প্রতীকী ছবি।
লাদাখে বরফ গলছে। এখনও প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার সংঘর্ষবিন্দু থেকে সেনা প্রত্যাবর্তন করেনি চিন। গত কালই একটি সম্মেলনে এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর জানিয়েছেন, ভারত-চিন সম্পর্ক কাঁটার উপর দাঁড়িয়ে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, সাউথ ব্লকের সেই উদ্বেগকে দ্বিগুণ করে পরবর্তী সংঘর্ষবিন্দু হয়ে উঠতে চলেছে অরুণাচলপ্রদেশ। সে ব্যাপারে ভারতীয় সেনাকে আজই আগাম সতর্ক করেছেন উত্তর পূর্বাঞ্চল সফররত সেনাপ্রধান জোনারেল মনোজমুকুন্দ নরবণে। বলেছেন যে কোনও পরিস্থিতির জন্য তৈরি থাকতে। সীমান্তের অরুণাচলপ্রদেশ সেক্টরে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর চিনের কার্যকলাপের উপর কড়া নজর রাখার কথাও বলেছেন তিনি।
ঘটনা হল, অরুণাচলপ্রদেশের খুব কাছেই তিব্বতের প্রত্যন্ত এলাকায় হাইওয়ে নির্মাণ শেষ করেছে চিন। সাত বছর এ’টির পিছনে সময় দিয়েছে শি চিনফিং সরকার। ভারতীয় সীমান্তের নিকটবর্তী এই সড়ক নির্মাণের উদ্দেশ্য নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠতে শুরু হয়েছে। মনে করা হচ্ছে, এর ফলে সীমান্ত প্রশ্নে বড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে পারে ভারত। চিনের এই হাইওয়েটি বিশ্বের গভীরতম খাদ ইয়ারলুঙ জ্যাংবো গ্র্যান্ড ক্যানিয়নের মধ্য দিয়ে গিয়েছে। চিনের বাইবুং কাউন্টি থেকে শুরু হয়ে এ’টি ভারতীয় সীমান্তে অবস্থিত বিসিং গ্রামের কাছে এসে শেষ হচ্ছে। বিসিং অরুণাচলপ্রদেশের আপার সিয়াং জেলায় চিন সীমান্তের কাছে গেলিং সার্কেলে অবস্থিত। যা আক্ষরিক অর্থে ম্যাকমোহন লাইনকে ছুঁয়ে যায়।
অরুণাচলপ্রদেশকে চিন ভারতের অংশ হিসেবে মানে না। তাদের বরাবরের দাবি, অরুণাচল দক্ষিণ তিব্বতের অংশ। এই পরিস্থিতিতে চিন অরুণাচলপ্রদেশের গা ঘেঁষে রাস্তা নির্মাণ করায় অস্বস্তি বেড়েছে সাউথ ব্লকের। তিব্বতের বিশাল বাঁধ নির্মাণের ক্ষেত্রেও বড় ভূমিকা পালন করবে এই হাইওয়ে। ব্রহ্মপুত্র নদে তৈরি হবে বাঁধটি। তিব্বতে ব্রহ্মপুত্র ইয়ারলং সাংপো নামে পরিচিত। আরও দুটি প্রকল্পের পরিকল্পনা রয়েছে এই নদীর উপর৷ তা ছাড়া ছ’টি বাঁধের কাজ চলছে এই এলাকায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, দক্ষিণ এশিয়ার অধিকাংশ জল সরবরাহের উৎসের উপরে কড়া নিয়ন্ত্রণ রাখার চেষ্টা চালাচ্ছে চিন। সূত্রের খবর, গত কাল চিন শ্বেতপত্র প্রকাশ করেছে। সেখানে ভারত, ভুটান এবং নেপালের সীমান্তে প্রত্যন্ত গ্রামগুলির পরিকাঠামো উন্নয়নের কথা বলা হয়েছে।
অন্য দিকে পূর্ব লাদাখের প্যাংগং সো হ্রদের কাছে হট স্প্রিং এলাকায় ফের চিনা সেনা রুট মার্চ শুরু করেছে। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে ১০০ কিলোমিটারের মধ্যে তাঁরা ফের সক্রিয় হয়ে উঠেছে বলে খবর। বিষয়টি নিয়ে শীঘ্রই দু’দেশের বারোতম সামরিক পর্যায়ে বৈঠকের আবেদন ভারত জানাবে বলে সরকারি সূত্রের খবর।