ইসলামাবাদে ভারতীয় দূতাবাসের দুই কর্মী নিখোঁজ।
ইসলামাবাদে নিখোঁজ হওয়া ভারতীয় দূতাবাসের দুই কর্মীর নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় এখনও ধোঁয়াশা কাটেনি। ভারত সরকারের একটি সূত্রে জানানো হয়েছিল, ওই দুই দূতাবাস কর্মী পাক গুপ্তচর সংস্থা ইন্টার সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্স (আইএসআই)-এর হেফাজতে রয়েছে। আবার বেলার দিকে পাক সংবাদ মাধ্যমে খবর ছড়ায়, ‘হিট অ্যান্ড রান’-এর ঘটনায় ওই দু’জনকে গ্রেফতার করেছে ইসলামাবাদ পুলিশ। কিন্তু যাদের হেফাজতেই থাক, ইসলামবাদকে কড়া বার্তা দিয়েছে ভারত। নয়াদিল্লিতে দূতাবাসে নিযুক্ত ভারপ্রাপ্ত আধিকারিককেও (চার্জ ডি’অ্যাফেয়ার্স) তলব করে দুই কর্মীর সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।
বিদেশমন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার সকালে ইসলামাবাদে ভারতীয় দূতাবাসে নিযুক্ত সিআইএসএফ-এর দুই কর্মী নিজেদের কাজে অফিস থেকে একটি গাড়ি নিয়ে বার হন। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের কয়েক ঘণ্টা পরেও তাঁরা গন্তব্যে পৌঁছননি। সকাল ৮টার পর থেকে তাঁদের সঙ্গে আর যোগাযোগ করতে পারেননি দূতাবাসের অন্য কর্মীরা। ফলে উদ্বেগ বাড়ে। খবর পৌঁছয় নয়াদিল্লিতেও। শুরু হয় তৎপরতা। এ নিয়ে পাক প্রশাসনের সঙ্গেও যোগাযোগ করে বিদেশমন্ত্রক। কিন্তু বেলা গড়াতেই পরিস্থিতি অন্য দিকে মোড় নেয়। বিদেশ মন্ত্রক সূ্ত্রে জানানো হয়, নিখোঁজ হওয়া ভারতীয় দূতাবাসের ওই দুই কর্মী পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই-এর হেফাজতে রয়েছেন।
কিন্তু পাক সংবাদমাধ্যমগুলিতে আবার অন্য খবর দেখানো হয়। ‘জিয়ো নিউজ’-সহ একাধিক সংবাদ মাধ্যমের দাবি, একটি গাড়ি দুর্ঘটনার জেরে ভারতীয় দূতাবাসের ওই দুই কর্মীকে আটক করেছে ইসলামাবাদ পুলিশ। দুর্ঘটনার বর্ণনাও দেওয়া হয়েছে টিভি চ্যানেল ও অনলাইন সংবাদমাধ্যমগুলিতে। তাতে বলা হয়েছে, এ দিন সকাল ৮টা নাগাদ দূতাবাস রোড দিয়ে বিএমডব্লিউ গাড়ি চালিয়ে যাওয়ার সময় এক পথচারীকে চাপা দিয়ে পালানোর চেষ্টা করেন ওই দু’জন। কিন্তু স্থানীয় বাসিন্দাদের রোষের মুখে পড়েন তাঁরা। দু’জনকে ধরে রেখে পুলিশে খবর দেন তাঁরা। পুলিশ গিয়ে দু’জনকে হেফাজতে নেয়। সংবাদমাধ্যমগুলির বক্তব্য অনুযায়ী স্থানীয় বাসিন্দারা দাবি করেছেন, বেপরোয়া ভাবে গাড়ি চালাচ্ছিলেন ওই দু’জন।
আরও পড়ুন: অনেক রহস্য রেখেই যাত্রা শেষ সুশান্ত সিংহ রাজপুতের
তার আগেই অবশ্য বিদেশমন্ত্রক ডেকে পাঠিয়েছিল নয়াদিল্লিতে পাক দূতাবাসের ভারপ্রাপ্ত কূটনীতিককে। তাঁর মাধ্যমে ইসলামাবাদে বার্তা পাঠানো হয়, ওই দুই কর্মীকে দ্রুত নিরাপদে দূতাবাসে ফেরানো হোক। এর মধ্যে এই দুর্ঘটনার খবর আসার পরে আবার নয়াদিল্লিতেও পরিস্থিতি নয়া মোড় নিয়েছে। তবে এখনও আইএসআই-এর হাতে আটক হওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া হয়নি নয়াদিল্লির তরফে।
আরও পড়ুন: দিল্লির সকলের করোনা পরীক্ষা, সর্বদল বৈঠকে ঘোষণা অমিত শাহের
দিন কয়েক আগেই এ দেশে বসে গুপ্তচরবৃত্তি চালানোর অভিযোগে নয়াদিল্লির পাক দূতাবাসের দুই কর্মী এবং দুই গাড়ি চালককে বহিষ্কার করা হয়েছিল। ভারতের বিরুদ্ধে চরবৃত্তির অভিযোগ ছিল তাঁদের বিরুদ্ধে। এর কয়েক দিনের মাথায় পাকিস্তানের মাটিতে এমন ঘটনায় অন্য গন্ধ পাচ্ছেন অনেকেই। আবার কূটনৈতিক রক্ষাকবচ থাকা সত্ত্বেও ভারতীয় দূতাবাসের কর্মীদের উপর পাকিস্তান নজরদারি চালায় বলে বরাবরই অভিযোগ রয়েছে নয়াদিল্লির। পাক দূতাবাসের দুই কর্মীকে বহিষ্কারের পরে সেই নজরদারি আরও বেড়েছে বলেই খবর ছিল নয়াদিল্লিতে। তার মধ্যেই এই দুই কর্মীর নিখোঁজ হয়ে যাওয়া এবং দু’রকম তত্ত্ব উঠে আসায় উদ্বেগ বেড়েছে ভারতীয় কূটনীতিকদের।