পি চিদম্বরম।
তিহাড়ে বসেই তির ছুড়লেন পি চিদম্বরম। লক্ষ্য সিবিআই। আইএনএক্স মিডিয়াকে বিদেশি লগ্নির ছাড়পত্রে বেনিয়মের তদন্তে প্রাক্তন অর্থমন্ত্রীকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। কিন্তু সে সময় যে সব অফিসার ছাড়পত্র দেওয়ার বোর্ডে ছিলেন, তাঁদের বিরুদ্ধে সিবিআই কেন কোনও ব্যবস্থা নেয়নি— তা নিয়ে প্রশ্ন ছিলই। আজ সেই প্রশ্নটা নিজেই খুঁচিয়ে দিলেন চিদম্বরম। তাঁর মন্তব্য, ‘‘লোকে আমাকে প্রশ্ন করেছে, যে ডজন খানেক অফিসার ওই বিষয়টি খতিয়ে দেখে সুপারিশ করেছিলেন, তাঁদের কাউকেই গ্রেফতার করা হয়নি। তা হলে আপনাকে গ্রেফতার করা হল কেন? শুধু শেষে আপনি সই করেছিলেন বলে? ’’
প্রশ্ন উঠেছে, চিদম্বরম কি পরোক্ষে নিজেও প্রশ্ন তুললেন, কেন আমলাদের গ্রেফতার না করে শুধু তাঁকেই নিশানা করা হচ্ছে? চিদম্বরমের মন্তব্য, ‘‘কোনও অফিসার কোনও ভুল কাজ করেননি। আমি চাই না কাউকে গ্রেফতার করা হোক।’’ চিদম্বরম জানান, তাঁর হয়ে তাঁর পরিবার এই টুইট করছে। কিন্তু তাঁর এই মন্তব্য দেখে সিবিআইয়ের তদন্তকারীরা মনে করছেন, চিদম্বরম কেন অফিসারদের ধরা হচ্ছে না বলে প্রশ্ন তোলার পাশাপাশি অফিসারেরা কোনও ভুল করেননি, অর্থাৎ তিনিও কোনও ভুল করেননি বলে যুক্তি সাজানোর চেষ্টা করছেন।
সিবিআইয়ের পরিকল্পনা, চলতি মাসের তৃতীয় সপ্তাহেই আইএনএক্স মামলায় চার্জশিট জমা করবে। তাতে চিদম্বরমের নামও থাকবে। পিটার ও ইন্দ্রাণী মুখোপাধ্যায়ের মিডিয়াকে ২০০৭-এ বিদেশি লগ্নির ছাড়পত্র দেওয়ায় বেনিয়মে চিদম্বরমই মূল ষড়যন্ত্রী বলে সিবিআই কর্তাদের দাবি। তাঁদের যুক্তি, পিটার-ইন্দ্রাণী নিয়ম ভেঙে বিদেশি লগ্নি আনায় চিদম্বরম ছেলের মাধ্যমে ঘুষ নিয়ে তা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন। ১৫ দিন সিবিআই হেফাজতে থাকলেও চিদম্বরম তদন্তে ‘অসহযোগিতা’ করেছেন বলেও অভিযোগ।
অফিসারদের নিয়ে চিদম্বরমের তোলা প্রশ্নে সিবিআই সূত্রের জবাব, অফিসারদের বিরুদ্ধেও তদন্ত চলছে। ছাড়পত্র দেওয়ার দায়িত্বপ্রাপ্ত ‘ফরেন ইনভেস্টমেন্ট প্রোমোশন বোর্ড’-এর একাধিক সদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। সে সময় অর্থ মন্ত্রকের অতিরিক্ত সচিব সিন্ধুশ্রী খুল্লারকে চিদম্বরমের মুখোমুখি বসিয়েও জেরা করা হয়েছে। খুল্লারও ষড়যন্ত্রে জড়িত ছিলেন বলে সিবিআইয়ের দাবি।
সূত্রের খবর, প্রাক্তন আর্থিক বিষয়ক সচিব তথা প্রাক্তন আরবিআই গভর্নর ডি সুব্বারাওকেও প্রশ্ন করা হয়েছে। তিনি বলেন, অফিসারেরা বোর্ডের সামনে বেনিয়মের বিষয়টি তুলে ধরেননি। প্রাক্তন অর্থসচিব অশোক চাওলার বিরুদ্ধে মামলা চালানোর জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়েছে সিবিআইকে। তৎকালীন যুগ্ম-সচিব অনুপ পূজারির বিরুদ্ধেও পদক্ষেপের জন্য ভিজিল্যান্স কমিশন অনুমোদন চেয়েছে।