গ্রাফিক। শৌভিক দেবনাথ।
দিনকয়েক ধরে আত্মীয়-পরিজন-বন্ধুরা একের মেসেজ করে চলেছেন হানা খানকে। সঙ্গে ট্যাগ করা নেটমাধ্যমের একটি পোস্ট। সেখানে পেশায় পাইলট ওই মহিলার ছবি আপলোড করে তাঁকে বিক্রির জন্য নিলামে তোলা হয়েছে!
হানা একা নন। অভিযোগ, গত কয়েক সপ্তাহে একটি ওয়েবসাইট এবং অ্যাপে অন্তত ৮৩ জন ভারতীয় মহিলার ছবি দিয়ে তাঁদের ‘বিক্রির আয়োজন’ করা করেছে। ঘটনাচক্রে, ওই মহিলাদের সকলেই এক নির্দিষ্ট ধর্মীয় সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর। সেই তালিকায় ছাত্রী, সমাজকর্মী এমনকি, সাংবাদিকেরও নাম এবং ছবি রয়েছে। ব্যবহার করা হয়েছে টুইটারে দেওয়া তাঁদের ব্যক্তিগত তথ্য।
ওই বিশেষ ধর্মীয় জনগোষ্ঠীর মহিলাদের সম্পর্কে ব্যবহৃত একটি অবমাননাকর শব্দ রয়েছে সংশ্লিষ্ট ওয়েবসাইট ও অ্যাপটির শিরোনামে। হানার কথায়, ‘‘ধর্মীয় পরিচয়ের জন্য অবমাননার উদ্দেশ্যেই এমন কাজ করা হয়েছে বলে আমার মনে হয়।’’ তিনি জানিয়েছেন, ওই ওয়েবসাইটে প্রায় ২০ দিন ধরে তাঁর ছবি ও টুইটারে দেওয়া তথ্য ছিল। তাঁর কথায়, ‘‘আমি প্রথমে বিষয়টি জানতেও পারিনি। আত্মীয় ও বন্ধুদের কাছ থেকে খবর পেয়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলাম।’’ এরপর পুলিশে অভিযোগ জানান হানা। টুইট করে বিষয়টি সামনেও আনেন।
ওই অ্যাপটির ‘ডিল অফ দ্য ডে’-র শিকার হয়েছেন দিল্লির সাংবাদিক ফতিমা খানও। ২০২০-র দিল্লি হিংসার অনেক খবর প্রকাশ্যে এনেছিলেন ফতিমা। পুলিশকে তিনি বলেছেন, তাঁর ধারণা সে কারণেই তাঁকে নিশানা করা হয়েছে। ঘটনাচক্রে, নেটমাধ্যমে সক্রিয় ওই সংখ্যালঘু মহিলারা বিভিন্ন সময় নানা সামাজিক ও ধর্মীয় অপরাধের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। তাই নিছক ‘যৌন বিনোদন’ নয়, পুরো ঘটনার পিছনে ‘অন্য উদ্দেশ্য’ রয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে।
‘গিটহাব’ নামে একটি ওয়েব প্ল্যাটফর্ম থেকে ওই অ্যাপটি কার্যকর করা হয়েছিল। অভিযোগ পাওয়ার পরেই তারা দ্রুত সেটি বন্ধ করে দেয়। কংগ্রেসের সোশ্যাল মিডিয়া কো-অর্ডিনেটর হাসিবা আমিনের দাবি, একটি জাল আইডি-র সাহায্যে ওই অ্যাপটি বানানো হয়েছিল। এর আগে গত ১৩ মে একই ভাবে নেটমাধ্যমে বেছে বেছে সংখ্যালঘু মহিলাদের ছবি দিয়ে নিলামের ডাক দেওয়া হয়েছিল। ঘটনাচক্রে, ওই দিনটিতে ছিল সংখ্যালঘুদের পবিত্র উৎসব।