমসিম খাচ্ছে।” পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা ভোটে নরেন্দ্র মোদী এবং অমিত শাহ প্রচারে ঝাঁপিয়ে পড়ার পরেও তৃণমূল যে ভাবে প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ আসন দখল করেছে, তা পুরো বিরোধী শক্তিকে উজ্জীবিত করেছে বলেও ডেরেকের দাবি।
ডেরেকের কথায়, “বিজেপিকে হারানোর জন্য একটি বিরোধী জোট গঠন করে তার জাতীয় নেতার মুখ তৈরির প্রয়োজন নেই। বিভিন্ন রাজ্যে সঠিক দলগুলির মধ্যে বোঝাপড়া জরুরি। মহারাষ্ট্রে উদ্ধব ঠাকরে হবেন এনসিপি-শিবিসেনা-কংগ্রেসের মুখ, তামিলনাড়ুতে ডিএমকে, অখিলেশ যাদব উত্তরপ্রদেশে বিজেপিবিরোধী জোটের মূল চালিকাশক্তি হবেন। আবার মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, কর্নাটকে রাহুল গান্ধী বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেতৃত্ব দেবেন।”
কংগ্রেস অবশ্য বলছে, আঞ্চলিক দলের পক্ষে এই লড়াই সম্ভব নয়। অনেক ক্ষেত্রে আঞ্চলিক দলগুলি নির্দিষ্ট জাতি বা গোষ্ঠীর প্রতিনিধি, রাজ্য-নির্ভর। তারা কংগ্রেসের মতো সকলের প্রতিনিধিত্ব করে না। রাহুলের যুক্তি, “বিজেপি কংগ্রেসকে নিশানা করে। কারণ, জানে আঞ্চলিক দলগুলি বিজেপিকে হারাতে পারবে না।”
সংশ্লিষ্ট শিবিরের মতে, রাজ্যের নিরিখে লোকসভার ভোট মাপলে ভুল হবে। বিভিন্ন রাজ্যে স্থানীয় শক্তির কাছে বিজেপি হারলেও লোকসভা ভোটে (যা মোদীর ভোট হিসেবে দেখায় বিজেপি) তাদের ফল ভাল।