খুব তাড়াতাড়ি প্রতিরক্ষায় আরও এক ধাপ এগোতে চলেছে ভারত। সব কিছু ঠিক থাকলে চলতি মাসেই উদ্বোধন হতে চলেছে ভারতের প্রথম ভাসমান ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা কেন্দ্র ‘আইএনএস অন্বেষ’-এর।
সমুদ্রের উপর ভাসমান অবস্থাতেই ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়তে পারবে এই জাহাজ। বিশ্বের হাতে গোনা কয়েকটি মাত্র দেশেই এই সুবিধা রয়েছে। এ বার সেই তালিকায় নাম জুড়তে চলেছে ভারতেরও।
ফ্লোটিং টেস্ট রেঞ্জ বা ভাসমান ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা কেন্দ্র প্রকৃতপক্ষে একটি জাহাজ। ভারতের ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (ডিআরডিও) এই জাহাজের নকশা বানিয়েছে।
বিশালাকার এই জাহাজ দৈর্ঘে ২০০ মিটার, চওড়ায় ৬০ মিটার এবং এর আয়তন প্রায় দশ হাজার টন।
এই জাহাজে একটি ‘ইলেক্ট্রো-অপটিক্যাল মিসাইল ট্র্যাকিং সিস্টেম’ রয়েছে। রয়েছে একটি র্যডার। সঙ্গে একটি লঞ্চ প্যাড, একটি মিশন নিয়ন্ত্রক কেন্দ্র এবং ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার পর তার গতিবিধি নজরে রাখার ব্যবস্থাও রয়েছে এতে।
দেড় হাজার কিলোমিটার পর্যন্ত রেঞ্জের ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়তে সক্ষম এই জাহাজটি। অর্থাৎ গুজরাত উপকূল থেকে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়লে তা পাকিস্তান বা আফগানিস্তানের কোনও লক্ষ্যে আঘাত হানতে পারে।
সমুদ্রের মাঝে ভাসমান অবস্থায় থাকায় এখান থেকে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়লে মানুষের বসতির কোনও রকম ক্ষতির সম্ভাবনা একেবারেই নেই।
এই জাহাজের লঞ্চ নিয়ন্ত্রক কেন্দ্র খুব সহজেই ক্ষেপণাস্ত্রের গতিপথ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। ফলে সমুদ্রের মাঝে কোনও রকম বাধার সম্মুখীনও হতে হয় না। যাত্রীবাহী বা মালবাহী জাহাজের গতিপথ এড়িয়েও ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করার ক্ষমতা রয়েছে এর।
২০১৫ সাল থেকে এই ভাসমান ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা কেন্দ্র তৈরির কাজ শুরু হয়। ২০২০ সাল নাগাদই পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ করার কথা ছিল। কিন্তু কিছু কারণে এতদিন তা সম্ভব হয়নি। তবে খুব তাড়াতাড়ি সেটি হতে চলেছে।
ভারত ছাড়া আমেরিকা এবং চিনের কাছেও এমন ভাসমান ক্ষেপণাস্ত্র কেন্দ্র রয়েছে। ভারতের এই ভাসমান ক্ষেপণাস্ত্র কেন্দ্রটি আপাতত ওড়িশা উপকূলের কাছে রাখা থাকবে।