আদিত্য ঠাকরে। ছবি: সংগৃহীত।
কেন্দ্র ও রাজ্যে বিজেপি সরকারের শরিকের ভূমিকা পালন করলেওভোটপ্রার্থী হতে দেখা যায়নি ঠাকরে পরিবারের কোনও সদস্যকে। তবে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে সে ছবিটা বদলাতে পারে। কারণ, ঠাকরে পরিবারের সদস্য আদিত্য ঠাকরেকে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসাবে তুলে ধরতে আগ্রহী শিবসেনা। তেমনটাই ইঙ্গিত দিয়েছে তারা। তবেএ নিয়ে প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য না করলেও রাজনৈতিক শিবিরে জল্পনা, ভোটে লড়তে আগ্রহী স্বয়ং আদিত্য।
তেমনটা হলে শেষমেশ ২৯ বছরের আদিত্যই হবেন ঠাকরে পরিবারের প্রথম সদস্য, যিনি ভোটে লড়বেন। পাশাপাশি, আরও একটি আশঙ্কার কথাও উঠে আসছে, মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসাবে উদ্ধব ঠাকরের ছেলের উত্থান মেনে নেবে কি বিজেপি?
বৃহস্পতিবার আদিত্য ঠাকরের ২৯তম জন্মদিন উপলক্ষ্যে মুম্বইয়ের বান্দ্রায় তাঁদের পারিবারিক বাসভবন ‘মাতোশ্রী’ জমায়েত হয়েছিলেন শিবসেনার শীর্ষ নেতা-সহ রাজ্য রাজনীতির নামজাদা ব্যক্তিত্বরা। সেখানে শিবসেনার কর্মীরা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন মনোহর যোশী, একনাথ শিন্ডের মতো দলের শীর্ষ নেতারা। নির্বাচনী ময়দানে আদিত্যর পা রাখার স্বপক্ষে অনেকেই মত দিয়েছেন।উদ্ধব ঠাকরের পর শিবসেনার মুখ হিসাবে তাঁর ছেলে আদিত্যকে তুলে ধরার হাওয়াটা বইতে শুরু করেছিল গত বছর থেকেই।এর পর গত মাস থেকে জল্পনা শুরু হয়, শিবসেনার প্রার্থী হিসাবে আসন্ন বিধানসভা ভোটেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন তিনি। যদিওসেই সম্ভাবনা নিয়ে সরাসরি মুখ খোলেননি আদিত্য। এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য না করলেনও গত কাল নিজের জন্মদিনের অনুষ্ঠানে আদিত্য বলেছেন, “আজ এ নিয়ে কোনও কথাই বলব না। এ বিষয়ে পরে কথা হবে।”
আরও পড়ুন: আন্দোলনে আরও গতি, ১৭ জুন দেশ জুড়ে হাসপাতাল ধর্মঘটের ডাক দিল আইএমএ
আদিত্য ঠাকরে সরাসরি কোনও মন্তব্য না করলেও বসে নেই শিবসেনা। ইতিমধ্যেই তাঁর জন্য মাহিম ও শিবড়ী— এই দুই বিধানসভা কেন্দ্রও বেছে ফেলেছে সেনা-নেতৃত্ব। শিবসেনা নেতাদের একাংশের দাবি, আদিত্যকেই মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে দেখতে চান রাজ্যের মানুষ। যুব সেনার কোর কমিটির সদস্য বরুণ সারদেশাই বলেন, “মহারাষ্ট্রের মানুষ, বিশেষত মরাঠিরা আদিত্যকে যুবসমাজের মুখ হিসাবে দেখেন। এবং তিনিই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর পদে বসুন, তা-ও চান তাঁরা।”
এই মুহূর্তে রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রীর পদে রয়েছেন বিজেপি-র দেবেন্দ্র ফডণবীস। তবে শিবসেনা নেতা তথা রাজ্যের পরিবেশমন্ত্রী রামদাস কদমের দাবি, “এই মুহূর্তে ক্যাবিনেটে রদবদল হলে উপমুখ্যমন্ত্রী হওয়া উচিত আদিত্যসাহেবের এবং বিধানসভা নির্বাচনের পর মুখ্যমন্ত্রী।”
আরও পড়ুন: ‘প্রেস্টিজ ইস্যু’ করবেন না, অচলাবস্থার জন্য মুখ্যমন্ত্রীকেই দায়ী করল কেন্দ্র
২০১৪-তে বিধানসভা ভোটে আলাদা ভাবে ভোটে লড়েছিল বিজেপি এবং শিবসেনা। এর পর ১২২টি আসন জিতে একক সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হিসাবে উঠে এলেও সংখ্যার বিচারে রাজ্যে ক্ষমতা দখলের জন্য শিবসেনার হাত ধরে তারা। গত সপ্তাহে একটি বৈঠকে স্থির হয়েছে, চলতি বছরের শেষে রাজ্যের ২৮৮টি বিধানসভা আসনের মধ্যে ১৩৫টি করে আসনে লড়বে দুই দল। বাকি ১৮টি আসন ছেড়ে রাখা হয়েছে জোট শরিকদের জন্য। তবে আদিত্যকে মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী করার দাবিতে শিবসেনা অনড় থাকলে তা নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে টানাপড়েন শুরু হতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে। কারণ, বিজেপি ইতিমধ্যেই স্পষ্ট করে দিয়েছে, বিধানসভা ভোটে ক্ষমতায় এলে দেবেন্দ্র ফ়ডণবীসকেই ফের মুখ্যমন্ত্রী পদে দেখতে চায় তারা।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।