ফাইল ছবি
শ্বশুরবাড়িতে যদি আত্মীয় পরিজনের হাতেও নির্যাতনের শিকার হন স্ত্রী, তা হলে তার দায় নিতে হবে স্বামীকে। সোমবার একটি মামলার শুনানির সময় এই মন্তব্য করেছে সুপ্রিম কোর্ট। একটি জাতীয় সংবাদমাধ্যমের খবর অনুসারে, এক মহিলার অভিযোগের ভিত্তিতে একটি মামলা রুজু হয়েছিল শীর্ষ আদালতে। সেখানে স্বামী ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে ওই মহিলা শারীরিক ভাবে অত্যাচার করার অভিযোগ করেছিলেন। আদালতে এই শুনানির সময় জামিনের আবেদন করে গ্রেফতার হওয়া অভিযুক্ত ব্যক্তি। আবেদন খারিজ করে দিয়ে আদালত জানায়, শ্বশুরবাড়িতে স্ত্রী যে কোনও নির্যাতনের শিকার হলেই তার দায় প্রাথমিক ভাবে নিতে হবে স্বামীকে। ঘটনার সঙ্গে যদি পরিবারের অন্য সদস্য বা আত্মীয়রা জড়িয়ে থাকেন, তা হলেও দায় বর্তাবে স্বামীর উপরেই।
লুধিয়ানা পুলিশের কাছে এক মহিলা অভিযোগ করেছিলেন, স্বামী ও শ্বশুর-শাশুড়ি বেশ কিছু দিন ধরে তাঁর উপর শারীরিক অত্যাচার করছে। পণের টাকা না পাওয়ার কারণে এই অত্যাচার চলছিল বলে অভিযোগ। সেই মামলার শুনানিতে জামিনের আবেদন করার প্রেক্ষিতেই বিচারপতি অভিযুক্তকে প্রশ্ন করেন, ‘‘আপনি কেমন পুরুষ? অভিযোগে মহিলা জানিয়েছেন, তাঁকে গলা টিপে মারতে গিয়েছিলেন আপনি। জোর করে গর্ভপাত করেছিলেন। কোন ধরনের মানুষ নিজের স্ত্রীকে ব্যাট দিয়ে মারতে পারে?’’
জুন মাসের ১২ তারিখে এই একই মামলায় পঞ্জাব-হরিয়ানা হাইকোর্টও সেই সময় জামিনের আবেদন অস্বীকার করেছিল। সেখানে অভিযোগে বলা হয়েছিল, ওই মহিলাকে শ্বশুর, শাশুড়ি ও স্বামী মিলে নিয়মিত অত্যাচার করত। একদিন বালিশ চাপা দিয়ে মারার চেষ্টাও করা হয়। তার পর ব্যাট দিয়ে বেধড়ক মারধর চলে। শেষে রাস্তায় বের করে দেওয়া ওই মহিলাকে। তার পরই পুলিশে অভিযোগ জানান ওই মহিলা। তদন্তে দেখা যায়, আক্রান্ত মহিলার শরীরে ১০টি পৃথক আঘাত রয়েছে। মাথা, ঘাড়-সহ শরীরে একাধিক স্থানে ক্ষত তৈরি হয়েছে। পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে, কোনও ভোঁতা অস্ত্র দিয়ে এই আঘাত করা হয়েছে। তদন্তের প্রেক্ষিতেই তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে প্রধান বিচারপতি এস এ বোবদের নেতৃত্বে তৈরি ডিভিশন বেঞ্চ। জানিয়েছে, ‘‘শ্বশুরবাড়িতে পরিবারের কোনও সদস্য বা আত্মীয় পরিজনের হাতে স্ত্রীর শারীরিক হেনস্থা হলে তার দায় নিতে হবে স্বামীকেই।’’