— প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
হ্যাটট্রিক করে ফের ক্ষমতায় ফিরে আসার স্বপ্ন বিজেপির। আর দশ বছর পর রাজ্যে গেরুয়া শিবিরকে ধুলিসাৎ করে নতুন সরকার গড়ার আকাঙ্ক্ষা কংগ্রেসের। এই আবহেই আজ শেষ হল হরিয়ানার বিধানসভা নির্বাচন। ভোট পড়ল প্রায় ৬৩ শতাংশ। আর ভোটারদের মধ্যে কিংবা রাজনীতিকদের কথাবার্তায় গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে উঠে এল মহিলাদের নিরাপত্তা, বেকারত্ব ও কৃষকদের সমস্যার মতো বিষয়গুলি।
হরিয়ানায় মহিলা কুস্তিগিরদের উপর যৌন নিপীড়নের ঘটনা নিয়ে উত্তাল হয়েছিল গোটা দেশ। কোণঠাসা হয়েছিল বিজেপি। ভোটের দিনও সেই বিষয়কে সামনে রেখেই সরব হয়েছেন কুস্তিগির ও কংগ্রেসের প্রার্থী বিনেশ ফোগত। চরখি দাদরিতে একটি নির্বাচনী কেন্দ্র থেকে ভোট দিয়ে বেরিয়ে জুলানা কেন্দ্রের কংগ্রেস প্রার্থী বিনেশ আজ বলেছেন, ‘‘আমি সেই দলকেই ভোট দিয়েছি, যারা মহিলাদের অধিকারের কথা ভাবে, বেকারদের চাকরির ব্যবস্থা করার কথা চিন্তা করে। আপনারা সকলেই জানেন, কোন দলের কথা বলতে চাইছি।’’ ভোটের ময়দানে তাঁর অংশগ্রহণের বিষয় নিয়ে বিনেশ আগেই জানিয়েছিলেন, কুস্তিগিরদের যৌন হেনস্থা নিয়ে প্রতিবাদ করে ফল না মেলাতেই রাজনীতিতে যোগ দিতে বাধ্যে হয়েছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘রাস্তায় নেমে আমরা লড়াই করেছি। কিন্তু কী লাভ হল? কিছুই মিলল না। শুধু আমাদের অপমান করা হল। অলিম্পিক্সে গিয়েও কি সুবিচার পেলাম? না, পাইনি। আমরা মোটেই সুবিচার পাইনি। ফলে আমার
ক্ষেত্রে রাজনীতিতে যোগ দেওয়া, ভাল বা মন্দ লাগার বিষয় নয়, এটা বাধ্যবাধকতা।’’
হরিয়ানার ঝজ্জরে কুস্তিগির স্ত্রী সঙ্গীতা ফোগতের সঙ্গেই ভোট দিতে এসেছিলেন আর এক কুস্তিগির বজরং পুনিয়া। কংগ্রেস নেতা পুনিয়া ভোট দিয়ে বেরিয়ে এসে অভিযোগ করেন, গত দশ বছরে, বিজেপি সরকারের আমলে কুস্তিগির থেকে কৃষক কিংবা সেনায় যোগ দিতে চাওয়া যুবকেরা, যখনই তাঁদের সমস্যার কথা বলতে গিয়েছেন, পুলিশের লাঠির মুখে পড়তে হয়েছে তাঁদের। তাঁর মতে, রাজ্যে বেকারত্ব চরম স্তরে পৌঁছেছে এবং এই বিষয়গুলিকে সামনে রেখেই ভোট দেওয়া উচিত হরিয়ানার ভোটারদের। ফিরিয়ে আনা
উচিত কংগ্রেসকে।
হরিয়ানার ভোট আজ শান্তিপূর্ণ ভাবেই শেষ হয়েছে। মুখ্যসচিব টিভিএসএন প্রসাদ জানিয়েছেন, কয়েকটি জায়গায় কিছু ঘটনা ঘটলেও ভোটের দিনে রাজ্যে বড়সড় সংঘর্ষের কোনও খবর সামনে আসেনি। ভোট চলাকালীন কংগ্রেস নেতা সচিন পায়লট দাবি করেছেন, কৃষকেরা রাজ্যের বিজেপি সরকারের প্রতি ক্ষুব্ধ। রাজ্য সরকার গত দশ বছর ধরে তাদের রোজগার দ্বিগুণ করার কথা বলে চললেও কোনও পদক্ষেপ করেনি। কংগ্রেস সরকার গড়তে পারলে কৃষকদের সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করবে বলে জানিয়েছেন তিনি। কংগ্রেস তাদের সাত গ্যারান্টি পালন করবে বলে জানিয়েছেন সচিন। ভোটের পর কংগ্রেস নেতা ও রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ভূপিন্দর সিংহ হুডা দাবি করেছেন, হরিয়ানায় এবার একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ফিরতে চলেছে কংগ্রেস। দল অন্ততপক্ষে ৬৫টি
আসন জিততে চলেছে বলে দাবি করেছেন তিনি।
হরিয়ানার মানুষ বিজেপিকে তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় ফিরিয়ে আনতে চলেছে বলে আজ দাবি করেছেন বেশ কয়েক জন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। ধর্মেন্দ্র প্রধান, অশ্বিনী বৈষ্ণব, কিরেন রিজিজুর মতো বিজেপি নেতারা দাবি করেছেন, রাজ্যে ভোটারদের সমর্থন গেরুয়া শিবিরের দিকেই। তবে ভোটদানের মধ্যেই মোদী সরকারের মন্ত্রী রাও ইন্দ্রজিৎ সিংহের মন্তব্য, ‘‘মানুষ যে রায় দেবেন, আমাদের তা মেনে নিতে হবে। আর সেই রায় জানার জন্য ৮
অক্টোবর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।’’