National News

কোটার হাসপাতালে মন্ত্রীদের জন্য লাল কার্পেট, তোপের মুখে গহলৌত

কোটায় শিশুমৃত্যু ঘিরে গহলৌতের মন্তব্যের পরই তা নিয়ে সরব হন মায়াবতী।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

কোটা (রাজস্থান) শেষ আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০২০ ১৭:১৮
Share:

রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌতের ইস্তফা দাবি করেছেন উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মায়াবতী। ছবি: সংগৃহীত।

শিশুমৃত্যুকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক তরজার মাঝেই ফের বিতর্কে রাজস্থানের হাসপাতাল। কোটায় হাসপাতাল পরিদর্শনরত মন্ত্রীদের স্বাগত জানাতে লাল কার্পেট বিছিয়ে বিরোধীদের সমালোচনার মুখে পড়েছেন এর কর্তৃপক্ষ তথা রাজস্থানের অশোক গহলৌত সরকার। কোটার হাসপাতালে ইতিমধ্যেই শিশুমৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০৪। গোটা ঘটনায় হাসপাতালের গাফিলতির অভিযোগ উঠলেও তা অস্বীকার করেছে রাজ্য সরকার। এই আবহে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের এহেন কাজে সরব হয়েছে বিরোধীরা। রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌতের ইস্তফা দাবি করেছেন উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মায়াবতী। রাজ্যের কংগ্রেস সরকারের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছে বিজেপিও।

Advertisement

গত ডিসেম্বর থেকে কোটার জে কে লোন হাসপাতালে একের পর এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে কংগ্রেস নেতৃত্বকে আগেই আক্রমণ করেছিলেন বহুজন সমাজ পার্টি (বিএসপি) নেত্রী মায়াবতী। গোটা ঘটনা ঘিরে রাজস্থান সরকার রাজনৈতিক বার্তা দিতে চাইছে বলে অভিযোগ করে একে দায়িত্বজ্ঞানহীন ও অসংবেদনশীল আখ্যা দিয়েছেন তিনি। শুক্রবার টুইটারে তিনি লিখেছেন, ‘এটা অত্যন্ত লজ্জাজনক।’ তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের গাফিলতির ফলেই যে শিশুমৃত্যু হয়েছে তা মানতে নারাজ গহলৌত সরকার। শিশুমৃত্যুর সংখ্যা নিয়েও মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য, ‘‘বিজেপি শাসিত সময়ে রাজস্থানে হাজার শিশুর মৃত্যু হয়েছিল। কিন্তু কংগ্রেস আমলে সেই সংখ্যাটা মাত্র ১০০। এখানে কোনও রাজনীতি নেই। সংবাদমাধ্যমে একে খামোখা ইস্যু করা হচ্ছে।’’

গহলৌতের এই মন্তব্যের পরই তা নিয়ে সরব হন মায়াবতী। বিষয়টি নিয়ে রাজনীতির করার অভিযোগ করেছেন তিনি। এ নিয়ে ইতিমধ্যে রাজস্থান প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বের কাছে জবাব তলব করেছেন পার্টির অন্তর্বর্তীকালীন সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী। অন্য দিকে, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা হর্ষ বর্ধনের দাবি, গত কয়েক বছরের তুলনায় রাজস্থানে শিশুমৃত্যুর হার বেশি। এ নিয়ে ওই রাজ্যের কংগ্রেস সরকারকে সাহায্যের প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন তিনি। হর্ষ বর্ধন বলেন, ‘‘বিষয়টিতে দৃষ্টিপাত করার জন্য আমি অশোক গহলৌতকে চিঠি লিখেছি।’’ শিশুরোগ বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গঠিত একটি কমিটি কোটার ওই হাসপাতাল পরিদর্শন করবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। এ বিষয়ে আসু কর্তব্য জানানো ছাড়াও গোটা ঘটনার বিশ্লেষণ করবেন কমিটির চিকিৎসকেরা। তবে এ নিয়ে যাতে রাজনীতি না করা হয়, সেই বার্তাই দিতে চেয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী গহলৌত। তাঁর দাবি, ‘‘কোটার এই হাসপাতালে শিশুমৃত্যুর হার কমছে। এটি আরও কমানোর চেষ্টা করছি। সদ্যোজাত ও মায়েদের স্বাস্থ্যরক্ষাই আমাদের লক্ষ্য।’’ কেন্দ্রের তরফে সাহায্যের পদক্ষেপকেও স্বাগত জানিয়েছেন তিনি। গহলৌতের টুইট, ‘পরামর্শ ও সহযোগিতার মাধ্যমে রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবার উন্নতি ঘটাতে আমরা বদ্ধপরিকর।’

Advertisement

আরও পড়ুন: ট্যাবলো বাতিল কেরল, মহারাষ্ট্র, বিহারেরও, তোপের মুখে মোদী সরকার

আরও পড়ুন: ‘ভারতীয় মহিলারা কেন স্বামীদের থেকে দু’কদম পিছিয়ে থাকেন?’ কী বললেন স্মৃতি ইরানি

গত সপ্তাহে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের গঠিত কমিটিও শিশুমৃত্যুর পিছনে গাফিলতি খুঁজে পায়নি। সরকারি ওই কমিটির দাবি, ওই শিশুদের সঠিক চিকিৎসাই করা হয়েছিল। তবে কোটার এই হাসপাতালের বেহাল ছবিটা তুলে ধরেছে ন্যাশনাল কমিশন ফর প্রোটেকশন অব চাইল্ড রাইটস (এনসিপিসিআর)। এনসিপিসিআর -এর দাবি, কোটার এই হাসপাতাল পরিদর্শনে গিয়ে সেখানকার শোচনীয় অবস্থা দেখেছেন তাঁরা। হাসপাতালের জানলা-দরজা ভাঙা থেকে কর্মীসংখ্যা অপ্রতুল— এই সব সমস্যা তো রয়েইছে। এ ছাড়া, হাসপাতাল চত্বরে শুকর চড়ে বেড়াতেও দেখেছেন তাঁরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement