Mohan Bhagwat

Mohan Bhagwat: বিয়ের মতো ক্ষুদ্র স্বার্থে ধর্ম বদল অনুচিত, মন্তব্য আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবতের

তথাকথিত ভাবে সঙ্ঘ-বিরোধী নন, এমন অনেকের পাল্টা যুক্তি, বিয়ের মতো ব্যক্তিগত পরিসরেও এ বার নাক গলাতে চাইছে সঙ্ঘ পরিবার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০২১ ০৭:১৪
Share:

আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত। ফাইল চিত্র।

হিন্দু যুবক-যুবতীদের ধর্মান্তরণ রোধে পরিবারকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানালেন আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত। তিনি বলেন, “বিয়ের কারণে অনেক হিন্দু যুবক-যুবতী নিজের ধর্ম ছেড়ে অন্য ধর্ম গ্রহণ করছেন, যা অনুচিত। যাঁরা এটা করছেন, তাঁরা ভুল করছেন।” বিরোধীদের মতে, বিয়ের মতো ব্যক্তিগত বিষয়েও হস্তক্ষেপ করতে চাইছে সঙ্ঘ পরিবার।

Advertisement

সঙ্ঘ পরিবারের মতে, ‘লাভ জেহাদ’ চালাতে হিন্দু মেয়েদের পরিকল্পিত ভাবে প্রেমের জালে ফাঁসিয়ে তাঁদের ধর্ম পরিবর্তনে তৎপর রয়েছে, বিশেষ করে মুসলমান সমাজের একাংশ। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে কেবল হিন্দুরাই নন, কেরলের খ্রিস্টান সমাজের একাংশও সম্প্রতি ‘লাভ জেহাদ’-এর সমালোচনায় সরব হয়েছে। তাই বিজেপি শাসিত একাধিক রাজ্য কেবল বিয়ের নামে ধর্ম পরিবর্তনের ক্ষেত্রে কড়াকড়ি করা হচ্ছে। পাশ হয়েছে ধর্মান্তরণবিরোধী আইন। কিন্তু তাতেও যে সব সময় কাজ হচ্ছে, এমনটা মনে করছে না সঙ্ঘ পরিবার।

সেই কারণে আজ উত্তরাখণ্ডের হলদওয়ানিতে সঙ্ঘ পরিবারের এক অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে সঙ্ঘকর্মীদের ছেলেমেয়েদের মধ্যে পারিবারিক মূল্যবোধ গড়ে তোলার উপরে জোর দেন ভাগবত। তিনি বলেন, “বিয়ের জন্য নিজের ধর্ম ছেড়ে হিন্দু ছেলেমেয়েরা অন্য ধর্ম গ্রহণ করছেন, যা ঠিক নয়। ছোটদের মূল্যবোধের শিক্ষা দিতে হবে। বোঝাতে হবে, কেবল বিয়ের মতো ক্ষুদ্র স্বার্থের জন্য অন্য ধর্ম গ্রহণ করা ভুল।” তাঁর মতে, নিজের ধর্ম, ঐতিহ্য পরবর্তী প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে ব্যর্থ হচ্ছেন পিতামাতারা। সেই কারণে বিয়ের মতো কারণে ধর্ম পরিবর্তন ঘটছে। বাড়িতেই দিতে হবে ধর্ম ও সংস্কারর পাঠ।

Advertisement

বিরোধীদের তো বটেই, তথাকথিত ভাবে সঙ্ঘ-বিরোধী নন, এমন অনেকের পাল্টা যুক্তি, বিয়ের মতো ব্যক্তিগত পরিসরেও এ বার নাক গলাতে চাইছে সঙ্ঘ পরিবার। আর লাভ জেহাদের কথা বলে আসলে হিন্দু-মুসলমানের মধ্যে যে বিভেদ রয়েছে, তা আরও বাড়িয়ে দিয়ে মেরুকরণের রাজনীতি করে বিজেপির রাজনৈতিক ফায়দা করে দিতে চাইছেন সঙ্ঘ নেতারা।

এ দিন নারী-পুরুষের সমানাধিকারের বাস্তবায়ন বিয়েও সরব হন সঙ্ঘ-প্রধান। কিছু দিন আগে কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধী সঙ্ঘকে পুরুষশাসিত সংগঠন হিসাবে তুলে ধরে আক্রমণ শানিয়েছিলেন। সেই অভিযোগ যে অনেকাংশ সত্যি, এ দিন কার্যত তা মেনে নিয়েছেন ভাগবত। তিনি বলেন, “সঙ্ঘের যে কোনও সাংগঠনিক সভায় পুরুষদের তুলনায় মহিলা প্রতিনিধি থাকেন একেবারে নগণ্য সংখ্যায়।” এই ছবিটা পাল্টানোর উপরে জোর দেন সঙ্ঘ-প্রধান। তিনি বলেন, “আরএসএসের লক্ষ্য হল, হিন্দু সমাজকে শক্তিশালী করা। এ কাজে পুরুষ-নারী উভয়ের সমান যোগদান প্রয়োজন।

হিন্দু সমাজকে মজুবত করতে সমাজের পিছিয়ে পড়া অংশকেও পাশে টানার আহ্বান জানান ভাগবত। বলেন, “জাতের ভিত্তিতে ভেদাভেদ করা কখনওই উচিত নয়। মানুষে-মানুষে কোনও পার্থক্য যাতে না থাকে, তা নিশ্চিত করার জন্য দলীয় কর্মীদের নির্দেশ দেন তিনি। ভাগবত বলেন, “মানুষে-মানুষে কোনও পার্থক্য রয়েছে, এই বোধ মন থেকে মুছে ফেলতে হবে। তবেই দেশ তথা হিন্দু সমাজের জাগরণ সম্ভব হবে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement