(বাঁ দিকে) পূজা খেড়কর। (ডান দিকে) পূজার বাবা দিলীপ খেড়কর। ছবি: সংগৃহীত।
তাঁর কন্যা কোনও ভুল করেননি। অযথা তাঁকে নিয়ে টানাহেঁচড়া করা হচ্ছে। তাঁকে হেনস্থা করার চেষ্টা করা হচ্ছে। কন্যা পূজার হয়েই পাল্টা সরব হলেন শিক্ষনবিশ আমলার বাবা দিলীপ খেড়কর।
ইন্ডিয়া টিভি টুডে-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে দিলীপ বলেন, “আমার মেয়ে কোনও অন্যায় করেনি। এক জন মহিলা হিসাবে বসার জায়গা চাওয়া কি অপরাধ? বিষয়টি এখন বিচারাধীন এবং একটি তদন্তকমিটিও গঠন করা হয়েছে বিষয়টি দেখার জন্য। চূড়ান্ত রায়ের অপেক্ষায় রয়েছি। তবে এট স্পষ্ট বলতে পারি যে, কেউ এই ঘটনাটিকে বড় আকার দেওয়ার চেষ্টা করছেন।” তবে কে বা কারা বিষয়টিকে বড় আকার দেওয়ার চেষ্টা করছেন, দিলীপকে এই প্রশ্ন করা হলে তিনি কারও নাম নেননি।
দিলীপের আরও দাবি, তাঁর মেয়ে পূজার বিরুদ্ধে যা যা অভিযোগ তোলা হচ্ছে, তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। কন্যাকে কালিমালিপ্ত করতে এই অপচেষ্টা চলছে বলেও দাবি তাঁর। পূজা কি সংরক্ষণের ভিত্তিতে পরীক্ষায় বসেছিলেন? এই প্রশ্ন করা হলেও দিলীপের সাফ জবাব, “কমিটির কাছে আমরা সব জানাব। এখন আইনি প্রক্রিয়া চলছে। এই মুহূর্তে এই বিষয়টি নিয়ে মন্তব্য করতে চাই না। তবে এটা বলতে পারি, সব কিছুই আইন মেনেই করা হয়েছিল। কোনও অসদুপায় নেওয়া হয়নি।” পূজা শারীরিক সক্ষমতার পরীক্ষায় এড়িয়ে গিয়েছেন বলে যে অভিযোগ প্রকাশ্যে এসেছে, এ প্রসঙ্গে দিলীপের দাবি, “যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে, যে তথ্য সামনে আসছে তা অর্ধসত্য। ইউপিএসসির নিয়ম অত্যন্ত কঠোর। ২০-২৫ জনের মেডিক্যাল বোর্ড গড়া হয়। ফলে ভুয়ো নথি জমা দেওয়া অসম্ভব।”
গত কয়েক দিন ধরেই পূজার বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ নিয়ে শোরগোল চলছে। শিক্ষানবিশ আমলা হয়েও কী ভাবে একজন আমলার সমস্ত রকম সুযোগ-সুবিধা নিচ্ছিলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। প্রশাসনিক নিয়ম অনুযায়ী একজন শিক্ষানবিশ আমলা পদোন্নতির পরে ‘গেজেটেড অফিসার’ হলেই উক্ত সুবিধাগুলি পেয়ে থাকেন। কিন্তু পূজা সে সবের পরোয়া না করেই ওই দাবি জানান এবং না পেয়ে অতিরিক্ত জেলাশাসকের চেম্বার দখল করে নিজের নামের ফলক লাগিয়ে দেন। নিজের নামে লেটারহেড, ভিজ়িটিং কার্ড, পেপারওয়েট, সিলমোহরের স্ট্যাম্প এবং ইন্টারকমেরও দাবি করেন পূজা। ওই সব সুবিধা পূজাকে দেওয়ার জন্য তাঁর ‘প্রাক্তন আমলা’ বাবা পুণের জেলাশাসককে ফোন করে চাপও দেন বলে অভিযোগ। এর পরেই পূজাকে বদলি করা হয় পুণে থেকে ওয়াসিমে একটি আপাত-গুরুত্বহীন পদে। তার পরেও বিতর্ক থামেনি। তার মধ্যেই পূজার মায়ের একটি পুরনো ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এসেছে। এক কৃষককে বন্দুক উঁচিয়ে শাসানোর অভিযোগ উঠেছে। তাঁর বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। ঘটনাচক্রে, মামলা দায়ের হয়েছে পূজার বাবা দিলীপের বিরুদ্ধেও।