ইসরোর সাহায্যে অ্যাপে ট্রেনের ঠিক সময়ের হদিস

ট্রেনের অবস্থান জানানোর জন্য যে-সব অ্যাপ রয়েছে, তারা কন্ট্রোল অফিস অ্যাপ্লিকেশন থেকেই ‘ন্যাশনাল ট্রেন এনকোয়ারি সিস্টেম’-এর মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করে।

Advertisement

ফিরোজ ইসলাম

শেষ আপডেট: ২৪ অক্টোবর ২০২২ ০৮:৫৯
Share:

প্রতীকী ছবি।

ট্রেন গন্তব্যে পৌঁছে গিয়েছে, এমনটা অ্যাপে দেখালেও বাস্তবে দেখা যেত সেই ট্রেন তিন ঘণ্টা পিছিয়ে। বছর কয়েক আগেও চলন্ত ট্রেনের অবস্থান জানানোর অ্যাপগুলির অবস্থা ছিল এমনই। অ্যাপের ভরসায় প্রিয়জনের জন্য স্টেশনে অপেক্ষা করতে গিয়ে হামেশাই এমন পরিস্থিতির মুখে পড়তে হত দূরপাল্লার ট্রেনের যাত্রীদের আত্মীয়-পরিজনকে।

Advertisement

রেলের ইঞ্জিনে জিপিএস (গ্লোবাল পজ়িশনিং সিস্টেম) বসানোর উদ্যোগ নেওয়ার পরে গত দু’বছরে সেই পরিস্থিতির অনেকটা উন্নতি হলেও সমস্যা যে পুরোপুরি মিটে গিয়েছে এমন নয়। সেই সমস্যা পুরোপুরি মেটাতে এ বার দেশের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর তৈরি বিশেষ যন্ত্র সারা দেশের ৫০টি লোকো শেডে ছড়িয়ে থাকা ৬ হাজার ইঞ্জিনে বসানো হচ্ছে। ‘রিয়েল টাইম ট্রেন ইনফরমেশন সিস্টেম’ নামের জিপিএস নির্ভর ওই যন্ত্র ট্রেনের প্রায় নিখুঁত অবস্থান জানাতে প্রতি ৩০ সেকেন্ড অন্তর বার্তা পাঠাতে থাকে। উপগ্রহ নির্ভর ওই সঙ্কেত থেকে রেলের কন্ট্রোল অফিসে ট্রেনের অবস্থান নিজে থেকেই লেখা হয়ে যেতে থাকে। অভিযোগ, এত দিন ট্রেনের সময়ানুবর্তিতা কাগজে-কলমে ঠিক রাখতে গিয়ে প্রায়শই কন্ট্রোল অফিস অ্যাপ্লিকেশনে ভুল তথ্য দিতেন বিভিন্ন জ়োনের সংশ্লিষ্ট বিভাগের রেল কর্মীরা। এখন ওই কারচুপি অনেকটাই কমেছে বলে রেলের দাবি।

ট্রেনের অবস্থান জানানোর জন্য যে-সব অ্যাপ রয়েছে, তারা কন্ট্রোল অফিস অ্যাপ্লিকেশন থেকেই ‘ন্যাশনাল ট্রেন এনকোয়ারি সিস্টেম’-এর মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করে। অভিযোগ, এত দিন কন্ট্রোল অফিস অ্যাপ্লিকেশনে ভুল তথ্য থাকায় সেই তথ্যই হাত বদল হয়ে অ্যাপে পৌঁছত। যার ফলে, খাতায় কলমে ট্রেন গন্তব্যে পৌঁছলেও দেখা যেত বাস্তবে তা অনেক দূরে। এমনও দেখা গিয়েছে, ভোর ছ'টায় উত্তরবঙ্গের ট্রেন শিয়ালদহে পৌঁছবে ভেবে স্টেশনে গিয়ে যাত্রীর আত্মীয়দের অভিজ্ঞতা হয়েছে সম্পূর্ণ বিপরীত। দেখা গিয়েছে, সেই ট্রেন তখন হয়তো শান্তিনিকেতনের কাছে। শীতের সময় উত্তর ভারত থেকে আসা ট্রেনের ক্ষেত্রে এই সমস্যা বিশেষ প্রকট ভাবে দেখা দিত বলেও অভিযোগ উঠেছে। যে ট্রেন হাওড়া পৌঁছে গিয়েছে বলে অ্যাপ জানিয়েছে, বাস্তবে সেই ট্রেন দেখা গিয়েছে তখন হয়তো ঝাঝা স্টেশন অতিক্রম করেছে।

Advertisement

প্রাক্তন রেলমন্ত্রী পীযূষ গয়ালের সময়ে ওই ত্রুটি মেরামতের কাজ শুরু হয়। সেই সময়ে গুরুত্বপূর্ণ ট্রেনগুলির কয়েক হাজার ইঞ্জিনে যন্ত্র বসানো গেলেও সব ট্রেনে বসানো যায়নি। এ বার প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ে চলতি বছরের মধ্যে সারা দেশের ৫০টি লোকো শেডের ৬ হাজার ইঞ্জিনে ওই যন্ত্র বসানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। রেল কর্তৃপক্ষের আশা, ওই কাজ সম্পূর্ণ হলে ট্রেন ছোটার সঙ্গে অ্যাপে দেখানো সময়ের গরমিল আর চোখে পড়বে না।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement