নাচের তালে: নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে আদিবাসী মহিলাদের নাচের সঙ্গে পা মেলালেন রাহুল গাঁধী। সোমবার ঝাড়খণ্ডের সিমডেগায়। ছবি: পিটিআই।
দলের চাপে অন্তর্বর্তী সভানেত্রী হয়েছিলেন সনিয়া গাঁধী। তখনই জানিয়েছিলেন, এটা পাকাপাকি বন্দোবস্ত নয়। কংগ্রেস শিবিরে কান পাতলে শোনা যাচ্ছে, চার মাস পেরোনোর আগেই সভাপতি পদে ফের রাহুল গাঁধীকে বসানোর তোড়জোড় শুরু হয়েছে।
প্রায় এক মাস ছুটি কাটিয়ে রাহুল এখন রাজ্য সফরে বেরিয়েছেন। আজই গিয়েছিলেন ঝাড়খণ্ডে বিধানসভা ভোটের প্রচারে। সপ্তাহের শেষে যাবেন কেরলে নিজের নির্বাচনী কেন্দ্র ওয়েনাডে। এর মধ্যেই কংগ্রেস শিবিরের খবর, সভাপতি থাকতে রাহুলের হাত ধরে দলে যাঁদের উত্থান হয়েছিল, তাঁদের ফের উজ্জীবিত করা হচ্ছে। এঁদের সিংহ ভাগই নবীন নেতা। কংগ্রেসের বিভিন্ন শাখায় তাঁরা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছেন। এমনই এক নেতার দাবি, ‘‘রাহুল গাঁধীকে ফের সভাপতি করার সবুজ সঙ্কেত এসেছে দশ জনপথ থেকেই। আপাতত দলের নিচু তলায় রাহুলকে ফিরিয়ে আনার চাপ তৈরি করা হবে। সেটি জোরালো হলেই প্রবীণ নেতাদের উপরে চাপ আসবে।’’
‘রাহুল ফিরছেন’— কংগ্রেসের অন্দরে এই হাওয়া ছড়াতে নবীনদের মধ্যে হুড়োহুড়ি শুরু হয়েছে। তাঁদের অনেকের আশা, রাহুল সভাপতি পদে বসে নিজের টিম তৈরি করবেন। যেখানে গুরুত্ব পাবেন নবীনেরাই। গোড়ায় প্রবীণেরা থাকলেও ধাপে ধাপে তাঁদের সরানো হবে। রাজ্যসভায় যে প্রবীণেরা বছরের পর বছর ধরে রয়েছেন, তাঁদের মেয়াদ শেষ হলে আর প্রার্থী করা হবে না। বরং রাহুল রাজ্যসভায় পাঠাতে পারেন জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া, কে সি বেণুগোপালের মতো নেতাদের। সামনের সপ্তাহেই দিল্লির রামলীলা ময়দানে বিরোধীদের শক্তি দেখাতে চাইছেন সনিয়া গাঁধী। সেখানে আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে অন্য বিরোধী দলকে। এমনকি সদ্য বিজেপির সঙ্গত্যাগ করা শিবসেনার প্রধান উদ্ধব ঠাকরেকেও আসতে অনুরোধ করা হচ্ছে। রাহুলের ফিরে আসার প্রেক্ষাপট হিসেবেও সেই মঞ্চকে ব্যবহার করা হতে পারে।
আরও পড়ুন: পরাজয়ের ‘ব্যাখ্যা’ দিয়ে বিব্রত বিজেপি
টুইটে ইতিমধ্যেই ‘#আমার নেতা রাহুল’ প্রচার শুরু করেছেন কংগ্রেস কর্মীরা। তাতে কোনও বড় নেতা শামিল হননি। কিন্তু যুব, মহিলা, সেবাদল, সোশ্যাল মিডিয়ার মতো কংগ্রেসের বিভিন্ন শাখার নবীন নেতারা প্রচার করছেন। এআইসিসির গবেষণা বিভাগের এক নেত্রী বলেন, আবেগ, করুণার সঙ্গে নির্ভীক হয়ে রাজনীতির পাঠও শিখিয়েছেন রাহুল। এমনকি পশ্চিমবঙ্গ কংগ্রেসও এই প্রচার শুরু করেছে। যদিও তাদের দাবি, এআইসিসি থেকে তেমন নির্দেশ নেই। তারা নিজেরা এটা করছে।
তলে তলে দলে এই তৎপরতা কানে যাচ্ছে প্রবীণদেরও। সংসদ থেকে বেরোনোর সময়ে বিষয়টি কানে তোলামাত্র এক শব্দের মন্তব্য তাঁদের এক জনের — ‘‘পুত্রমোহ!’’