এস্কিমোদের বরফের ঘরের কথা অল্পবিস্তর সকলেরই জানা। সে ঘর নাকি আপাদমস্তক শুধু বরফ দিয়েই তৈরি। আর তার ভিতরে ঢুকে হাড়কাঁপুনি ঠান্ডা থেকে নিজেদের রক্ষা করে এস্কিমোরা।
এস্কিমোদের এই বরফের ঘরকে বলা হয় ইগলু। ইগলুতে তাঁদের জীবনযাত্রা নিয়ে ছোট থেকেই আলাদা কৌতূহল জন্মায়। এ বার কিছুটা হলেও সেই কৌতূহল মেটানোর সুযোগ পেতে চলেছেন আপনিও।
এর জন্য শুধু ব্যাগপত্র গুছিয়ে যেতে হবে গুলমার্গে। কারণ, গুলমার্গে তৈরি হয়েছে ভারতের প্রথম ইগলু রেস্তরাঁ। যা এশিয়ার সব ইগলু রেস্তরাঁর মধ্যে আকারে সবচেয়ে বড়।
যা পুরোটাই বরফ দিয়েই তৈরি। রেস্তরাঁয় যা যা সুবিধা পেয়ে থাকেন, এই ইগলু রেস্তোরাঁতেও সে সমস্ত সুবিধাই পাবেন আপনিও।
রেস্তরাঁয় প্রবেশের পর মেনু কার্ড থেকে খাবার বাছাই এবং তার পর কর্মচারীরা সেই খাবার আপনার টেবিলে পরিবেশন-পর্ব, সবই ব্যবস্থা রয়েছে এই ইগলুতে।
বিদেশে অনেক আগে থেকেই ইগলু কাফের প্রচলন রয়েছে। বিশেষ করে সুইৎজারল্যান্ডে বহুল প্রচলিত ইগলু কাফে। তবে ভারতে এই প্রথম।
ভিতরে চেয়ার, টেবিল সমস্তই শুধু বরফ দিয়ে তৈরি। হাওয়া চলাচলের জন্য দেওয়ালে বরফ কেটে ছোট ছোট জানলা বানানো হয়েছে।
ইগলুর ভিতরে মোট ৪টি টেবিল রয়েছে । যাতে ১৬ জনের বসার ব্যবস্থা করা সম্ভব।
ভিতর থেকে কাফেটি চওড়ায় ২২ ফুট এবং এর উচ্চতা সাড়ে ১২ ফুট এবং বাইরে থেকে এর উচ্চতা ১৫ ফুট এবং চওড়া ২৬ ফুট।
বরফের চেয়ারে যাতে বসতে অসুবিধা না হয়, তাই প্রতিটা চেয়ারের উপর ভেড়ার মোটা চামড়া বিছিয়ে দেওয়া। তার উপরই পর্যটকেরা বসবেন।
এর ভিতরে বসে সুস্বাদু গরম খাবার উপভোগ করতে পারবেন পর্যটকেরা। তবে অনেকেরই মনে প্রশ্ন আসতে পারে এর ভিতরে আরও ঠান্ডায় কাবু হয়ে যাবেন না তো পর্যটকেরা?
উত্তরে বলতে হবে অবশ্যই না। কারণ, বরফ তাপ প্রতিরোধের কাজ করে। তাই বরং বাইরের অত্যধিক ঠান্ডা হাওয়া ভিতরে ঢুকতে পারে না। বাইরের থেকে ভিতরটা অনেক বেশি মনোরম।
গুলমার্গের কোলহাই রিসর্টের অধীন এই রেস্তোরাঁটি। তবে এই রিসর্টের অতিথিদের সঙ্গে বাইরের লোকজনও রেস্তরাঁ উপভোগ করতে পারেন।
কোলহাই রিসর্টের মালিক ওয়াসিম শাহের মাথাতেই প্রথম এমন একটি রেস্তরাঁর কথা আসে। ওয়াসিম জানিয়েছেন, তিনি বিদেশে বহু জায়গাতেই ইগলু রেস্তোরাঁ দেখেছেন। তাঁর খুব পছন্দ হয়।
অতিমারির কারণে ঢুঁকতে থাকা দেশের পর্যটন শিল্পকে বাঁচানোর জন্য এমন অভিনব পরিকল্পনার প্রয়োজন বলে মনে করেন ইগলু রেস্তরাঁর মালিক ওয়াসিম।
এর এক অধিকর্তা হামিদ মাসুদি জানিয়েছেন, লিমকা বুক অব রেকর্ডের জন্য এই রেস্তরাঁর নাম নথিভুক্ত করা হয়েছে।
তবে এই রেস্তোরাঁয় বসে কী কী পদ উপভোগ করতে পারবেন, আর তার জন্য কত টাকা পকেট থেকে খসাতে হবে, সে সমস্ত এখনও খোলসা করেননি কর্তৃপক্ষ। জানতে গেলে একবার ঘুরে আসতেই হবে গুলমার্গ থেকে।