টেলিভিশন, মাল্টিপ্লেক্স হয়ে ওটিটি। বিনোদনের চাবিকাঠি এখন ভার্চুয়াল দুনিয়ায়। কয়েক দশক আগে এই একচ্ছত্র জায়গায় ছিল শুধু দূরদর্শন। একষট্টি বসন্ত পেরিয়ে যাওয়া এই মাধ্যম এখনও বিগত প্রজন্মগুলির কাছে নস্টালজিয়ার আকর। চোখ রাখব দূরদর্শনকে ঘিরে থাকা কিছু জানা-অজানা তথ্যে।
১৯৫৯ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর দিল্লিতে পরীক্ষামূলক ভাবে যাত্রা শুরু করেছিল দূরদর্শন। ইউনেস্কো-র সাহায্য এবং ফিলিপস-এর ১৮০ টি টেলিভিশন সেট-এর হাত ধরে শুরু হয়েছিল সম্প্রচার।
সপ্তাহে দু’দিন এক ঘণ্টা করে দূরদর্শনে অনুষ্ঠান সম্প্রচারিত হত। দিল্লি এবং এর চারপাশে ৪০ কিমি দূরত্ব অবধি দেখা যেত দূরদর্শন।
১৯৬৫ থেকে সংবাদ সম্প্রচার শুরু করে দূরদর্শন। প্রথম সংবাদপাঠিকা ছিলেন প্রতিমা পুরী। সংবাদের বিষয়বস্তু তারা পেত অল ইন্ডিয়া রেডিয়ো থেকে। ১৯৭৬ অবধি এআইআর-এরই অংশ ছিল দূরদর্শন।
১৯৭৫-এ ভারতীয় মহাকাশ গবেষণার জনক বিক্রম সারাভাই পরামর্শ দেন ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল স্য়াটেলাইট বা ইনস্যাট প্রেরণের। যাতে দূরদর্শনের সিগন্যালকে পৌঁছে দেওয়া যায় দেশের সব প্রান্তে।
অল ইন্ডিয়া রেডিয়ো থেকে দূরদর্শন আলাদা হয়ে যায় ১৯৭৬-এ। সে বছর থেকেই বিজ্ঞাপন দেখানো হতে থাকে এই মাধ্যমে।
প্রথম ধারাবাহিক ‘লড্ডু সিং ট্যাক্সিওয়ালা’-ও ১৯৭৬-এই সম্প্রচারিত হয় দূরদর্শনে। এরপর ক্রমে ‘হমলোগ’, ‘বুনিয়াদ’-সহ বহু কালজয়ী ধারাবাহিক উপহার দিয়েছে এই মাধ্যম।
১৯৮২ -তে জাতীয় সম্প্রচারক এর পরিচয় পায় দূরদর্শন। সে বছরই সাদাকালো থেকে রঙিন হয় তৎকালীন বিনোদন-মানচিত্রের এই নতুন মাধ্যম।
বর্তমানে দূরদর্শনের অধীনে রয়েছে ষাটটিরও বেশি চ্য়ানেল। সম্প্রচারিত হয় ১৪৬ টি দেশে।
২০১৪-র নভেম্বরে গোলাপি ও বেগুনি রঙের নতুন থিমে সেজে ওঠে দূরদর্শন। নতুন পাঞ্চলাইন হয় ‘দেশ কা অপনা চ্যনেল।’
বর্তমানে পৃথিবীর সর্ববৃহৎ টেরেস্ট্রিয়াল নেটওয়ার্ক ডিডি-ওয়ান। দেশের ৭৯ শতাংশ অঞ্চল এবং জনসংখ্যার ৯১.২ শতাংশের কাছে পৌঁছে যায় এই পরিষেবা।
হালফ্যাশনের বিনোদনের মাঝে এখনও ‘চিত্রহার’, ‘সুরভি’, ‘রঙ্গোলি’, ‘কর্মচন্দ’, ‘রিপোর্টার’, ‘ব্যোমকেশ বক্সী’ বা রবিবারের সকালে ‘জাঙ্গল বুক’-এর স্মৃতি অম্লান। ইউটিউবে এই ধারাবাহিকগুলির বিভিন্ন পর্বের চাহিদাই বলে দেয় দর্শক এখনও অতীতে গা ভাসাতে ভালবাসে।