হিংস্রতাই বড় সঙ্কট আজ, বললেন কৌশিক বসু

অন্য দুশ্চিন্তার কথাও এল তাঁর বক্তৃতায়। তিনি বলেন, ‘‘আজকের দুনিয়ায় বৈষম্য এতই বেশি যে একশো বছর পর, যদি সভ্যতা খানিক সমবণ্টনের পথে হাঁটতে পারে, সে সময়ের মানুষ আজকের ইতিহাসের কথা ভেবে আশ্চর্য হয়ে যাবে।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৩:৩৪
Share:

কৌশিক বসু।—ফাইল চিত্র।

ভারত যে পথে চলছে, তাতে দুশ্চিন্তার অনেক কারণ রয়েছে বলে জানালেন বিশ্ব ব্যাঙ্কের প্রাক্তন মুখ্য অর্থনীতিবিদ কৌশিক বসু। দুশ্চিন্তা শুধু অর্থনীতি নিয়ে নয়, বরং তার চেয়ে বেশি মানুষের মনে জমে ওঠা বিদ্বেষ আর হিংসা নিয়ে। অধ্যাপক বসু উদ্বেগ প্রকাশ করলেন নোট বাতিলের ফলাফল আর জিএসটি-র জট পাকানো প্রয়োগ নিয়েও।

Advertisement

গোলপার্কের রামকৃষ্ণ মিশন ইনস্টিটিউট অব কালচারে ‘লোকেশ্বরাননন্দ স্মারক বক্তৃতা’য় ‘অর্থনীতি ও নৈতিকতা’ বিষয়ে বক্তব্য পেশ করে অধ্যাপক বসু বলেন, ‘‘ভারতের অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক অবনতি হয়েছে। নিজের গোষ্ঠীকে বড় করে দেখাতে হলে অন্যকে ছোট করতেই হবে, তার প্রতি হিংস্র হতেই হবে, এই মানসিকতাই এই বছরের সব চেয়ে বড় চিন্তার কারণ।’’ গুজরাত নির্বাচনে এক পক্ষের প্রবল সাম্প্রদায়িক ও হিংসাধর্মী প্রচারের প্রেক্ষাপটে এই বক্তব্যের তাৎপর্য বুঝে নিতে সমস্যা নেই। তবে তিনি আশাবাদী, সাধারণ মানুষ ধীরে ধীরে এই মানসিকতার বিপদের দিকটি বুঝতে পারছে।

আরও পড়ুন: মোদীর সব মিথ্যে, সুর চড়ালেন রাহুল গাঁধী

Advertisement

অন্য দুশ্চিন্তার কথাও এল তাঁর বক্তৃতায়। তিনি বলেন, ‘‘আজকের দুনিয়ায় বৈষম্য এতই বেশি যে একশো বছর পর, যদি সভ্যতা খানিক সমবণ্টনের পথে হাঁটতে পারে, সে সময়ের মানুষ আজকের ইতিহাসের কথা ভেবে আশ্চর্য হয়ে যাবে।’’ কৌশিকবাবুর কথায়, আমরা যেমন বর্ণবিদ্বেষের ইতিহাসে লজ্জিত হই, তারাও তেমনই আজকের বৈষম্য নিয়ে লজ্জা পাবে। কী করে কমতে পারে এই বৈষম্য? অধ্যাপক বসুর মতে, বিত্তশালী মানুষের দায় আছে, সরকারের দায় আছে। শুধু পরিশ্রম করলেই উন্নতি হবে, এই কথাটা পুরোপুরি সত্যি নয়। প্রয়োজন সম্পদের পুনর্বণ্টনের, শিক্ষা বা স্বাস্থ্যের মতো জিনিসে আরও বেশি খরচের। তবে, তিনি মনে করিয়ে দিলেন, মানুষের উপকারের নামে সরকার এমনই আমলাতান্ত্রিক ব্যবস্থা তৈরি করে যে তাতে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি বাড়ে বই কমে না। এড়িয়ে চলতে হবে সেই পথ। তাঁর মতে, ভারতের উন্নতির সম্ভাবনা প্রচুর। কিন্তু মুনাফা অর্জনই সব— এই মানসিকতাটি ত্যাগ করতে হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement